ভূত দেখতে যাওয়ার অভিযান (পর্ব - ৩)
গ্রামের বন্ধুদের সঙ্গে মিলে আড্ডা, খেলা, দুষ্টুমি সবকিছুই যেন অন্যরকম আনন্দে ভরা। ছোটবেলা থেকেই আমার বন্ধু রাকিব, সুমন, আকাশ আর জুয়েল সবসময় আমার সঙ্গে থেকেছে। ওদের সাথে থাকলেই সময় কেমন উড়ে যায় বুঝতেই পারি না। তবে আজকে আমি যে গল্পটা বলতে যাচ্ছি, সেটা আমাদের এক মজার কাণ্ডকারখানা। সেটা হলো ভূত দেখতে যাওয়ার ঘটনা। যদিও এখন মনে করলে হাসি পায়, তখন কিন্তু আমরা ভয়ে কাঁপছিলাম আবার কৌতূহলেও ছিলাম ভরপুর। আর মজার ব্যাপার হলো, এই ঘটনাটা খুব পুরোনো নয় এই তো দুই-তিন বছর আগের ঘটনা, আমাদের এই এলাকার মধ্যেই ঘটেছিল।
সেদিন বটগাছের নিচে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা নিয়ে পুরো গ্রামে হইচই পড়ে গিয়েছিল। আমরা কেউ না কেউ মুখ ফসকে বলেই ফেলেছিলাম যে, ভূত দেখতে গিয়েছিলাম। এরপর থেকে গ্রামের বয়স্করা আমাদের দেখলেই হাসত কেউ বলত, এই যে ভূত ধরতে যাওয়া পাঁচ বীর!, কেউ আবার ঠাট্টা করে বলত, পরেরবার ভূত ধরার জাল নিয়ো। এসব শুনে আমরা হাসলেও ভেতরে একটা ইচ্ছে জেগে উঠল আরও একবার যাওয়া দরকার, তবে এবার ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে।
ঠিক করলাম শুক্রবার রাতে আবার যাব। এইবার সঙ্গে টর্চ ছাড়াও একটা মোবাইল ফোন নিয়ে যাব, যাতে ভিডিও করা যায়। রাকিব বলল, এবার ভূত দেখা না গেলে অন্তত প্রমাণ থাকবে আমরা গেছি। সুমন একটু ভয় পেয়েও রাজি হলো, বলল, যাই হোক, সবাই একসাথে থাকলে ভয় নাই।রাত প্রায় দশটার দিকে আমরা পাঁচজন চুপিচুপি বেরিয়ে পড়লাম। আকাশে চাঁদ নেই, চারপাশে ঘন অন্ধকার। দূরে নদীর শব্দ, হালকা বাতাস আর কুয়াশার মতো ধোঁয়া সব মিলিয়ে পরিবেশটা যেন সিনেমার মতো। হাঁটতে হাঁটতে কারো মুখে শব্দ নেই, শুধু পায়ের আওয়াজ। বটগাছটার কাছে পৌঁছাতেই আবার সেই ঠান্ডা বাতাসের হালকা গন্ধ, যেন কেউ আমাদের আগেই ওখানে ছিল।
রাকিব মোবাইলের লাইট অন করে গাছের নিচে ভিডিও করতে লাগল। ঠিক তখনই গাছের উল্টো দিক থেকে কার যেন জোরে হাঁচির শব্দ। আমরা সবাই থমকে গেলাম। সুমন ফিসফিস করে বলল, “এইবার তো সত্যিই ভূত!” রাকিব সাহস করে বলল, “চলো দেখি কে আছে।” আমরা টর্চের আলো ফেলে এগিয়ে যেতেই দেখি একটা বুড়ো মানুষ গাছের পাশে বসে আছে, হাতে দেশলাই আর ধোঁয়া উড়ছে।
বুড়ো হেসে বলল, “কী রে, তোমরাই সেই ভূত দেখতে আসা ছেলেরা না?” আমরা অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম। উনি বললেন, আমি তো রোজ রাতে এখানে বসে বিড়ি খাই, তুমরা ভয় পেয়ে আমাকে ভূত ভাবছো।আমরা সবাই তখন একসাথে হেসে উঠলাম। এতদিন যে ‘ভূতের আওয়াজ’ শুনতাম, সেটা ছিল এই বুড়ো মানুষটার বিড়ি ধরানোর দেশলাইয়ের শব্দ আর কাশির আওয়াজ। রাকিব বলল, তাহলে এই বটগাছের ভূতের রহস্য আজ ভেদ হয়ে গেল।
ফেরার পথে সবাই হাসতে হাসতে বলছিল, “ভূত না, মানুষই আসল ভূত!” তবে মনে মনে একটা আনন্দ হচ্ছিল আমরা একসাথে একটা দারুণ অভিজ্ঞতা পেয়েছি, যা হয়তো অনেকদিন মনে থাকবে।
(চলবে…)
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
X-Promotion
🎉 Congratulations!
Your post has been upvoted by the SteemX Team! 🚀
SteemX is a modern, user-friendly and powerful platform built for the Steem community.
🔗 Visit us: www.steemx.org
✅ Support our work — Vote for our witness: bountyking5
Daily Tasks
Comments link
https://x.com/mohamad786FA/status/1975996939222278340?t=WPHFhz92-5O8HNsVHbnWfw&s=19