আবেগ অনেক বেশি ক্ষতিকর।

in আমার বাংলা ব্লগ12 days ago


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17578226709122091549035388283247.jpg



সোর্স



আবেগ আমাদের জীবনের খুবই সুন্দর একটি জিনিস। আমরা ঘন ঘনই বিভিন্ন জিনিসের প্রতি আবেগী হয়ে উঠি, যেমন সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখলে, সুন্দর ফুল দেখলে, সুন্দর কবিতা শুনলে, আবার পছন্দমত গান শুনলে এছাড়াও যখন পছন্দের মানুষের সাথে আমরা সময় কাটায় সুন্দর সময়ের মাধ্যমে মন খুলে তার সাথে কথা বলি তখন আমরা অনেক বেশি আবেগী হয়ে পড়ি। এই আবেগ আমাদের মধ্যে অনেক সুন্দর অনুভূতি নিয়ে আসে। আর এই অনুভব আর আবেগ আমাদের জন্য কোনো ভাবেই ক্ষতি নিয়ে আসে না। বরং আমরা এইসব আবেগী কাজ করলে অনেক বেশি মানসিক দিক থেকে শান্তি পাই আর মেন্টালি স্ট্রেস থেকে দূরে থাকতে পারি। আবেগ আমাদের জীবনে কিছু কিছু কাজ ভালো করলেও সব সময় আমাদের এই আবেগ আমাদের জন্য ভাল কাজ করে না। আমরা আবেগি হতেই পারি বা সেই আবেগ অনুভূতি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত উপলব্ধি করতে পারি তাতে আমাদের মনে অনেক শান্তি আসে কিন্তু এই আবেগে কখনো কোন সিদ্ধান্ত নিলে সেটা আমাদের জীবনে অনেক বেশি ক্ষতিও নিয়ে আসতে পারে। আবেগি নেওয়া সিদ্ধান্ত কখনোই সঠিক হয় না। আবেগ বিভিন্ন রকমের হতে পারে রাগের আবেগ আবার খুশির আবেগ।


আমরা যদি রাগের মাথায় কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটিও যেমন ভুল হয় তেমনি অনেক বেশি খুশি বা আনন্দে যদি আমরা কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে বসি তবে সেটাও আমাদের জীবনের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হয়ে বসতে পারে এবং সেই সিদ্ধান্ত ভুল হয়ে থাকে। আমাদের মধ্যে যখন অতিরিক্ত আবেগ কাজ করে তখন আমাদের যে কোন রকমের সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। অনেক মানুষ আছে যারা কোন ব্যক্তি বা কোন বস্তুর প্রতি অনেক বেশি আবেগী হয়ে থাকে সেটাও কিন্তু অনেক বেশি ক্ষতিকর। কোন ব্যক্তি বা কোন বস্তুর প্রতি প্রয়োজনের অতিরিক্ত আবেগ প্রকাশ করা বা আবেগী হওয়া মোটেও উচিত নয়। প্রত্যেকটা জিনিসের প্রতি আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। আমরা যদি কোন ব্যক্তির প্রতি বেশি আবেগী হয়ে পড়ি এবং তাকে নিয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করি তবে সেই ব্যক্তির জন্য আমাদের চিন্তাভাবনা এবং আচার-আচরণ বিরক্তিকর হয়ে উঠবে এবং আমাদের সাথে তার সম্পর্ক খারাপ হয়ে উঠবে, ফলে একসময় এমন আসবে যে আমাদের সাথে সেই ব্যক্তির সম্পর্ক নষ্ট হতে বাধ্য হবে। কাউকে প্রয়োজনে অতিরিক্ত ভালোবাসা বা কারোর জন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত চিন্তা করা এইসব আবেগ অনেক বেশি ক্ষতিকর।


আমরা যখন কোন ব্যক্তি প্রতি প্রয়োজনের অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়ি এবং মনের আবেগ তার জন্য অনেক বেশি কাজ করে তখন আমরা তাকে অন্য কারো সাথে দেখলে অনেক বেশি হিংসা মনোভাব বোধ করি, আর তাকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বাধা নিষেধের মধ্যে রাখার চেষ্টা করি, আর এই কারণেই আমাদের অতিরিক্ত আবেগ তার জন্য শ্বাসরোধ করার মতো অবস্থার সৃষ্টি করে। অর্থাৎ আমাদের সঙ্গ তখন সে ব্যক্তির জন্য খুবই বিরক্তকর হয়ে উঠবে। আর তার সাথে এত বাধা নিষেধের কারণে সে তার জীবনে কখনো এগোতে পারবে না ভালো কোন কিছু শিখতে পারবে না যার ফলে সে তার জীবনে সব সময় আর পিছিয়ে থাকবে এবং উন্নতি করতে পারবে না। সুতরাং আমাদের এই আবেগ তার জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হয়ে উঠবে। আমরা আমাদের প্রিয় মানুষের ক্ষতি না চাইলেও আমাদের বিভিন্ন কর্মফলে তাদের ক্ষতি হয়ে বসতে পারে এবং আমরাই তাদের উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারি, তাই আমাদের উচিত আমাদের আবেগকে প্রতিনিয়ত নিয়ন্ত্রণে রাখা। যেমন কিছু কিছু বাবা মায়েরা এমন আছে যারা সন্তানের প্রতি এত বেশি আবেগী হয়ে ওঠে এবং সন্তানকে নিয়ন্ত্রণে রাখার আর কঠোর শাসনের মধ্যে রাখার চেষ্টা করে, যার ফলে সেই সন্তানের ভালোভাবে বিকাশ হতে পারে না কোন দিক থেকেই।


বাবা-মার এই অতিরিক্ত ভালোবাসা এবং আবেগ সন্তানের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। ছোট থেকে যখন আস্তে আস্তে সন্তান বড় হয়ে ওঠে তখনও অনেক বাবা-মা আছে যারা তার আবেগকে কোনভাবেই কন্ট্রোল করে না এবং ছেলে মেয়েকে প্রতিনিয়ত উন্নতির পথে বাধা দিতে থাকে। যার ফলে বাবা-মায়ের সাথে সন্তানের সম্পর্ক কিছু বছর পরে অনেক বেশি তিক্ত হয়ে ওঠে যখন সন্তান নিজে দক্ষতায় কিছু করার চেষ্টা করে কিন্তু বাবা-মা তাকে বাধা দেয়। তাই আবেগকে সবসময় কন্ট্রোলে রেখে বাস্তবতা মেনে নিয়ে চলতে হবে। আমাদের চিন্তাভাবনা, জীবনের সিদ্ধান্ত কখনোই আবেগের বসে নিলে চলবে না, আমাদের প্রতিনিয়ত আমাদের জীবনটাকে বাস্তবতার মধ্য দিয়ে চালনা করতে হবে এবং আবেগী না হয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা আর বাস্তবতার মধ্য দিয়ে জীবনটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আর আমাদের সন্তান এবং প্রিয় জনকেও প্রতিনিয়ত আবেগী না হয়ে বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী জীবনে সিদ্ধান্ত নেওয়া শেখাতে হবে। তবে আমরা এবং আমাদের প্রিয়জন জীবনে সফলতা পাবে এবং তাদের জীবনের প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত সঠিক হবে।


আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।