জেনারেল রাইটিং পোস্ট || মানুষের জীবনটা একেবারে অনিশ্চিত
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। এই পোস্টের টপিক হচ্ছে,মানুষের জীবনটা একেবারে অনিশ্চিত। আমাদের জীবনটা আসলেই অনিশ্চিত। আজকে আমরা একরকম আছি এবং আগামীকাল আমাদের জীবন কেমন হবে, সেটা আমরা কেউ বলতে পারি না। এমনকি এক সেকেন্ড পরে কি হবে, প্রকৃতপক্ষে সেটাও আমরা বলতে পারি না। কারণ আমাদের জীবনের এক সেকেন্ডেরও নিশ্চয়তা নেই। তবুও আমরা পৃথিবীতে একটু শান্তিতে থাকতে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যান করে থাকি ভবিষ্যতের জন্য। তাছাড়া রুটিন মোতাবেক চলার চেষ্টা করি। যাতে করে সবকিছু পারফেক্ট ভাবে করা যায়। এটা অবশ্যই যুক্তিযুক্ত। কারণ মানুষ আশা নিয়েই পৃথিবীতে বেঁচে থাকে।
আমরা যদি ভাবি, যেকোনো সময় আমরা মৃত্যুবরণ করবো, তাই কোনো কিছু করার প্রয়োজন নেই, তাহলে কিন্তু আমাদের জীবনটা একেবারে থেমে যাবে। যাইহোক মূল কথায় ফেরা যাক, সপ্তাহ খানেক আগে অর্থাৎ ঈদের তৃতীয় দিন আমরা ৭ জন সিলেটের ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর ঘুরতে গিয়েছিলাম। এর আগে বেশ কয়েকবার সিলেটে গেলেও,ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর যাওয়া হয়নি আমার। তো সেখানে যাওয়ার আগে বেশ এক্সাইটেড ছিলাম। তাই সেখানে পৌঁছানোর পর,ট্রলার নিয়ে চলে গেলাম মেইন স্পটে। তো যে দিকটাতে পানির স্রোত বেশি, আমরা ৭ জন সেখানে গিয়ে দাঁড়ালাম। যাতে করে সবাই একসাথে মজা করে গোসল করতে পারি। এখন যেহেতু বর্ষাকাল চলছে, তাই সেখানে পানির প্রচুর স্রোত ছিলো। তাই বেশিরভাগ মানুষ সেখানে জুন জুলাই মাসেই গিয়ে থাকে। পানির স্রোতের কারণে আমরা ভালোভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলাম না।
তারপর আমরা ৭ জন একে অপরের হাত ধরে, পানিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম এবং বিভিন্ন ধরনের টপিক নিয়ে কথা বলতে লাগলাম। হঠাৎ করে আমাদের একটু সামনে একটি ছেলেকে স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে গেলো। ছেলেটা সাঁতার জানতো না। তাই সামনের দিকে গিয়ে সাথে সাথে ডুবে গেলো। কারণ সামনের দিকে পানির গভীরতা ছিলো অনেক বেশি। সেখানে থাকা ৫/৬ জন লোক সেটা দেখে, সাথে সাথে সেই ছেলেকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করলো। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে ছেলেটাকে পাওয়া গেলো। কিন্তু ছেলেটাকে যখন পানি থেকে তুললো, তখন তাকিয়ে দেখলাম যে, তার শরীরটা একেবারে ছেড়ে দিয়েছে। অর্থাৎ দেখে মনে হয়েছিল মারা গিয়েছে। তারপর তাকে ঝাঁকি দেওয়ার পর,নাকমুখ দিয়ে অনেক পানি বের হলো। এরপর সেখানে থাকা একটি ট্রলারে তুলে আরও পানি বের করার চেষ্টা করলো। পানি কিছুটা বের হলেও, সেই ছেলের জ্ঞান ফিরছিলো না। তাই ট্রলারে করে তাকে ঘাটের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলো। যাতে করে হসপিটালে নিয়ে ট্রিটমেন্ট করা যায়।
কিন্তু হসপিটালে নিতে নিতেই সেই ছেলেটা মারা যায়। পরে জানতে পারলাম ছেলেটার বয়স ছিলো ১৭ বছর। ছেলেটা সেখানে ঘুরতে গিয়েছিল তার দাদীর সাথে। তো চোখের সামনে এমন একটা মৃত্যু দেখে, খুব খারাপ লেগেছিল। ৫/৬ দিন আগে সময় টিভিতে এটা নিয়ে নিউজ করেছিল। আসলে মানুষ ভাবে একরকম, আর হয়ে যায় আরেকরকম। সেই ছেলেটা তো সাদা পাথর গিয়েছিল মানসিক প্রশান্তির জন্য। কিন্তু সেখান থেকে যে আর ফেরা হবে না তার,সেটা তো সে একবারের জন্যও ভাবেনি। কিন্তু এক মূহুর্তের মধ্যেই সবকিছু শেষ হয়ে গেলো। তো এই ব্যাপারটা কয়েকদিন ধরেই মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিলো। তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক। তো সবার উচিত পরকালের চিন্তা বেশি বেশি করা এবং পৃথিবীতে থাকতে ভালো ভালো কাজ করা। কারণ যেকোনো সময় যেকোনো ভাবে আমাদের মৃত্যু হতে পারে এবং মৃত্যুর চেয়ে বড় সত্যি পৃথিবীতে আর নেই।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S24 Ultra |
তারিখ | ১৬.৬.২০২৫ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
ডেইলি টাস্ক স্ক্রিনশট এবং লিংক:
https://x.com/mohin3242127/status/1934589008384041271?t=RSzCmJtBIJud-kbV6rJ38w&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
X-promotion
আসলে মানুষের জীবন অনিশ্চিত এটা আমরা সবাই জানি। তবে আমরা যদি ভাবি যে আমাদের জীবনটা অনিশ্চিত তাহলে আমরা কিন্তু ভালো কাজ করতে পারি।আসলে আমাদের মৃত্যু কখন হবে এটা আমরা কেউ জানিনা।এই যে আপনি যে ঘটনাটা তুলে ধরলেন,এটা কেউ জানতো না এবং ছেলেটাও জানতো না যে আমার এখানে মৃত্যু লেখা ছিলো।যাইহোক সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুক।ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
মৃত্যু আসলেই বলে কয়ে আসে না। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
এখনকার সময় সবাই মনে করে যে তারা সব সময় পৃথিবীতে থেকে যাবে। আজীবন তারা এই পৃথিবীতে রাজত্ব করবে এবং আজীবন তার এই পৃথিবীতে থেকে যেতে চায়। তবে এটি কখনো সম্ভব না৷ সকলকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে৷ এই পৃথিবীতে কেউ চিরস্থায়ী নয়৷ আর এই মৃত্যু কখন কার চলে আসতে পারে তা কখনোই কেউ জানে না৷ আর সেই ছেলেটিও ঠিক সেরকম ছেলে এবং মৃত্যু কখন আসবে জানত না৷ আপনি আজকে খুব সুন্দর একটি বিষয় আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে৷
আসলেই সবাই মনে করে,পৃথিবীতে তারা আজীবন থাকবে। তাইতো চারিদিকে এতো অশান্তি। পোস্টটি পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।