কংক্রিটের জঙ্গলে আমরা কিভাবে প্রকৃতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছি।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
আজকের আধুনিক শহর যেন এক বিশাল কংক্রিটের জঙ্গল। চারপাশে উঁচু উঁচু ভবন, ব্যস্ত রাস্তাঘাট, শব্দ, ধোঁয়া আর যান্ত্রিকতার মাঝে প্রকৃতি যেন হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময় সকালে পাখির ডাক শুনে ঘুম ভাঙত, জানালা খুললেই দেখা যেত গাছপালা, ফুলের ঘ্রাণ, আর টাটকা বাতাস। এখন সেই জায়গায় এসেছে গাড়ির হর্ন, ধোঁয়া আর তীব্র গরমে ক্লান্ত এক শহুরে সকাল।
মানুষ তার স্বপ্ন পূরণের জন্য প্রতিদিন ছুটছে, চাকরি, ব্যবসা, বাড়ি, গাড়ি, আর আরামদায়ক জীবনের পেছনে। কিন্তু সেই উন্নতির পেছনে আমরা হারাচ্ছি এমন কিছু, যা টাকা দিয়ে ফেরানো যায় না, আর সেটা হলো প্রকৃতি। শহর যত বড় হচ্ছে, সবুজ তত ছোট হচ্ছে। মাঠ ভরে যাচ্ছে বিল্ডিংয়ে, পার্কগুলো ছোট হয়ে যাচ্ছে, আর গাছ কাটা যেন উন্নয়নের অংশে পরিণত হয়েছে। অথচ প্রকৃতি ছাড়া মানুষের টিকে থাকা অসম্ভব।
প্রকৃতি শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, এটি জীবনের মূল ভিত্তি। গাছপালা আমাদের অক্সিজেন দেয়, ছায়া দেয়, বৃষ্টির ভারসাম্য রক্ষা করে, মাটি উর্বর রাখে। কিন্তু শহরে এখন একটুকরো সবুজ দেখাও কঠিন। যেদিকে তাকাও শুধু সিমেন্ট, ইট আর লোহা। ছোট ছোট বাচ্চারা আজ গাছ, পাখি বা প্রজাপতির নাম বইয়ের পাতায় পড়ে, বাস্তবে দেখে না।
শহুরে জীবনের ব্যস্ততা আমাদের মানসিক শান্তিও কেড়ে নিচ্ছে। আগে বিকেলে ছাদে দাঁড়িয়ে হাওয়া খাওয়া, বৃষ্টির দিনে জানালা খুলে চায়ের কাপ হাতে বসে থাকা, এসব আনন্দ এখন স্মৃতি হয়ে গেছে। দিনশেষে ক্লান্ত মানুষ ফেরে এক চার দেয়ালের ফ্ল্যাটে, যেখানে বাতাসও আসে মেশিনের ভেতর দিয়ে। প্রকৃতির সান্নিধ্য না পাওয়ায় আমাদের মস্তিষ্কে স্ট্রেস, উদ্বেগ ও হতাশা বেড়ে যাচ্ছে।
একটা সময় ছিল, যখন বাড়ির পাশে ছোট বাগান থাকতো। আম, লিচু, জামরুলের গাছ, টবে রাখা টগর বা জুঁই ফুল এসব ছিল ঘরের অংশ। আজ সেই জায়গাগুলো পার্কিং স্পেসে রূপ নিয়েছে। শহরের বাচ্চারা এখন জানে না মাটির গন্ধ কাকে বলে, বা শীতল বাতাসে ভিজে যাওয়ার অনুভূতি কেমন।
তবু আশার জায়গা আছে। কিছু মানুষ এখনো চেষ্টা করছে শহরের মধ্যে ছোট করে প্রকৃতিকে ফিরিয়ে আনতে। অনেকেই ছাদে গাছ লাগাচ্ছে, বারান্দায় ছোট সবজি চাষ করছে, অফিসে রাখছে ইনডোর প্ল্যান্ট। এসব ক্ষুদ্র উদ্যোগই একদিন বড় পরিবর্তন আনতে পারে। যদি আমরা সবাই একটু সচেতন হই, তাহলে এই কংক্রিটের শহরেও প্রকৃতির স্পর্শ ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
আমাদের মনে রাখতে হবে প্রকৃতি আমাদের শত্রু নয়, বন্ধু। আমরা প্রকৃতিকে বাঁচালে প্রকৃতিও আমাদের বাঁচাবে। শহরের উন্নয়ন তখনই অর্থবহ হবে, যখন তার ভেতরে মানুষের সাথে গাছ, মাটি, পাখি, ফুল সবাই একসাথে বাঁচতে পারবে।
শহুরে জীবনে প্রকৃতিকে হারানো মানে, নিজের ভেতরের শান্তিকে হারানো। তাই আমাদের উচিত, নিজেদের জায়গা থেকে যতটুকু পারি সবুজ ফিরিয়ে আনা। হয়তো সেটা ছোট একটা গাছ, কিন্তু সেই গাছই একদিন এই শহরের হারানো প্রাণ ফিরিয়ে আনবে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server