কিছু পাখির ফটোগ্রাফি।

in আমার বাংলা ব্লগ7 days ago


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000052469.jpg



পাখি আমার ভীষণ ভালো লাগে। চারপাশে যখন দেখি পাখিদের উড়ে বেড়াতে তখন যেন নিজেকেও মুক্ত বলে মনে হয়। তবে নিজেকে পাখির সঙ্গী করে নিতে খুব ইচ্ছা করে। মনে হয় আমিও যদি পাখির মতনই খোলা আকাশে উড়ে বেড়াতে পারতাম ভালো হতো। আমাদের এখানে চার পাশে বিভিন্ন রকমের পাখি দেখা যায় যা দেখতে আমার ভীষণই ভালো লাগে। পশুপাখি আমাদের পরিবেশে আমাদের চারপাশে থাকলে যেন পরিবেশের শোভা বৃদ্ধি পায়। যেকোনো জায়গায় পাখিদের আওয়াজ এবং পাখিদের সুমধুর কন্ঠে যেন পরিবেশটা সুন্দর ভরে ওঠে, চারপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ যেন প্রাণ পায় পাখির ডাকে। তবে পাখিদের ফটোগ্রাফি করা খুবই মুশকিল। পাখিরা এত ছটফট করে আর মানুষ দেখলেই দূরে পালিয়ে যায় যে তাদের ফটোগ্রাফি করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তবে আমি আজকে যে ফটোগ্রাফি গুলি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলেছি এগুলির মধ্যে কিছু পাখি আমার ঘরেতেই ছিল আর বাকি মুক্ত হয়ে বাইরে ছিল। তবে চলুন আজকের সুন্দর কিছু পাখির ফটোগ্রাফি আপনাদের মাঝে শেয়ার করি।


ফটোগ্রাফি-১


1000048532.jpg



প্রথমেই যে ফটোগ্রাফিটি আপনারা দেখতে পারছেন এই পাখিটি আমার হাতেই বসে রয়েছে। এই পাখিটির আমি সঠিক নাম জানিনা যদিও গুগলে সার্চ করেছিলাম কিন্তু এই একই ধরনের দেখতে পাখি খুঁজে পেলাম না। তাই আর এই পাখিটির কনফার্ম নাম জানা নেই আমার। এই পাখিটি একদম ছোট একটি বাচ্চা পাখি। আমার হাজব্যান্ড রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পায় একটি পাখিকে বিড়ালে তাড়া করে রাস্তার ওপর নিয়ে এসেছে। পাখিটি আর একটু হলেই আমার হাজবেন্ডের গাড়ির নিচে চাপা পড়তে যাচ্ছিল। তবে সঠিক সময়ে তাড়াতাড়ি আমার হাজব্যান্ড গাড়িটি থামিয়ে দেওয়ার কারণে আর চাপা পড়েনি, আর হাজব্যান্ড পাখিটিকে উদ্ধার করে বাড়িতেই নিয়ে চলে এসেছিল। তারপর থেকেই ছিল আমার কাছে। পাখিটি আমার ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল ছিল রোজ খাইয়ে দেওয়া ছিল আমার কাজ। পাখিটিকে থাকার একটি জায়গা করে দিয়েছিলাম তবুও সে সেই জায়গাতে বেশি থাকতে পছন্দ করত না। ঘরে ঢুকিয়ে দিলে শুধু ডাকাডাকি করত আর ঘর থেকে বের করে আনলেই শান্ত হয়ে আমার কাছেই অর্থাৎ আমার হাতের পরেই বসে থাকতো। দুই তিন দিন পাখিটি আমার কাছে থাকার পরেই হঠাৎ করে একদিন অসুস্থতার কারণে মারা গেল। আসলে ওই বিড়ালটি পাখিটির শরীরের অনেক অংশে ক্ষত করে দিয়েছিল।


