ডাক্তার দেখানো বর্তমানে হেনস্থার ব্যাপার।

in আমার বাংলা ব্লগ20 hours ago


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17525121687374000096055138397987.jpg


সোর্স



বর্তমানে ডাক্তার দেখানো আর ধৈর্যের পরীক্ষা দেওয়া দুটোই সমান। অনেক ধৈর্য লাগে বর্তমানে ডাক্তার দেখাতে গেলে আর সাথে প্রয়োজন হয় অনেক বেশি অর্থের। ডাক্তার দেখাতে গেলে বর্তমানে এমন কোন ডাক্তার নেই যে একদম সময় মতো রোগীর কাছে পৌঁছাবে। প্রত্যেকটি ডাক্তারেরই রোগীর কাছে পৌঁছাতে দেরি হয়। ডাক্তারদের যদি কোন চেম্বারে বসার থাকে এবং অনেক রোগী দেখার ব্যাপার থাকে তবুও সে চেম্বারে পৌঁছাতেও ডাক্তারদের অনেক বেশি দেরি হয় এবং রোগীদের অপেক্ষা করতে করতেই যেন রোগ আরো বেড়ে যায়। তারপর যখন অনেক ধৈর্যের পর অবশেষে ডাক্তারের দেখা পাওয়া যায় তখন থাকে ডাক্তারের মস্ত বড় একটা বিভিন্ন ধরনের টেস্টের লিস্ট আর তার সাথে থাকে নানান ধরনের ঔষধ খাবার নির্দেশনা। আর যেসব ওষুধ খাওয়ার কথা বলে ডাক্তারেরা সেইসব ওষুধের দাম থাকে আকাশছোঁয়া। মানে বর্তমানে যেন ডাক্তার দেখাতে যাওয়া মানে নিজের যত জমা পুঞ্জি অর্থাৎ সেভিংস থাকে সব যেন ভেঙে নিয়ে রাখতে হয় ডাক্তার দেখানোর জন্য। কারণ ডাক্তার দেখানো একবার শুরু করলে একটার পর একটা এমন ওষুধ, বিভিন্ন টেস্ট দিতে থাকবে যা শেষ করাই অনেক বেশি খরচ সাপেক্ষ ব্যাপার।


অনেক সময় তো আবার ডাক্তার দেখাতে যাওয়া হয় একটা সমস্যার জন্য সেখান থেকে আবার হাত-পা গজিয়ে অন্যান্য বিভিন্ন সমস্যা সামনে চলে আসে। আর ডাক্তারদের নির্দেশনা মতে সব সমস্যার ইমিডিয়েট সমাধান করতেই হবে। টেস্টগুলো সব ইমারজেন্সি করতে হবে, ওষুধগুলো নিয়মিত ঠিকঠাক করে খেতে হবে। ডাক্তারদের তো আবার বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট ভাগ করা থাকে। একটা সমস্যার জন্য ডাক্তার দেখাতে গিয়ে অন্য আরেক সমস্যা যখন বেরিয়ে পড়বে তখন তার জন্য আবার অন্য ডাক্তার দেখানোর জন্য ছুটতে হয়। এক একটা সমস্যার জন্য এক একটা ডাক্তার নির্ধারিত থাকে। অনেক সময় তো আবার সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে সমস্যা আবার বেড়ে যয়, যেমন বেশ কয়েক মাস আগে আমি দাঁতের সামান্য সমস্যার জন্য গেছিলাম দাঁতের ডাক্তারের কাছে। একটি দাতের সমস্যা ছিল যেটা ঠিক করতে বেশ অনেক সময় গেছে এবং তার সাথে গেছে অনেক বেশি অর্থ আর ওষুধ খাওয়ার ঝামেলা। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে আমার সমস্যার মোটেও সমাধান হয়নি। কারণ ওই একটি দাঁত ঠিক করতে গিয়ে ওই দাঁতের আশেপাশের এবং ওপরের দাঁতগুলো এমন ভাবে ঘষে দিয়েছে যে সেই দাঁতটি ছাড়া বর্তমানে অন্যান্য দাঁতগুলোই বেশি সমস্যা দিচ্ছে।


