জৈষ্ঠ্য মাসের প্রথম বন্যাতেই শুরু হয়ে গেল মাছ ধরার সিজন
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
সোমবার, ১৯ ই মে ২০২৫ ইং
জৈষ্ঠ্য মাস পড়তেই প্রকৃতির আচরণে পরিবর্তন দেখা যায়। রোদ আর গরমে পুড়ে যাওয়া মাঠে ময়দানে হঠাৎ দেখা মেলে বৃষ্টির। মেঘে ঢাকা আকাশ আর ছমছমে পরিবেশ জানান দেয় বর্ষার আগমন বার্তা। এটা থেকেই বোঝা যায় বর্ষাকাল আর বেশি দূরে নয়, একদম কাছেই এসেছে।বছরের প্রথম বন্যা যখন নেমে আসে, তখন কেবল মাঠঘাট নয়, মানুষের মনে জেগে ওঠে পুরনো উচ্ছ্বাস মাছ ধরার মৌসুম এসে গেছে। অন্যান্য সব বছরের মতো এবারও জৈষ্ঠ্য মাসের শুরুতে অনেক বড় একটি বন্যা হয়ে গেল আমাদের এলাকার মধ্যে। বেশ কয়েকদিন ধরে আমাদের পুরো দেশের মধ্যে ঝড় বৃষ্টি লেগেই আছে।
বন্যার জল ছড়িয়ে পড়ে গ্রামের খাল, বিল, ডোবা, নালা ও নদীর মধ্যে। শুকনো পড়ে থাকা জলাশয়গুলোও নতুন প্রাণ পায়। ঢেউয়ের সাথে ভেসে আসে রকমারি দেশি মাছ। এখন বাজারের মধ্যে পাওয়া যাবে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় মাছ। মাছ ধরার যন্ত্রপাতি জাল, চাঁই, বঁড়শি ও মাছ ধরার আরো যন্ত্রপাতি বেশ কিছু দিন আগে প্রস্তুত করে রেখেছেন গ্ৰাম এলাকার মানুষেরা। তারা শুধু অপেক্ষা করছে কখন বড় একটা বন্যা হবে? অবশেষে আজকে রাতে আমাদের এলাকার মধ্যে অনেক বড় একটি বন্যা হয়ে গেল। যেহেতু বন্যা হয়েছে রাতের বেলা, তাই সকলেই সকাল বেলা মাছ ধরার যন্ত্র পাতি নিয়ে চলে যায় আমাদের মাঠের একটি নালার মধ্যে। আসলে আমাদের এই নালার মধ্যে বেশ ভালোই মাছ হয়।
মাছ ধরা শুধু খাবারের ব্যবস্থা নয়, গ্রামীণ জীবনের এক রকম উৎসব। বৃদ্ধ থেকে কিশোর, সবাই নেমে পড়ে এই আনন্দে। কাঁচা বাঁশের তৈরি চাঁই বসানো, বা পাটের জালে নদীর স্রোত চিরে মাছ ধরা সবই এক রকম দক্ষতার কাজ। পানিতে হাটুপানি দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা, হঠাৎ জালে ধরা পড়া মাছের ছটফট এই অভিজ্ঞতা শুধুই গ্রামের মানুষের নয়, শহরের মানুষও ছুটে আসে শিকড়ের টানে। আসলে মাছ ধরা আমাদের বাঙালিদের একটি প্রাচীন ঐতিহ্য।আর এই ঐতিহ্য যুগ যুগ ধরে টিকে রয়েছে, আর এটি সব সময় অব্যাহত থাকবে। অনেকের মাছ ধরা একটি নেশা, আবার অনেকের মাছ ধরা একটি শখ। আবার অনেকের মাছ ধরা একটি পেশা।
আজকের রাতের বন্যার পানিতে আমাদের এলাকার প্রায় সকল ছোট এবং বড় খাল বিল ও একদম ভরাট হয়ে গিয়েছে।আর এই সব নতুন পানির মধ্যে চলে এসেছে অনেক নতুন নতুন মাছ।আর এই সব মাছ ধরার জন্য আমাদের এলাকার অনেক মানুষ চলে গিয়েছেন সেই নদী, নালা, খাল, বিল ও পুকুরের মধ্যে। আমিও আজকে তাদের মাছ ধরা দেখতে গিয়েছিলাম। আসলে আমার মাছ ধরা দেখতে অনেক বেশি ভালো লাগে।আর আজকে যারা মাছ ধরতে গিয়েছিলেন তারা সকলেই বেশ ভালো মাছ পেয়েছে। কেননা, এই নতুন পানির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে মাছ এসেছিল। প্রতি বছর এরকম নতুন পানির মধ্যে নতুন নতুন মাছ আসে।
জৈষ্ঠ্যের প্রথম বন্যা কেবল একটি প্রাকৃতিক ঘটনা নয়, এটি বাংলার কৃষিনির্ভর সমাজের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এক আবেগময় অধ্যায়। এই সময়টা যেন গ্রামীণ জীবনের বার্ষিক চক্রে এক নবজাগরণের মুহূর্ত। বছরের শুরুতে রোপণের আগে জমিতে পানি জমে যাওয়া যেমন দরকার, তেমনি এই জলই আশীর্বাদ হয়ে আসে মাছের আধিক্যে। মাছ ধরার এই উৎসব প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে আসা এক জীবনধারার বহিঃপ্রকাশ, যা কেবল খাদ্যের চাহিদা মেটানো নয়, বরং মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির সম্পর্কের এক চিত্ররূপ। বৃষ্টির জল, নদীর ঢেউ, আর মানুষের পরিশ্রম একসাথে মিশে তৈরি করে এক প্রাণবন্ত ছন্দ, যেখানে প্রতিটি মানুষ নিজেকে প্রকৃতির এক অংশ হিসেবে অনুভব করে।
শিশুদের চোখে মাছ ধরার দিন মানেই অ্যাডভেঞ্চার, যুবকদের কাছে এটি প্রতিযোগিতা, আর বয়স্কদের কাছে এটি স্মৃতির পুনর্জাগরণ। এমনকি যাদের পক্ষে মাছ ধরা সম্ভব নয়, তারাও আশেপাশে ঘোরাফেরা করে, আনন্দ ভাগ করে নেয়।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Daily task
Link
https://x.com/Riyadx2P/status/1924385399671308670?t=KpmUfWtMwB4XbGL033g6hQ&s=19
Screenshot