ডাকসু নির্বাচনের নতুন ইতিহাস-শিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের মহাজয়।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
গতকাল ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ DUCSU নির্বাচনে ছাত্ররাজনীতিতে বিরল একটি দৃশ্যের সম্মুখীন হ’লাম। ষড়যন্ত্র, অনাকাঙ্ক্ষিত বাধা কিংবা বিতর্কময় ঘটনা ছাড়াই ভোটগ্রহন পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর ভাবে সম্পন্ন হলো। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আটটি কেন্দ্র ও ৮১০ বুথে ভোটগ্রহণ হয়েছে। যেখানে প্রায় ৮০%-র মতো ভাসমান ভোটার উপস্থিত ছিলেন ।
ভোট দিতে দলবিহীন মেয়েরাও বাড়তি উদ্দীপনায় অংশগ্রহণ করেন, টিএসসি, ডাকসু কেন্দ্রে দীর্ঘ সারি, Hall-প্রাঙ্গণে উৎসবমুখর পরিবেশ। উল্লেখযোগ্যভাবে বিভিন্ন কেন্দ্র যেমন TSC-তে ৫৮%, Geology Center-এ ৬৫% ও University Lab-এ ৬৫.২৫% পর্যন্ত ভোট পড়ছিলো মধ্যাহ্নভোটে । নির্বাচন কমিশন এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে ‘বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় সহ বড় বড় কলেজ অনুসরণ করবে আশা করি’ বলে অভিহিত করেছে ।
অবশেষে আজ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকালে ঢাবি সিনেট ভবনে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তার সূচনায়:
ভিপি তথা সহ-সভাপতি আবু সাদিক কায়েম শিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট- ১৪,০৪২ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবিদুল ইসলাম খান ছাত্রদল সমর্থিত ৫,৭০৮ ভোট। পার্থক্য লক্ষণীয় অনেক ভারী ।
জিএস তথা সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ শিবির–সমর্থিত- ১০,৭৯৪ ভোট, তানভীর বারী হামিম ছাত্রদল সমর্থিত ৫,২৮৩ ভোট ।
এজিএস তথা সহ-সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান শিবির–সমর্থিত ১১,৭৭২ ভোট প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তানভীর আল হাদী মায়েদ- ৫,৬৪০ ভোট ।
শিবির সমর্থিত ঐক্যজোট শুধু এই তিন পদে জয়লাভ করেনি, পাশাপাশি ১২টি সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ৯টিতে জয় নিশ্চিত করেছে । এক কথায়, মধ্যঝঞ্ঝা ছাড়াই সংসদের শীর্ষ পদের দখল গড়া এক বিশাল রাজনৈতিক পালাবদলে পরিণত হল।
গত ১৫ বছর আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনাহীন ও ক্ষীণ অবস্থায় থাকা ইসলামী ছাত্র শিবির জুলাই ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে কর্মসূচি চালু করে। সেই আন্দোলনের প্রতিবাদকামী আলো ও গতি শেষ পর্যন্ত এই কেন্দ্রীয় ভোটে জোরালো ধারায় রূপ নেয়, এক বিপ্লবী সাফল্য রচনায় ।
এই নির্বাচনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব আজ দেশের রাজনৈতিক ও শিক্ষাজগত নিয়েও ব্যাপক আলোচনা ছড়িয়ে দিয়েছে। অনেকেই একে “শিবিরের শেপট-চেঞ্জ”, থেকে “শিবিরের ধাক্কা” আখ্যায়িত করছেন ।
যদিও শিক্ষা ও প্রশাসন পক্ষ উৎসাহ প্রকাশ করেছেন, কিছু প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আজ নির্বাচনের ফলাফলে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। ছাত্রদল-সমর্থিত আবিদুল ইসলাম খান একটি ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য করেছেন, পরিকল্পিত কারচুপির এই ফলাফল অনুমান করেছিলাম এবং আমি এই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করলাম । স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা এই নির্বাচনকে সম্পূর্ণ নির্লজ্জ কারচুপির নির্বাচন আখ্যায়িত করে ‘বয়কট’ ঘোষণা করেছেন ।
তবে নির্বাচন কমিশন শান্তিপূর্ণ ভোট প্রক্রিয়াকে “বাংলাদেশে একটি মডেল” বলে অভিহিত করেছে ।
আজকের DUCSU নির্বাচন ছিল শুধু একটি ভোটাভুটিই নয়, এটি ছিল শক্তির উত্তরণ, রাজনৈতিক পুনরুত্থান, শিক্ষার্থী রাজনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য পালাবদলের প্রতীক। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দেওয়া, বিপুল জয়, অংশগ্রহণের সেই উৎসাহ — সব মিলিয়ে এটি ২০২৫ সালেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম আলোচিত ঘটনা হয়ে রইল।
ভবিষ্যৎ হবে কেমন? নতুন নেতৃত্ব যে ধারা গড়বে, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি এই মডেল অনুসরণ করবে এসব নিয়েও আলোচনা ইতোমধ্যে তুঙ্গে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server