“যমুনার চরে এক বিকেলের বন্ধুত্বের আড্ডা”
ঢাকার কোলাহলে মনটা যখন হাঁপিয়ে উঠে, তখনই সিরাজগঞ্জ যেন ডাকে নিজের শহর, নিজের মানুষ, নিজের বাতাস। ঢাকায় দশ-পনেরো দিন কাটাতে পারি ঠিকই, কিন্তু মনের মধ্যে একটা অস্থিরতা কাজ করে সবসময়। সেই অস্থিরতাই টেনে নিয়ে আসে আমার প্রিয় শহর সিরাজগঞ্জে। মাসে অন্তত দু'বার হলেও বাড়ি না গেলে মনটাই ভালো থাকে না।
সিরাজগঞ্জে ফিরলেই পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আবার সেই পুরোনো দিনের আড্ডা জমে ওঠে। জীবনের পথে চলতে গিয়ে যে সম্পর্কগুলো সময়ের সঙ্গে ধূসর হয়ে যাওয়ার কথা ছিল, আমরা সেগুলোকেই প্রতিদিন নতুন করে রাঙিয়ে নিচ্ছি।চলুন আজকে আপনাদের মাঝে দারুন একটি মুহূর্ত শেয়ার করব।সম্পূর্ণ পোস্টটি উপভোগ করুন...
আজকের বিকেলটাও তেমন এক স্বর্ণালি বিকেল। আমরা বন্ধুরা মিলে বেরিয়ে পড়লাম যমুনার চরে। বালুময় চর, ছড়ানো-ছিটানো ছোট ছোট গাছগাছালি আর সবুজের মাঝে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা টারবাইনগুলো দেখলেই মনটা প্রশান্তিতে ভরে যায়। বিশাল আকাশের নিচে এমন একটা মুক্ত পরিবেশে সময় কাটানো, যেন পুরো শহরের ক্লান্তি এক নিমিষেই দূর করে দেয়।চরের মাঝখানে কিছু চেয়ার এনে গোল করে বসেছিলাম। চারপাশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মাঝখানে আমরা সাতজন পুরোনো বন্ধু বয়স বদলালেও আমাদের ভেতরের শিশুটি কিন্তু ঠিক আগের মতোই আছে। হাসি, ঠাট্টা, খুনসুটি আর অকপট গল্পে একসময় হারিয়ে গেলাম আমরা।
কেউ গল্প বলছে স্কুলের দিনে স্যারকে বোকা বানানোর, কেউ আবার ভার্সিটির ক্লাস মিস দিয়ে সিনেমা দেখার কাহিনি শোনাচ্ছে। কেউ হঠাৎ করেই খুব সিরিয়াস মুখ করে জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা শুরু করল, আর সবাই মিলে তার সেই গভীরতা নিয়ে মজার মজার মন্তব্য করতে লাগল। সেই পুরোনো ‘মারামারির অভিনয়’ও হলো ইয়ার্কি করতে গিয়ে কেউ কাউকে ঠেলেই দিলো হালকা ধাক্কায়!আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে আমরা অনেক ছবি তুললাম। কারো চেয়ারে হেলান দিয়ে ভাব নেওয়া, কারো অন্যমনস্ক হাসি, কারো আবার আড়চোখে তাকানো প্রতিটি মুহূর্তেই ছিল আনন্দের ছোঁয়া।
সন্ধ্যার একটু পর আকাশে সূর্যটা ডুবে যেতে লাগল। ঠিক টারবাইনের পেছনে সূর্যরশ্মি মেখে এক অপার্থিব দৃশ্য তৈরি হলো। আমরা চুপ করে বসে সেই দৃশ্য উপভোগ করলাম, কেউ কেউ মোবাইল দিয়ে ভিডিও করল, আবার কেউ শুধু চেয়ে থাকল এই সৌন্দর্যকে হৃদয়ে ধরে রাখার জন্য।অন্য কোনদিন টারবাইনের ধারন কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করব।গোধূলি লগ্নের আকাশে তার বাহিনীর পাখাগুলো এত সুন্দর দেখা যায় যা কল্পনার অতীত।সে সকল ফটোগ্রাফি গুলো আমি একটু এডিট করে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।
এমন পরিবেশে বন্ধুত্ব যেন আরও গাঢ় হয়ে ওঠে। মোবাইল, ইন্টারনেট, ব্যস্ততা সব কিছুই যেন দূরে সরে যায় এই চরের নির্জন প্রান্তে। এখানে শুধুই আমরা আর আমাদের গল্প। এখানে সময় যেন একটু ধীর হয়ে যায়, যেন প্রকৃতি নিজেই আমাদের আড্ডার অংশ হয়ে পড়ে।রাত ন’টার দিকে আমরা বাসার দিকে ফেরার জন্য উঠলাম। কিন্তু কেউই উঠতে চাইছিল না। কারো মুখে বল ছিল না “চল যাই”, আবার কেউ বলছিল “আরও দশ মিনিট থাকি”। মনে হচ্ছিল এই বিকেলটা যেন কখনো ফুরিয়ে না যায়।
বন্ধুত্বের এই মুহূর্তগুলোই তো জীবনের আসল সম্পদ। সবকিছু বদলালেও যদি কিছু একই থাকে, তা হলো এই ভালোবাসা, এই বন্ধন, এই আনন্দের মুহূর্ত। তাই আজকের বিকেলের স্মৃতিগুলো আপনাদের সাথেও ভাগ করে নিলাম।হয়তো এমন বিকেল আবার আসবে, আবার আমরা মিলবো এই চরের ধারে, আবার হেসে উঠবে আমাদের চেনা মুখগুলো। ততদিন এই মুহূর্তগুলোই রয়ে যাবে আমাদের মন আর ক্যামেরার ফ্রেমে চিরদিনের জন্য।
প্রত্যেকটা ছবি তোলার লোকেশন এবং ডিভাইসের নামঃ
Device:Samsung A33 (5G)
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
ফোনের বিবরণ
মোবাইল | Samsung A33 (5G) |
---|---|
ধরণ | "যমুনার চরে এক বিকেলের বন্ধুত্বের আড্ডা" |
ক্যমেরা মডেল | A33 (48+8+5+2) |
ক্যাপচার | @mohamad786 |
অবস্থান | সিরাজগঞ্জ- বাংলাদেশ |
X-Promotion
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Daily Tasks
Comments Link:-
https://x.com/mohamad786FA/status/1949183615276830843?t=2FT1AuRsB7-OzDEBgAri3g&s=19
https://x.com/mohamad786FA/status/1949183810886656448?t=LV3ffD01yImbpj1fhbIiNA&s=19
Ss
🎉 Congratulations!
Your post has been manually upvoted by the SteemX Team! 🚀
SteemX is a modern, user-friendly and powerful platform built for the Steem ecosystem.
🔗 Visit us: www.steemx.org
✅ Support our work — Vote for our witness: bountyking5
যমুনার চরে বন্ধুদের সাথে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ভাই। এরকম জায়গা গুলোতে ঘুরতে ভালো লাগে। আর সময় কাটাতে আরো বেশি ভালো লাগে।
জায়গাটি যেমন সুন্দর তেমনি জমে উঠেছে বন্ধুদের আড্ডা। আসলে এরকম জায়গাগুলোতে আড্ডা দিতে ভালো লাগে। আর পরিবেশটা খুবই ভালো লাগছে দেখতে।