"আদিতের দাঁতের প্রেম কাহিনী" 🤭

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি।

আমরা তখন ক্লাস টেনে পড়ি। আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে প্রেমের হাওয়া বইছিল ভালোই। কেউ গোপনে, কেউ প্রকাশ্যে প্রেম করছিল। শুধু আমি আর আদিত ছিলাম ব্যাচেলর ক্লাবের সভাপতি ও সহ-সভাপতি! তবে আমার সহ-সভাপতি সাহেবের কাহিনী যে এতো মজার হবে, সেটা আমি কল্পনাও করিনি।আজকে আমার বন্ধু আদিতের সেই প্রেমের কাহিনী আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব।প্রেম কাহিনীটি পড়ে সবাই মজা পাবেন এবং হাসতে বাধ্য হবেন। চলুন তাহলে প্রেম কাহিনী শুরু করি...

1000054127.jpg

সোর্স

আদিত ছিল আমাদের দলের সবচেয়ে লাজুক ছেলেটা। মেয়েদের সামনে পড়লেই সে তোতলাতে শুরু করত। কিন্তু একদিন, হুট করেই শুনলাম আদিত প্রেমে পড়েছে! বিশ্বাস হয়নি, কারণ আদিত আর প্রেম? অসম্ভব!

ঘটনাটা এমন,
আমাদের স্কুলের পাশেই একটা গার্লস স্কুল ছিল। সেখানে পড়তো নেহা নামে একটা মেয়ে, যার হাসি নাকি একবার দেখলে মানুষ ঘুমাতে পারতো না! আদিত একদিন স্কুল থেকে ফেরার সময় নেহার হাসি দেখে যেন আকাশ থেকে পড়ল। তারপর? তারপর সে প্রতিদিন স্কুল শেষে ওই রাস্তা দিয়ে হাঁটা শুরু করলো, শুধু এক ঝলক দেখার জন্য।আমরা ব্যাপারটা টের পেলাম যখন একদিন স্কুল শেষে দেখি, আদিত কাঁচুমাচু মুখ করে বসে আছে। আমরা সবাই মিলে ঘিরে ধরতেই সে স্বীকার করলো, সে নেহাকে ভালোবাসে।

আমরা সবাই মিলে প্ল্যান করলাম, তাকে সাহায্য করব। প্রথমেই প্রেমপত্র লেখার সিদ্ধান্ত হলো। আমি নিজেই ওর হয়ে প্রেমপত্র লিখে দিলাম। কাগজে লিখলাম “তোমার হাসি আমার হৃদয়ে ঝড় তোলে, তোমার চোখের তারা আমার আকাশের আলো!”

এত বড় কবি যে আমি, সেটা ও তখনই টের পেল!🤭

এবার প্রেমপত্র দেবার পালা। আমরা সবাই মিলে কৌশল বের করলাম, আদিত ওর ছোট ভাইয়ের হাতে চিঠি পাঠাবে। ছোট ভাই তো আর প্রেম বোঝে না, তাই ওকে বলা হলো, ‘এই চিঠিটা নেহা আপুকে দিও।’ পরদিন স্কুলে এসে দেখি, আদিতের মুখ লালচে হয়ে গেছে। কারণ কি জানো? চিঠিটা নেহার বদলে ওর বড় আপুর হাতে চলে গেছে! ওই আপু আবার আমাদের স্কুলের মামুন স্যারের স্ত্রী!

শুনে আমরা তো হেসেই লুটোপুটি।😆

এরপর আদিত বলল, এবার নিজে গিয়ে কথা বলবে। আমরা ওকে উৎসাহ দিলাম। দুপুরে ছুটির পর সাহস করে নেহার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। মনে মনে প্রার্থনা করছিলাম যেন ও কিছু বুদ্ধিদীপ্ত কথা বলে। কিন্তু আদিত তোতলাতে শুরু করলো,

“তু..তু...তুমি খুব সুন্দর। তোমার দাঁতগুলো সাদা... মানে, হাসি ভালো লাগে। আমি... আমি তোমাকে ভালোবাসি!”নেহা প্রথমে চুপ, তারপর বললো “ঠিক আছে, আমি ভাববো।”

এই শুনে আদিত আনন্দে লাফ দিয়ে উঠল।কিন্তু আমরা জানতাম, এটা একরকম দয়া করা উত্তর।পরদিন ওর মন খারাপ। কারণ নেহা ওর এক বান্ধবীর কাছে বলে দিয়েছে, “একটা ছেলে এসে দাঁত নিয়ে কমপ্লিমেন্ট দিল। প্রেমের প্রপোজালে দাঁতের কথা কে বলে?”

আদিত এরপর আর কখনো প্রেম করার কথা বলেনি। এখনও ও ব্যাচেলর। আর আমরা ওকে মাঝেমধ্যে মনে করিয়ে দিই “তোর প্রেমে পড়ার গল্পটা শুনলে হাসতে হাসতে দাঁত পড়ে যাবে”😁


আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

1000024149.png

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ। আমি ঘোরাফেরা, লেখালেখি এবং ফটোগ্রাফি করতে ভালোবাসি। ভ্রমণের মাধ্যমে নতুন জায়গা ও সংস্কৃতি আবিষ্কার করতে আমার আনন্দ লাগে। বিভিন্ন মুহূর্ত ও দৃশ্যকে ক্যামেরার লেন্সে বন্দি করা আমার শখ। লেখালেখির মাধ্যমে আমি আমার ভাবনা, অভিজ্ঞতা ও অনুভূতিগুলো শেয়ার করতে ভালোবাসি। প্রকৃতির সৌন্দর্য, মানুষের জীবনধারা এবং ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমার লেখার মূল অনুপ্রেরণা। আমি প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করার চেষ্টা করি এবং সেগুলোকে স্মৃতিতে ধরে রাখি। এসব অভিজ্ঞতা আমাকে নতুন করে জীবনকে দেখার অনুপ্রেরণা দেয়।

1000024154.png

1000024151.gif

Sort:  
 5 months ago 
 5 months ago 

1000054135.jpg

 5 months ago 

আপনার প্রেমে পড়ার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আদিত ব্যাচেলর রয়েছে। যাইহোক আবার হয়তো নতুন করে প্রেমে পড়বে।বেশ ভালো লেগেছে আপনার গল্পটা পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 5 months ago 

আপনার বন্ধুর প্রেমের কাহিনী শুনে আমি সত্যি হাসতে হাসতে একেবারে শেষ। এই গল্পটা না পড়লে বুঝতে পারতাম না, প্রেমের প্রপোজালে কেউ দাঁতের কথাও বলে। এটা পড়ে আসলেই হাসতে হাসতে দাঁত পড়ে যাওয়ার অবস্থা ছিল😁। তাইতো আমি দাঁত পড়ে যাওয়ার আগে তাড়াতাড়ি করে মুখ বন্ধ করে নিলাম, অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে🤐। গল্পটা কিন্তু অনেক দারুন ছিল।