শ্রীলংকার সাথে দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে ৮৩ রানের বিশাল জয় টাইগারদের।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন।
ক্রিকেট হলো অনিশ্চয়তার খেলা, যেখানে প্রতিটি ম্যাচেই থাকে নতুন নাটকীয়তা, উত্তেজনা আর প্রত্যাশার পারদ। প্রথম টি-২০ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে লজ্জাজনক হারের পর বাংলাদেশ দলের ওপর ছিল পর্বতসম চাপ। ভক্তদের মনে ছিল হতাশা, আর সমালোচকদের চোখ ছিল পরবর্তী ম্যাচের দিকে। কিন্তু গতকাল ১৩ই জুলাই, ২০২৫ রাঙ্গিরি ডাম্বুলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে টাইগাররা এক অসাধারণ প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে সিরিজ ১-১ সমতায় নিয়ে এসেছে। এই জয় শুধু একটি ম্যাচ জয় নয়, এটি ছিল আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার এবং প্রতিপক্ষকে যোগ্য জবাব দেওয়ার এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচের ব্যর্থতা ভুলে গিয়ে এদিন যেন এক নতুন উদ্যম নিয়ে মাঠে নেমেছিল টাইগাররা। যদিও শুরুটা তেমন ভালো হয়নি। ওপেনার তানজিদ হাসান মাত্র ৮ বলে ৫ রান করে ফিরে যান এবং শূন্য রানে আউট হন পারভেজ হোসেন ইমন। তবে, এরপরই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন লিটন দাস ও তৌহিদ হৃদয়। লিটন দাস, যিনি প্রথম ম্যাচেও কিছুটা ভালো খেলেছিলেন, এদিন যেন অন্য রূপে আবির্ভূত হন। তিনি ৫০ বলে ৫টি ছক্কা ও ১টি চারের সাহায্যে ৭৬ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। তার ব্যাটে ভর করে রানের চাকা দ্রুত ঘুরতে থাকে।
লিটনকে যোগ্য সঙ্গ দেন তৌহিদ হৃদয়। তিনি ২৫ বলে ৩১ রান করেন, যার মধ্যে ছিল ১টি ছক্কা ও ২টি চার। তাদের এই জুটি বাংলাদেশকে একটি মজবুত অবস্থানে নিয়ে যায়। এরপর শামীম হোসেন মাঠে নামেন এবং রীতিমতো ঝড় তোলেন। মাত্র ২৭ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৮ রান করে তিনি দলের স্কোরকে ১৭৭ রানে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শেষ দিকে মেহেদি হাসান মিরাজ এবং জাহিদ আলী দ্রুত কিছু রান যোগ করে দলের সংগ্রহ ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৭ রানে পৌঁছাতে সাহায্য করেন। শ্রীলঙ্কার পক্ষে বিনুরা ফার্নান্দো ও নুয়ান থুসারা ২টি করে উইকেট লাভ করেন।
দ্বিতীয় ইনিংসে দেখতে পায় শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং বিপর্যয় এবং বাংলাদেশের বোলারদের দাপট। ১৭৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কার শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি। যদিও পাথুম নিশাঙ্কা ৩৩ রান করে আউট হন। তার ইনিংসে ছিল ২ টি চার ও ১ টি ছক্কা। যদিও তার ব্যাট থেকে কিছুটা প্রতিরোধ এসেছিল, তবে সেটা যথেষ্ট ছিল না। কুশল মেন্ডিস মাত্র ৮ রান করে রান আউট হয়ে যান। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে। বাংলাদেশের বোলাররা এদিন ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং এবং ফিল্ডিং শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে রাখে।
রিশাদ হোসেন, যিনি প্রথম ম্যাচে কিছুটা রান খরচ করেছিলেন, এদিন ছিলেন দুর্দান্ত। তিনি শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং অর্ডারের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। তার স্পিন বোলিং শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের রীতিমতো নাজেহাল করে তোলে। তিনি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শিকার করে দলের জয়ের পথ সুগম করেন। এছাড়া শরিফুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও নিজেদের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করেন। শ্রীলঙ্কার কোনো ব্যাটসম্যানই উইকেটে দাড়াতে পারেননি। অধিনায়ক দাসুন শানাকা ২০ রান করে কিছুটা চেষ্টা করলেও, তা দলের জন্য যথেষ্ট ছিল না। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা ১৫.২ ওভারে ৯৪ রানে অলআউট হয়ে যায়। বাংলাদেশ ৮৩ রানের এক বিশাল জয় লাভ করে।
এই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট ছিল নিঃসন্দেহে লিটন দাস এবং শামীম হোসেনের ব্যাটিং। লিটনের ৭৬ রানের ইনিংসটি দলের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করে দেয়, আর শামীমের ঝোড়ো ৪৮ রান দলের স্কোরকে ১৭৭-এ নিয়ে যেতে সাহায্য করে, যা প্রতিপক্ষের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছিল। এরপর রিশাদ হোসেনের বোলিং ছিল ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স। তার শিকার করা উইকেটগুলো শ্রীলঙ্কার রান তাড়ার স্বপ্ন ভেঙে দেয়। ফিল্ডিংয়েও বাংলাদেশ দল ছিল দারুণ। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ এবং রান আউট দলের জয়ে অবদান রাখে।
এই জয়ের মূল কারণ ছিল ব্যাটসম্যানদের সাহসী ব্যাটিং এবং বোলারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। প্রথম ম্যাচের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ দল এদিন আরও বেশি আগ্রাসী এবং নিয়ন্ত্রিত ক্রিকেট খেলেছে। ফিল্ডিংয়েও তারা উন্নতি দেখিয়েছে, যা টি-২০ ফরম্যাটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই জয় বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দেবে এবং আসন্ন তৃতীয় ও শেষ টি-২০ ম্যাচের জন্য তাদের দারুণভাবে প্রস্তুত করবে। সিরিজ এখন ১-১ সমতায়, তাই শেষ ম্যাচটি হবে ফাইনালের মতো। আশা করা যায়, বাংলাদেশ দল এই জয়ের ধারা বজায় রেখে সিরিজ নিজেদের করে নিতে পারবে।
এই জয় শুধু একটি ম্যাচ জয় নয়, এটি ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য এক স্বস্তির নিঃশ্বাস। প্রথম ম্যাচের হতাশা কাটিয়ে টাইগাররা যে দৃঢ়তা ও মানসিক শক্তি দেখিয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এই পারফরম্যান্স আগামী দিনের জন্য দলের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আশা করি, তৃতীয় টি-২০ ম্যাচেও বাংলাদেশ দল এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সিরিজ জিততে পারবে এবং ভক্তদের মুখে হাসি ফোটাবে। এই জয় প্রমাণ করে দিল, বাংলাদেশ দল যেকোনো পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা রাখে।
ব্লগার: @joniprins
কমিউনিটি: আমার বাংলা ব্লগ
তারিখ: ১৪ জুলাই ২০২৫
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।

Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
https://x.com/RamimHa74448648/status/1944656986387419322?t=Ie8gAJPvVvVN0hL8Xy2XpQ&s=19
https://x.com/RamimHa74448648/status/1944657378508685431?t=IhhAew7VUnhE7PKIX8HKWg&s=19
প্রথমেই বাংলাদেশ টিমকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।আমি এই খেলাটি পুরো দেখছিলাম। কিন্তু কখনোই ভাবতে পারিনি যে এত বড় ইনিংসে পরাজয় হবে।যাইহোক বাংলাদেশ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে এত সুন্দর কামব্যাক করবে যা সবাইকে অবাক লাগিয়ে ছারছে।ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।