হৃদয় বিদারক মৃত্যু

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।

cap-2923682_1280.jpg

ছবির উৎস

আজকে আপনাদের মাঝে কোন টপিক নিয়ে হাজির হয়েছি সেটা নিশ্চয়ই পোস্টের টাইটেল দেখে কিছুটা আন্দাজ করতে পেরে গিয়েছেন বন্ধুরা।আজকে মোটামুটি সারা দেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।তবে শুধুমাত্র গ্রামীণ সিম দিয়ে ইন্টারনেট সুবিধা সঠিকভাবে পাওয়া যাচ্ছে।আমি যেহেতু রবি এবং টেলিটক ইউজার তাই ডাটা সুবিধা পাচ্ছি না বলা যায়। আমার বাসার অন্যরা গ্রামীণ সিম ইজিলি ইউজ করছে এজন্য বিষয়টা জেনেছি আরকি।তবে এখন পর্যন্ত ভিপিএন ছাড়া ফেসবুক ব্যবহার করা যাচ্ছেনা।বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত ফেসবুক অনুমোদন দেয়নি ।এজন্য পূর্বের মত ফেসবুক ইউজ সম্ভব হচ্ছেনা।চলুন বন্ধুরা কথা না বাড়িয়ে আজকের লেখার মূল টপিকে যাওয়া যাক।

একটা কথা অনেক আগে থেকেই শুনে আসছি মানুষের মৃত্যু যেখানে লেখা থাকে সে সেখানে পায়ে হেঁটে যায়।কথাটি আগে সেইভাবে বিশ্বাস না করলেও এই ঘটনাটির পর বেশ ভালো ভাবে উপলব্ধি করছি বলা যায়।আপনারা সবাই জানেন যে আমাদের দেশে ছাত্র আন্দোলন চলল কদিন ব্যাপি।এতে অনেক মানুষ আহত নিহত হয়েছে।তবে এর মধ্যে কিছু মানুষ অহেতুক কোনো আন্দোলনে না জড়িয়েও প্রাণ হারিয়েছে।আপনারা নিশ্চয়ই তাহমিদ তামিম এর ঘটনাটি শুনেছেন।গতকাল প্রথম আলো পত্রিকায় লেখাটি পড়ে মনে হচ্ছিল দৃশ্যটি যেন আমার চোখের সামনে ভেসে আসছে।ছোট্ট ছেলেটি শুধুমাত্র পরিস্থিতি দেখতে বেরিয়ে তার প্রাণ হারালো।

তাহমিদ আর তার তিন বছর বয়সি বোন মুঠো ফোন নিয়ে খেলছিল।অন্য রুমে তার মা কাজ করছিল আর বাবা ঘুমাচ্ছিল দুপুরের দিকে।সে শুধুমাত্র তার আশেপাশের পরিস্থিতি দেখতেই জেলখানা এরিয়াতে যাচ্ছিল।পথে যাওয়ার সময় এক নারী তাকে আন্দোলনের দিকে যেতে নিষেধ করেন।কিন্তু সে তার কথা না শুনেই আন্দোলনের মধ্যে পড়ে যায়।তারপর পুলিশের এলোপাথাড়ি গুলি চলে তার শরীরে। ছাত্রছাত্রীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন এবং তখন লাশ ময়না তদন্ত করতে পাঠাতে চান।কিন্তু উত্তেজিত ছাত্রজনতা হাসপাতালে ভাংচুর করে এবং স্ট্রেচারে করে লাশ নিয়ে মিছিল করে।এদিকে লাশ নিয়ে মিছিল করার সময় ও তার শরীরে আবারও গুলি লাগে।এই দৃশ্যটি তার বাবা দাঁড়িয়ে দেখে কিন্তু তার কিছুই করার থাকেনা । পরে জানতে পারে এটা তার ছেলে তাহমিদ এর লাশ।

