একই মানসিকতার সহকর্মী পাওয়া

🌼 হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন? আশাকরছি সকলে ভালো আছেন,আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি ।

আজকে আবারো চলে আসলাম নতুন আরও একটি লেখা নিয়ে। আশা করি আজকের লেখাটিও আপনাদের সকলেরই ভালো লাগবে।

জীবনের একটা পর্যায়ে এসে সবাই ই বুঝতে পারে যে একই মানসিকতার সহকর্মী পাওয়া জীবনের এক বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার। জীবনে আমরা যতো সময় পরিবারে কাটাই, প্রায় ততোটাই সময় কাটাই কর্মক্ষেত্রে। অফিস, ব্যবসা বা যেকোনো কাজে যদি সহকর্মীরা ভিন্ন মানসিকতার হয়, তখন সেই জায়গাটা আরামদায়ক থাকে না। সেখানে কাজের চাপের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক চাপও যোগ হয়। কিন্তু যদি পাশে থাকে এমন কিছু মানুষ, যাদের চিন্তাভাবনা, মনোভাব এবং দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের সঙ্গে মিলে যায়, তাহলে কাজ শুধু সহজই হয় না সে সাথে আনন্দময়ও হয়ে ওঠে।একই মানসিকতার সহকর্মী থাকার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো একসঙ্গে কাজ করার মধ্যে কোনো জড়তা থাকে না। একে অপরকে বোঝাতে বাড়তি সময় ব্যয় করতে হয় না। অনেক সময় না বললেও অন্যজন বুঝে যায় আমরা কী চাই বা কোনপথে এগোতে চাই। এটা টিমওয়ার্কের জন্য অসাধারণ শক্তি। কারণ, কাজের জায়গায় বোঝাপড়ার অভাবই বেশিরভাগ সমস্যার জন্ম দেয়। যখন মানসিকতা মিলে যায়, তখন ভুল বোঝাবুঝি, মনোমালিন্য বা অহেতুক প্রতিযোগিতার সুযোগ কমে যায়।

অন্যদিকে, কর্মক্ষেত্রে ভিন্ন মানসিকতার সহকর্মী থাকলে প্রতিদিনের কাজ অনেক সময় যুদ্ধের মতো মনে হয়। ছোট ছোট সিদ্ধান্তে মতোবিরোধ, কাজের ধরণে দ্বন্দ্ব এসবই কাজের পরিবেশকে ভারী করে তোলে। এর ফলে কাজের আনন্দ হারিয়ে যায়, মানসিক চাপ বেড়ে যায় এবং কর্মক্ষমতাও কমে যায়। কিন্তু একই মানসিকতার সহকর্মীরা থাকলে কাজটা হয়ে ওঠে ভাগাভাগি আনন্দের মতো।একই মানসিকতার মানুষরা শুধু কাজেই সাহায্য করে না, মানসিক শক্তিও জোগায়। জীবনে আমরা সবাই কমবেশি সমস্যার মুখোমুখি হই। কাজের জায়গায় ব্যক্তিগত দুশ্চিন্তা বা পেশাগত চাপ অনেক সময় আমাদের ক্লান্ত করে তোলে। তখন যদি সহকর্মীরা আমাদের মতো একইভাবে ভাবে, আমাদের অনুভূতি বোঝে, তখন সেই জায়গাটা হয়ে ওঠে একপ্রকার পরিবারের মতো। একজন যখন ক্লান্ত হয়ে পরে অন্যজন হয়তো হাসি বা উৎসাহের মাধ্যমে আবারও শক্তি জোগায়।

অথবা একই মানসিকতার সহকর্মী মানে নতুন আইডিয়া বা প্ল্যানিং করাও সহজ হয়ে উঠে। কারণ, সৃজনশীল চিন্তা তখন একে অপরকে পরিপূর্ণ করে। একজন কোনো আইডিয়ার শুরু করলে অন্যজন সেটা আরও সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারে। ফলে টিমওয়ার্কের মাধ্যমে বড় বড় সাফল্য পাওয়া সম্ভব হয়।এটা ঠিক যে, সব মানুষের মানসিকতা এক হবে না আর ভিন্নতা থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু যখন মূল চিন্তাধারা ও মূল্যবোধ এক হয়, তখন ভিন্নতার মধ্যেও সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। এটাই আসল শক্তি। যেমন সবাই যদি সততা, পরিশ্রম আর সহযোগিতাকে মূল্য দেয়, তবে ভিন্ন পদ্ধতিতে কাজ করলেও মানসিকতার মিল থেকে সম্পর্কটা টিকে যায়।তাই আমি মনে করি কাজের জায়গায় একই মানসিকতার সহকর্মী পাওয়া মানে শুধু একটি ভালো টিম পাওয়া নয় বরং একটি দ্বিতীয় পরিবার পাওয়া। তারা শুধু সহকর্মী থাকে না, বরং বন্ধু, অনুপ্রেরণাদাতা এবং শক্তির উৎস হয়ে ওঠে।

একই মানসিকতার সহকর্মী পাওয়া সত্যিই এক দুর্লভ ব্লেসিংস। এর মাধ্যমে কাজ সহজ হয়, কাজের জায়গাটা আনন্দময় হয় এবং জীবনে এক ধরনের মানসিক প্রশান্তি আসে। আর এই প্রশান্তিই আমাদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনকে আরও সুন্দর করে তোলে।

আশা করছি লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে।এই প্লাটফর্ম এর এই লেখাগুলো থেকে যাবে চিরকাল সে সাথে থেকে যাবে আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্যগুলোও।তাই আশা করছি আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য দেখতে পাবো।