কিন্তু সত্যি কথা বলতে এখন আর দাঁতের সমস্যা নিয়ে দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাওয়ার ইচ্ছা নেই কারণ দেখা গেল সেই দাত গুলো ঠিক করতে গিয়ে এবার পুরো পাটি শুদ্ধ দাঁত নিয়ে সমস্যায় পড়ে গেলাম। এর থেকে ভালো ঘরোয়া পদ্ধতিতে যেভাবে ঠিক করা যায় সেটাই হবে শ্রেয় কাজ। আসলে বর্তমানে ডাক্তারেরা রোগীকে ঠিক করার থেকে অসুস্থ করতেই বেশি চেষ্টা করে। যদিও সব ডাক্তার সমান নয় তবুও কিছু কিছু ডাক্তার এমন আছে যারা একটু সুস্থ করতে না করতেই অনেক বেশি অসুস্থ করে ফেলে মানুষকে। আর তারা যে এ সমস্যাগুলো বোঝে না এমনটা নয়। অনেক বেশি পড়াশোনা করে অনেক বেশি জ্ঞান অর্জন করে তারা ডাক্তারি পাস করছে এবং মানব সেবায় নিয়োজিত হচ্ছে। তারা খুব ভালো করেই জানে যে কোথায় কিভাবে এবং কেমন ভাবে ট্রিটমেন্ট করতে হবে। কিছু কিছু ডাক্তার তো এমন আছে যাদের কথাতেই এমন জাদু আছে যে শুনলেই রোগী অর্ধেকের বেশি সুস্থ হয়ে যায়। তেমনি অপরদিকে কিছু কিছু ডাক্তার এমন আছে যারা এত বেশি রোগীকে ভয় পাইয়ে দেয় এবং ভয় দেখায় যে রোগী সেইসব ডাক্তারের কথা শুনেই আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং অনেক বেশি চিন্তিত হয়ে পড়ে। যার ফলে তাদের শারীরিক অবস্থার আরো বেশি অবনতি ঘটতে থাকে।


তাই আমাদের সব সময় অনেক বেশি ভেবে চিন্তে এবং বুঝে শুনে ভালো ডাক্তার দেখে সেখানে নিজের সমস্যা নিয়ে যাওয়া উচিত। যে ডাক্তার দেখিয়ে মন সায় দেয় না বা নিজের শরীর এবং মনের এবং মানসিকতার ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে সেসব ডাক্তারের কাছে আমার মনে হয় কখনোই যাওয়া উচিত নয়। কারণ ডাক্তার এমন হওয়া উচিত যার কাছে গেলেই অর্ধেকের বেশি সুস্থ তার কথাতেই অনুভব করা যায়। যতক্ষণ পর্যন্ত পারা যায় আমাদের নিজেদের সমস্যা নিজেদেরই সমাধান করার চেষ্টা করা উচিত, বিভিন্ন পুষ্টিকর স্বাস্থ্যসম্মত খাওয়া দাওয়া করে, শরীর পরিচর্যা করে এছাড়াও বিভিন্নভাবে শরীরের প্রতি যত্ন নিলে এবং মানসিক শান্তি সর্বদাই বজায় রাখার চেষ্টা করলে শরীরকে অনেকটাই সুস্থ রাখা সম্ভব হবে। আর এসব কাজ করার পরেও যখন শরীরে অনেক বড় কোন সমস্যা হয়ে পড়ে এবং বাধ্য হয়ে আমাদের ডাক্তারের কাছে যেতেই হয় তখন অবশ্যই আমাদের ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে এবং বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ডাক্তারের সম্পর্কে জেনে তারপরে ভালো একটি ডাক্তার নির্বাচন করে সেখানে যাওয়া উচিত। কারণ এই ভেজালের দুনিয়ায় ভালো ডাক্তার পাওয়া অনেক বেশি কষ্টকর এবং ভাগ্যের ব্যাপার। আমাদের শরীর আমাদের সবথেকে বড় মূল্যবান সম্পদ, কোন ভুল মানুষের বা ভুল ডাক্তারের ফাঁদে পড়ে যদি আমাদের শরীর নামক এই মহামূল্যবান সম্পদ নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আর ফিরে পাওয়া যাবে না এবং আমাদের এই জীবনটা পুরো নষ্ট হয়ে যাবে।।


আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।