তাদের পরিবারের আরো দুইজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া স্টুডেন্ট ছিলেন।কিন্তু তারা আন্দোলনে যোগ দেন নি। তাহমিদ নিজেও যোগ দেয়নি।তারপরেও তাকে গুলির আঘাতে প্রাণ দিতে হলো।যদি তাহমিদ সেই নারীর কথা শুনে বাড়ি ফিরে যেত তাহলে আর তার পরিবার তাকে হারাতো না।পরিবারের বড় ছেলে ছিল সে আর ছোট দুই বোন।একটি পরিবারে ছেলে সন্তান থাকা কতটা জরুরি সেটা আমাদের কারো অজানা নেই।ছোট্ট ১৫ বছরের তাহমিদ কে হারিয়ে বাবা মা দুজনেই পাগল প্রায়।কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেনা তাহমিদ এর বাবা এই দৃশ্যটি।ছেলের লাশে গুলি চালাতে দেখে তিনি বাকরুদ্ধ।২০২৪ সালে এরকম কত বাবা মা তাদের সন্তান হারিয়েছেন।আর এই হৃদয় বিদারক মৃত্যু মেনে নেওয়া আসলেই কষ্টকর।ফুটফুটে ছোট্ট শিশুটির ছবি দেখে খুবই খারাপ লাগলো ।কোনো আন্দোলনে যোগ না দিয়ে শুধু শুধু প্রাণ হারালো।এই ঘটনাটি পড়ে আমার এটাই মনে হলো আসলে সৃষ্টিকর্তার ডাক পড়ে গিয়েছিল তাই হয়তোবা তাহমিদ বাইরে বেরিয়েছিল আর সেই নারীর বাধা উপেক্ষা করেছিল।তার মৃত্যু হয়তোবা এভাবেই লেখা ছিল।

ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু বন্ধুরা । আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো।


❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।

Post by-@rahnumanurdisha
Date- 28th July,2024


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

হ্যাঁ আপু বিষয়টি পড়েছি এবং ফেসবুক ভিডিওতে দেখেছি আসলে খুবই হৃদয়বিদারক ছিল। আপনি ঠিক বলছেন আমিও মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যার মৃত্যু যেখানে হওয়ার কথা ঠিক সেখানে পায়ে হেঁটে যেতে হয়। কে জানত তার এভাবে মৃত্যু হবে। সেই ছোট বোনের সাথে খেলা করছিল অহেতুক বের হয়ে তার জীবনটা চলে গেল। ঘটনাটি শুনে খুবই খারাপ লাগছিল। আরো একটি ছোট শিশু মারা গেছে যেটা ব্যালকনি থেকে দেখছিলেন গুলিয়ে এসে মাথায় লাগলো। প্রতিটি ঘটনা খুবই কষ্টদায়ক।

 last year 

জি আপু ওই শিশুর কথা শুনেছি ওই ঘটনাও হৃদয় বিদারক,তবে পত্রিকায় দেখা হয়নি।তাই সিউর জানিনা।তাহমিদ এর ঘটনাটি হৃদয় বিদারক ছিল।

 last year 

বেশ কঠিন মুহূর্ত পার করলে আমাদের জাতি। খুবই খারাপ লাগলো এমন দেশের পরিস্থিতি। খালি হলো অনেক মায়ের বুক। আর যেন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় আমাদের দেশে সেই দোয়া করি।

 last year 

জি ভাইয়া ঠিক বললেন,তবে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল না।

 last year 

তাহমিদ এর মৃত্যুর কথা মোটামুটি শুনেছিলাম। আসলে ব্যাপারটা অনেক বেশি হৃদয় বিদারক। ছোট্ট ছেলেটা যদি ওই নারীর কথা শুনে বাড়ি ফিরে যেত, তাহলে হয়তো তার এই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হতো না এবং তার বাবা-মাকে সন্তানহারা হতে হত না। আসলে মৃত্যু যে কখন, কোথায়, কার লেখা আছে, এটা স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কেউ বলতে পারে না। তবে শুধু এটাই চাইবো যে, এই ধরনের ঘটনা যেন আর কখনো না ঘটে এবং বাবা-মায়ের বুক এভাবে খালি না হয়।

 last year 

জি ভাইয়া এই হৃদয় বিদারক মৃত্যু মানা যায়না।

 last year 

এই ঘটনায় প্রতি টি মৃত্যুই ভীষণ দুঃখজনক। আসলে নিজেকে নিরাপদ রাখতে হলে ঘরের বাইরে বের হওয়া ঠিক নয়।মৃত্যুর কারণে কয়েক দিন কথা হবে সবার মুখে মুখে থাকবে হয়তো খবরে জায়গা পাবে মৃত্যুর কথা কিন্তুু একমাত্র পরিবার সারাজিবন কষ্ট পাবে।ঘটনাটি খুব দুঃখজনক। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।