প্রকৃতির প্রতিশোধ

in আমার বাংলা ব্লগ23 hours ago

আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
শুক্রবার, ০৮ ই আগস্ট ২০২৫ ইং

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে প্রকৃতির প্রতিশোধ নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।


IMG_0497.jpeg

গ্রামের মাঠে একসময় সবুজের সমারোহ ছিল। সদ্য রোপণ করা ধানের চারা বাতাসে দুলে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকের মুখে ফুটেছিল প্রশান্তির হাসি। সোনালি ভবিষ্যতের আশায় দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন তারা। কিন্তু প্রকৃতির অনিশ্চয়তা সেই হাসি মুহূর্তেই মুছে দিল। আষাঢ়ের মেঘ যেন সমস্ত আকাশ ঢেকে টানা বৃষ্টি ঝরাতে লাগল, আর উজানের নদী ফুলে উঠে উপচে পড়ল গ্রামমাঠে। কয়েক দিনের মধ্যে মাঠ ভরে গেল কাদামিশ্রিত বৃষ্টির পানিতে। এখন যতদূর চোখ যায় শুধু জলরাশি যা দেখতে সুন্দর হলেও, তা কৃষকের কাছে এক ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের প্রতিচ্ছবি।

IMG_0496.jpeg

পানির গভীরে ধান গাছগুলো দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু তাদের সবুজ রং ম্লান হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও গাছগুলো পুরোপুরি পানির নিচে তলিয়ে আছে। শিকড়ে অক্সিজেন পৌঁছাতে না পেরে ধীরে ধীরে পচে যাচ্ছে চারাগুলো। কৃষক জানে, এই ক্ষতি পূরণ করা সহজ নয়। প্রতিটি চারা সে নিজ হাতে রোপণ করেছে, প্রতিটি জমিতে সে নিজের ঘাম মিশিয়েছে। তার কাছে এই ফসল শুধু খাদ্যের উৎস নয়, বরং সারা বছরের জীবিকা, সন্তানদের পড়াশোনার খরচ, পরিবারের চিকিৎসা, এমনকি সমাজে টিকে থাকার আশা।

IMG_0494.jpeg

এখন গ্রামজুড়ে আলোচনা শুধু ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে। কার কত একর জমি পানিতে গেছে, কার কত টাকা ঋণ হয়েছে, আর কতদিন এভাবে চলতে হবে সবাই দুশ্চিন্তায় ডুবে আছে। কেউ কেউ এখনো পানিতে নেমে গাছগুলো টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে, কিন্তু আশার আলো ক্ষীণ। পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে কাজ করা কঠিন, তার ওপর পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়ে গেছে।দূরে মাঠের মাঝখানে এক-দুটি টিনের ঘর এখনও পানির উপরে ভাসমান দেখায়, যেখানে কৃষকরা তাদের কৃষি সরঞ্জাম রেখেছিল। কিন্তু অধিকাংশ সরঞ্জামই ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে।

IMG_0494.jpeg

এমন অবস্থায় তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক ভয়ংকর বাস্তবতা আগামী মৌসুমের জন্য নতুন করে বিনিয়োগের সুযোগ কি তারা পাবে? ঋণের বোঝা কীভাবে শোধ করবে? তবুও কৃষক জানে, বেঁচে থাকার একটাই উপায় আশা ধরে রাখা। যতবারই বৃষ্টি তার স্বপ্ন ভাসিয়ে নিয়ে যাক না কেন, যতবারই মাঠ খালি হয়ে যাক, ততবারই সে আবার জমিতে নামবে। হয়তো পরের মৌসুমে আবার বীজ বপণ করবে, আবার সবুজে ভরিয়ে তুলবে এই পানিভেজা মাঠ। কারণ কৃষকের জীবনে শেষ কথা হলো হার মানা নয়, বরং বারবার নতুন করে শুরু করা।

IMG_0495.jpeg

এই অদম্য মনোবলই বাংলার কৃষিকে শতাব্দীর পর শতাব্দী বাঁচিয়ে রেখেছে, আর রাখবে যতদিন এই মাটি উর্বর থাকবে।

সবাইকে ধন্যবাদ।

ক্যামেরা পরিচিতি
DeviceiPhone 11
Camera11+11 MP
CountyBangladesh
LocationRangpur, Bangladesh

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZ6f4GKSwLn3BBFmPFifbbr21AhPTJ7XiTPJGbzxXNzpL3AeDnWebvp5DxFE241B8HGEVAqqCDY5m5Sn.png

Vote@bangla.witness as witness

54TLbcUcnRm3sWQK3HKkuAMedF1JSX7yKgEqYjnyTKPwrcNLMcZnLnFrW5PDaQKxbWWqwrRezSAe39S7RTiEk7NCzgzD1reVavwZGUMbjasjujy1CQqSedvtuVGKXod3vcdSqiXp2.png

Or

Set@rme as your proxy

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WEX4nZPQpSChVhr5YUqUeT6qhYr1L6PMHKqtRnepY2a8e1tqsDtWfr4V8KDGvJtydqvz4V68PMUyu9EWpez2.png


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

1728830339945~3.jpg

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।