টাকা মানুষকে বাঁচাতে পারেনা

in আমার বাংলা ব্লগlast year
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।

cash-1169650_1280.jpg

ছবির উৎস

আজকে আপনাদের মাঝে কোন টপিক নিয়ে হাজির হয়েছি বুঝতে পারছেন না নিশ্চয়ই বন্ধুরা পোস্টের টপিকটি।চলুন ক্লিয়ার করা যাক।আসলে আমরা প্রত্যেকেই নিজেদের মানুষ বলে দাবি করি।আসলেই কি আমরা প্রত্যেকেই মানুষ আছি এই যুগটাই।মানুষ বলতে আপনারা হাত ,পা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিশিষ্ট একজন ব্যক্তিকেই আগে মানুষ বলে দাবি করবেন হয়তো।কিন্তু আমার কাছে এই বিষয়টা একদমই একটু ভিন্ন।একজন মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব।এজন্যই তাকে সেরা জীব ট্যাগ দেওয়া হয়েছে অন্যান্য প্রাণীর থেকে জ্ঞান,বুদ্ধি,সামর্থ বেশি রয়েছে তাই।কিন্তু বর্তমান মানুষ অনেকটা পশুর সমতুল্য হয়ে গিয়েছে।আসলে পশু বললে ভুল বলা হবে।কেননা পশুরাও তার মা কে ভালোবাসে।আর তার মায়ের স্থান তার কাছে অনেকটা উপরেই।

আজকে আমি আপনাদের সাথে সত্য ঘটনার আলোকে একটি লেখা শেয়ার করব।আমার পরিচিত এক ব্যক্তির ঘটনা এটি।একটি সুখী পরিবার ছিল সেই মহিলার ।গ্রামের একজন সম্মানীয় ব্যক্তি ছিলেন তার স্বামী।একটি সরকারি চাকুরি করতেন তিনি কিন্তু রিটায়ার করার কিছুদিন পরেই মারা যান।এর মধ্যে তাদের ছেলেরা বিয়ে করেছিল সবাই মেয়েদেরও বিয়ে দেওয়া হয়ে গিয়েছিল।সম্পত্তি বেশ খানিকটা ছিল তাদের।আর পেনশন এর টাকায় বেশ ভালো যাচ্ছিল।কিন্তু কয়েক বছর পর হঠাৎ স্ট্রোকের কারণে তিনি প্যারালাইসিস হয়ে পড়েন।আর সেই থেকেই শুরু হয় সেই মহিলার জীবনের কষ্টের দিন গুলো।

বেশ বড়লোকের মেয়ে ছিলেন তিনি।এজন্য ছোট থেকেই বেশ আদরে বড় হয়েছিলেন।তাছাড়া স্বামীর বাড়িতেও বেশ সুখী ছিলেন।দুঃখ কষ্ট খুব একটা ছিলনা তার জীবনে।যখন তিনি অসুস্থ অবস্থায় ছেলেদের হাতে গিয়ে পড়লেন ।তখন তার বউমা যারা ছিলেন প্রত্যেকেই খুব নিম্ন মানসিকতার ছিলেন।বলতে গেলে তারা খুব একটা ভালো ফ্যামিলি থেকে বিলং করতেন না।অর্থাৎ বিয়ের সময় এই ব্যাপার ছিল যে তাদের সাথে তার বৌমাদের পরিবার একেবারেই যায় না।আপনারা একটি বিষয় খেয়াল করবেন মানুষ বিয়ের সময় পরিবার কে আগে প্রাধান্য দেয়।কারণ পরিবার থেকেই ভদ্রতা,শালীনতা গুলো শিখে আসে যেকোনো মেয়ে হোক কি ছেলে।তো তার এত সম্পত্তি ছিল সেগুলোর উপরেই তাদের নজর ছিল।তাই তারা সবসময় চাইতেন তিনি মারা গেলে তার সম্পত্তি গুলো নিয়ে নিবেন।এজন্য তাকে কোনো ভালো ডাক্তার দেখাতেন না।তবে তার যেহেতু তিন ছেলে ছিল সবার মধ্যে মেজ ছেলে সবচেয়ে বিত্তবান ছিলেন।

তার দুই ছেলের লোভের থেকে তাকে বাঁচাতে তার মেয়েরা সেই ছেলের কাছে দেওয়ার পরামর্শ দেন।কিন্তু তার সেই বউমা তার ট্রিটমেন্ট এর টাকা গুলো জমিয়ে রাখতেন তার মৃত্যুর পরে মাদ্রাসায় দান করার জন্য।অথচ দেখুন ওই টাকা গুলো কিন্তু তার নিজেরই ছিল।শুধু চিকিৎসা যদি করাতেন তাহলে তিনি আরো কিছুদিন বেঁচে থাকতেন।আর না বেঁচে থাকলেও অনেকটা সুস্থ অবস্থায় মারা যেতেন।যেহেতু প্যারালাইসিস রোগী তিনি ছিলেন তাই থেরাপি গুলো দিলে অন্তত আশা করা যেত যে তার হাত পা অন্তত সোজা থাকবে আরকি।কিন্তু তিনি এতটাই দুর্ভাগ্যবান ছিলেন যে তার ছেলের এগুলোতে কোনো মাথা ব্যাথা ছিলনা।যেটুকু করতেন তার বউমা।আর পরের জন্য পরে সময় পেলেই কাঁদে।আসলে নারীর টান যার থাকার কথা তার ছিলনা।আর অন্যদিকে তার বউমা ছিলেন একজন নির্বোধ অমানুষ ব্যক্তি।যে কিনা টাকাগুলো জমিয়ে রেখেছিলেন দান করার জন্য।একজন জ্ঞানী ব্যক্তি হলে তিনি আগে তার চিকিৎসা করাতেন।এই গল্পটি থেকে এটাই বুঝতে পারি আমরা টাকা মানুষকে বাঁচাতে পারেনা।একজন সহৃদয়বান মানুষ পারে একজন মানুষকে বাঁচাতে।উক্ত মহিলার টাকা থাকতেও তিনি চিকিৎসা নিতে পারেন নি একজন সহৃদয়বান মানুষের অভাবে ।আমরা আশেপাশে যাদের দেখি তারা সবাই হয়তোবা মানুষ নয় বেশিরভাগই রয়েছে মুখোশধারী।

ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু বন্ধুরা । আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো।


❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।

Post by-@rahnumanurdisha
Date -17th September,2024


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Twitter_Banner_24.3.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

আসলে দুনিয়ার নিয়মটাই হয়তো এমন।টাকা পয়শা মানুষকে বাচাতে পারে না আপনার সাথে আমিও একমত।এমন অনেক ঘটনা আমাদের আশে পাশে ঘটছে।দারুন একটি বিষয় উপস্থাপন করেছেন।

 last year (edited)

জি আপনি ঠিক বলেছেন একদম,ধন্যবাদ ভাইয়া।

 last year 

আসলে আপু বর্তমান বেশির ভাগ মানুষ নামে অমানুষ রয়েছে। সত্যি টাকা কাউকে বাঁচাতে পারে না। হৃদয়বান মানুষ সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রাখলে বাঁচাতে পারে। আপনার পোস্ট পড়ে মহিলার জন্য সত্যি অনেক খারাপ লাগলো। নিজের সব কিছু থাকতে তাকে অনেক কষ্টে মারা যেতে হলো।একজন মানুষ কতটা নিষ্ঠুর হলে এমন করতে পারে।ধন্যবাদ আপু।

 last year 

জি আপু,ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ার জন্য।

 last year 

আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আপনার আজকে শেয়ার করা পোস্টের ছিল টাকা মানুষকে বাঁচাতে পারেনা। আপনার সাথে আমি সহমত পোষণ করছি। আসলে আপু ঠিকই বলেছেন টাকা মানুষকে কখনোই বাঁচাতে পারে না। কেননা বাচানোর মালিক একজন আছেন। তাছাড়া বাস্তবিকে পোস্টটি আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

জি ভাইয়া ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আপু আপনার পোস্টের টাইটেল দেখে মনে হল ভেতরে কি আছে একটু ঢুকে দেখি ।বেশ ভালো লাগলো লেখাটি পড়ে। সত্যি মানুষ নামের মুখোশধারী অমানুষ গুলো আমাদের আশেপাশেই রয়েছে যা আমরা খুব কাছ থেকে না হলে বুঝতে পারি না। মহিলার টাকা থাকা সত্ত্বেও তার চিকিৎসা না করিয়ে তার মৃত্যুর পর দান করবে কি নির্বোধের মতো চিন্তা ভাবনা ।লেখা টি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

ধন্যবাদ আপু।

 last year 

হয়তো উনার চিকিৎসা করা হলে আরো কিছুদিন বেঁচে থাকতেন। আসলে মাঝে মাঝে মনে হয় এই পৃথিবীতে টাকা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি আবার মূল্যহীন। আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

 last year 

জি একদম ঠিক বললেন আপু,চিকিৎসা করলে অনেকদিন বেঁচে যেতেন বেচারি।

 last year 

অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আজ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আমাদের আশেপাশে এমনও অনেক অমানুস আছে যাদের সাথে অনেক ঘনিষ্ঠ হলে তাদের আসল রুপ দেখতে পাওয়া যায়। খারাপ লাগছে মহিলাটির অনেক টাকা পয়সা টাকা সর্তেও তাকে বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে হয়েছে। আর এটাই হলো আসল কথা টাকা মানুষকে বাঁচাতে পারেনা

 last year 

ধন্যবাদ আপু।

 last year 

হ্যাঁ আপু আমাদের চারপাশে মুখোশধারী মানুষে একেবারে ভরে গিয়েছে। এখনতো চেনাই মুশকিল কে একজন সহৃদয়বান ব্যক্তি। টাকা দিয়ে সব কিছু হয় না এটা সবথেকে বড় সত্য। মানুষের জীবনে টাকা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু সবকিছু টাকা দিয়ে হয় না। ওই মহিলাটা সহৃদয়বান ব্যক্তির জন্য চিকিৎসা করাতে পারেননি টাকা থাকা সত্ত্বেও, এটাই বুঝিয়ে দেয় বিষয়টা। অনেক সুন্দর একটা টপিক নিয়ে পোস্টটি লিখেছেন। এটা পড়তে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।

 last year 

জি আপু,এরাও একদিন বুঝবে নিজেরা ওই পর্যায় গেলে ।

 last year 

খুবই বাস্তব একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। সত্যিই বলেছেন, লাখো কোটি টাকা থাকলেও তা অনেক সময় একজন মানুষকে বাচাতে পারে না। করোনার সময় এরকম অনেক ধনী মানুষকে দেখা গেছে যারা লাখে লাখে টাকা ঢেলেছেন কিন্তু বাচতে পারেন নাই। শুধু করনাতেই না, সব সময়ের জন্যেই এটা সত্য।

গল্পের মায়ের চিত্র পড়ে খারাপ লাগল। এগুলো আমাদেরই সমাজের চিত্র!!

উনার বৌমা উনার জন্যে খরচ না করে টাকা জমিয়ে রেখেছেন দান করার জন্যে!! আসলেই আমরা সুশিক্ষার পাই নাই! আফসোস!

 last year 

জি দুঃখজনক ছিল ব্যাপারটা,ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ার জন্য ভাই।