চলচিত্র রিভিউ : জারহেড
নমস্কার,
বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। ঈশ্বরের কৃপায় আমি ভালো আছি। আপনাদের সামনে আজ আমি একটি সিনেমার রিভিউ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম। আজ যে সিনেমাটি রিভিউ করছি সেটা হলো ২০০৫ সালে রিলিজ হওয়া জারহেড। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
সিনেমার শুরুতে দেখা যায় অ্যান্থনি সফোর্ড (জেক জিলিনহল) নামের এক কম বয়সী ছেলে আমেরিকান সেনাতে যোগদান করে। যদিও সেনাতে যোগদান করার পরে সে তার প্লাটুনের সাথে মানিয়ে নিতে পারে না। সফোর্ড তাই দায়িত্ব এড়াতে অসুস্থতার ভান করা শুরু করে। তখন সেই প্লাটুনের স্টাফ সার্জেন্ট সাইকস (জেমি ফক্স) সফোর্ড এর ভান করার কথা বুঝতে পেরে সফোর্ডকে তার স্কাউট স্নাইপারে যোগদান করতে বলেন।
স্নাইপারের প্রশিক্ষণ শেষে সফোর্ড তার প্লাটুনেই স্নাইপার হিসেবে যোগ দেয়। আর সফোর্ডের সেনাবাহিনীর বন্ধু কর্পোরাল অ্যালান ট্রয় (পিটার সারসগার্ড) হয় তার স্পটার। সফোর্ডের সেনাবাহিনীতে যোগের কিছুদিনের মধ্যে ইরাক কুয়েত আক্রমণ করে বসলে শুরু হয় গালফের যুদ্ধ। তখন সফোর্ডের প্লাটুনকে "অপারেশন ডেজার্ট শিল্ড" এর অংশ হিসেবে আমেরিকান সেনা সৌদি আরবে মোতায়েন করে।
যদিও গালফে পৌঁছে সফোর্ডের প্লাটুন যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে কিন্তু বহু প্রস্তুতি ও প্রতিক্ষার পরে তাদেরকে যুদ্ধে পাঠানো হয় না। ফলস্বরূপ প্লাটুনের সবাই বিরক্ত হয়ে পড়ে। সফোর্ড তখন অনুমতি ছাড়াই ক্রিসমাস পার্টির আয়োজন করে। কিন্তু পার্টি করার সময়ে অসতর্ক হওয়ায় এক তাঁবুতে আগুন ধরে যায়। তারপর ধীরে ধীরে পুরো সেনা শিবির পুড়ে যায়। সেনা শিবির পুড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে সফোর্ডকে সেনা শিবিরের শৌচালয় পরিস্কার করার দায়িত্ব পালন করতে হয়।
কিছুদিন পর, কুয়েত সৌদি আরবের দিকে অগ্রসর হলে অপারেশন ডেজার্ট স্টর্মের আওতায় আমেরিকান সেনাদের সৌদি আরব - কুয়েত সীমান্তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সীমানায় পৌঁছে আমেরিকান সেনা মরুভূমির মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে থাকে।
সফোর্ডদের প্লাটুন মরুভূমির মধ্যে এগোতে থাকলে এক জায়গায় ইরাকি সৈন্যদের পোড়া যানবাহন ও সৈন্যদের মৃতদেহের মাঝে এসে পৌঁছায়। আর দূরে জ্বলন্ত কুয়েতি তেলের কূপগুলি দেখা যায়। বোঝা যায় ইরাকি সেনাদের পিছু হটাতেই কুয়েত তাদের তেলের কূপ জ্বালিয়ে দিয়েছে।
যুদ্ধের মধ্যে সফোর্ড ও ট্রয়কে এক মিশনে পাঠানো হয়। তাদের মিশন হয় এক এয়ারফিল্ডে থাকা ইরাকি সেনার দুই উচ্চ পদস্থ কর্তাদের হত্যা করার। বেশ কিছুদিন সন্ধানের পর সফোর্ড ও ট্রয় সেই দুই ইরাকি সেনা কর্তাদের খুঁজে বের করে। সফোর্ড গুলি করার আগেই প্লাটুন মেজর এসে তাদের বাধা দেয় আর বিমান হামলার আদেশ দেন। যার ফলে ট্রয় হতাশায় কেঁদে ফেলে। যুদ্ধ শেষ করে দেশে ফেরার পর আমেরিকান সেনাদের বিজয় উদযাপনের জন্য এক শহরে তাদের অভ্যর্থনা দেওয়া হয়।
সিনেমার শেষে লগ্নে দেখা যায়। কয়েক বছর পর, সফোর্ড হঠাৎই ট্রয়ের মৃত্যু সংবাদ জানতে পারে। ট্রয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে সফোর্ড ট্রয়ের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় আসে। সেখানে সেনাতে থাকার সময় তার পুরোনো বন্ধুদের সাথে দেখা হয়। যা যুদ্ধের স্মৃতি গুলো ফের মনে করিয়ে দেয়।
জারহেড সিনেমাটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি। অ্যান্থনি সফোর্ড নামের এক আমেরিকান মেরিনের একই নামের বই লেখেন। অ্যান্থনি সফোর্ড গালফ যুদ্ধের সময়ে তার অভিজ্ঞতা নিয়েই বই লেখেন।
সিনেমাটি সেনা জীবনের এক করুন দিক তুলে ধরেছে। জেক জিলিনহল অ্যান্থনি সফোর্ড এর চরিত্রে ভালো অভিনয় করেছে। সিনেমাটোগ্রাফি বেশ ভালো। ট্রয় চরিত্রে পিটার সারসগার্ড বেশ নজরকাড়া।
পরিচালনা | ৮ |
কাহিনী | ৯ |
অভিনয় | ৭ |

250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
যুদ্ধ ও একশন মুভিগুলা দেখতে ভালোই লাগে। তবে যুদ্ধের পিছনেও কোনো কারণ থেকেই যায়। জারহিড মুভির ট্রেলার দেখে কিছুটা উপলব্ধি করা গেল। শেষে সফোর্ড এর মৃত্যুর খবর ট্রয়কে ব্যথিত করেছিল। ফাইনালি আন্তোষ্টিক্রয়ার মধ্যে দিয়েই মুভিটি শেষ হয়।
সিনেমার গল্পটা ব্যঙ্গাত্মক অথচ খুবই গভীর। তাড়াতাড়ি দেখে ফেলুন