ফটোগ্রাফি-২


1000047017.jpg


দ্বিতীয় যে ফটোগ্রাফিটি আপনারা ওপরে দেখতে পারছেন এই ফটোগ্রাফিটির পাখিটিরও সঠিক নাম আমার জানা নেই। এই পাখিটিও ছোট একটি বাচ্চা পাখি। আমাদের বাড়ির সামনেই কিছু গাছের মাঝে এই পাখিটিকে একটি কাক মেরে ফেলার চেষ্টা করছিল। ছোট বাচ্চা পাখিটি গাছের ডাল থেকে নিচে পড়ে গিয়ে ছটফট করছিল। এমন সময় আমার বাবা পাখিটিকে দেখতে পেরে ছুটে গিয়ে উদ্ধার করে। তারপর বাড়িতে এনে দেখে পাখিটির পা ভেঙে গেছে। পাখিটি ঠিকমত দাঁড়াতেও পারছিল না। বাবা তারপর রাতে পাখিটিকে কিছু খাবার খাইয়ে একটা কাগজের বোর্ডের মধ্যে ঘর করে দিল এবং পাখিটিকে সেখানেই রেখে দিয়েছিল। খুবই কষ্টে রাতটা পার করেছে এবং পরের দিন বাবা আবার আমাদের বাড়ির সামনে একটা সুরক্ষিত জায়গায় পাখিটিকে ছেড়ে দিয়ে এসেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে যখন আবার পাখিটির খোঁজ নিতে গেল তখন দেখতে পেলো যে পাখিটি মারা গেছে। অনেক কষ্ট সহ্য করেও বাকিটি বাঁচতে পারল না শেষ পর্যন্ত মারা গেল।

ফটোগ্রাফি-৩


1000052467.jpg



বিকালের দিকে আমি বাড়ির উঠোনেই একটু হাঁটাহাঁটি করছিলাম এমন সময় দেখতে পেলাম দুটো শালিক পাখি গাছের ডালে বসে খুব ডাকাডাকি করছে। পাখি দুটি ডাক শুনে আমার নজর গেল তাদের দিকে। দুজন একসাথে বসে মনের সুখে যেন গল্প করছে। একটি পাখি যখনই নড়ছে অন্যটি ও তার পেছন পেছন সেদিকেই যাচ্ছে। একটি পাখি কোন ডালে উড়ে গেলে অন্য পাখি দিয়েও সেই ডালে গিয়ে পাখিটির পাশেই বসছে। একদম পুরো প্রেমিক প্রেমিকার মতো একে অপরের যেন সঙ্গ ছাড়তে চাইছে না। পাখি দুটি এমন কাণ্ড দেখে আমার ভীষণ ভালো লাগলো। পাখি দুটির ফটোগ্রাফি করার ইচ্ছা জাগলো কিন্তু এত বেশি নড়াচড়া করছিল আর আমি তাদের কাছে গেলেই উড়ে এত দূরে চলে যাচ্ছিল যে ফটোগ্রাফি করা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই আমি একটু দূরে সরে যাওয়ায় আসি দুটি একটু কাছে এসে যেই বসেছে সাথে সাথে গিয়ে ফটোগ্রাফি করে নিয়েছি। বেশ সুন্দর দেখতে লাগছিল দুজনকে একসাথে। ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি দুই শালিক দেখা নাকি ভালো। দুই শালিক দেখলে মনের ইচ্ছা পূরণ হয়। যদিও একথায় সত্যতা আছে বলে আমার মনে হয় না তবুও শালিক পাখি দেখলে বেশ ভালই লাগে আর সব সময় জোড়া পাখি দেখতে যেন আমার একটু বেশি ভালো লাগে।

ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Sort:  
 7 days ago 

আপনার ফটোগ্রাফির দ্বিতীয় ফটোতে যে পাখিটিকে দেখা যাচ্ছে সেই পাখিটিকে আমাদের এলাকায় খট্টিটি নামে চিনে থাকে সবাই। প্রথম ফটোগ্রাফির পাখিটির নাম আমারও অজানা। তাছাড়া শালিক পাখির ফটোগ্রাফিটা সুন্দর হয়েছে।

 6 days ago 

আমরা যখন আমাদের চারপাশে সুন্দর কিছু দেখি তখনই ফটোগ্রাফি করি। আর সেই ফটোগ্রাফি গুলো করতে অনেক ভালো লাগে। দারুন দারুন সব ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।