পরিত্যক্ত শ্যামপুর সুগার মিল পরিদর্শন
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
বৃহস্পতিবার, ০৪ ই জুলাই ২০২৫ ইং
আজকের দিনটা একটি ঘোরাঘুরি করার দিন ছিল। উদ্দেশ্য ছিল ঘুরে দেখা এক পুরনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান শ্যামপুর সুগার মিল। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে রওনা দিয়েছিলাম দিনের শুরুতেই। আমরা সকল বন্ধুরা মিলে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছিলাম।প্রথম অবস্থায় আমাদের কোন নির্দিষ্ট গন্তব্য ছিল না। পরবর্তীতে আমরা শ্যামপুর সুগার মিল যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। কেননা শ্যামপুর সুগার মিল আমাদের এলাকার প্রাচীন তম একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান ।এক সময় গর্ব করে দাঁড়িয়ে ছিল শ্যামপুর সুগার মিল।শ্যামপুর এলাকায় ঢোকার পর থেকেই একটা পুরনো দিনের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। চারপাশে কিছুটা ধূলিধূসর, কিন্তু কোথাও কোথাও এখনো জীবনের স্পন্দন।
মিলটির কাছে পৌঁছে চোখের সামনে যে দৃশ্য উন্মোচিত হলো, তা এক ধরণের নিঃশব্দ আহাজারির মতো।শ্যামপুর সুগার মিল বর্তমানে সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত। ফটকের সামনে তালা ঝুলছে। নিরাপত্তার জন্য তেমন কোন প্রহরী চোখে পড়েনি, তবে দু একজন ভিতরে কি জানি করছিল। আমরা ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলেও পারিনি সরাসরি ভেতরে প্রবেশ নিষেধ। তবে ফটকের সামনের ফাঁক দিয়ে চেষ্টা করেছিলাম কিছুটা ভেতরের দৃশ্য দেখার।ভেতরটা যেন এক বিশাল। চারদিকে বড় বড় ঘাস আর ঝোপঝাড়ে ঢেকে গেছে মিলের জমি। বোঝাই যাচ্ছিল, বহুদিন ধরে এখানে কোন ব্যবহার নেই।
গুদামঘর, চিমনি, কারখানার মূল ভবন সবকিছুই এখন নিস্তব্ধ। আগাছার মধ্যে হারিয়ে গেছে কোনো এক সময়ের গর্জন করা যন্ত্রপাতি।টস্থানীয়দের কাছ থেকে জেনেছিলাম, এক সময় এই মিল ছিল আশেপাশের এলাকার অন্যতম কর্মসংস্থানের জায়গা। বহু শ্রমিক এখানে কাজ করতেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মিলের ভেতর ছিল কর্মচাঞ্চল্য, ব্যস্ততা, গাড়ি ঘোড়া, ট্রাকের যাতায়াত। মিলের সাইরেন বাজলেই পুরো পাড়া জানত, আবার একটি কাজের দিন শুরু হয়েছে।কিন্তু এখন? এখন শুধু পাখিদের ডাক আর বাতাসে দোল খাওয়া ঘাসের ফিসফাস। যেন প্রকৃতি নিজেই মিলটিকে নিজের করে নিয়েছে।
এই মিল কেন বন্ধ হয়ে গেল তা নিয়ে বিভিন্ন মত শোনা যায়। কেউ বলে সরকারি অব্যবস্থাপনা, কেউ বলে লোকসান, কেউ বা বলে রাজনৈতিক অবহেলা। তবে কারণ যাই হোক, বাস্তবতা একটাই এই বিশাল মিল এখন শুধুই এক ফসিল, ইতিহাসের অংশ। এখানে যখন এলাকার অনেক শ্রমিক কাজ করতেন, তখন এলাকার মানুষের জীবন যাপন ছিল এক অন্যরকম। কিন্তু এটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সব কিছু একদম পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে।দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম, কবে যেন আবার এমন একদিন আসবে যখন মিলের চিমনি থেকে ধোঁয়া উঠবে, ট্রাকে ভরা চিনির বস্তা বের হবে, আর শ্রমিকদের হাঁকডাক শোনা যাবে।
আমাদের ঘোরাঘুরি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। সূর্য মাথার উপরে উঠে আসার আগেই ফিরে রওনা দিলাম। তবে শ্যামপুর সুগার মিল আমাদের মনে রেখে গেল এক ধরনের ভার একটি হারানো সময়ের নিরব সাক্ষ্য। আশা করছি ভবিষ্যতে এই প্রজেক্ট টি সচল হবে, তখন আবার এই মিল টি আগের কার রুপ ফিরে পাবে।এটি শুধুমাত্র একটি পরিত্যক্ত স্থাপনাই নয়, এটি একটি অধ্যায় যেখানে মানুষ ছিল, স্বপ্ন ছিল, জীবিকা ছিল। এখন যা আছে, তা শুধুই নীরবতা, ধূসরতা আর অপূর্ণতায় মোড়ানো এক অতীত। হয়তো খুবই তাড়াতাড়ি ভালো কোন নিউজ আসবে এই সুগার মিল কে ঘিরে।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Daily task
https://x.com/Riyadx2P/status/1940773580482269396?t=z7xPnwr6vTdCO_FFcubiZw&s=19
https://x.com/Riyadx2P/status/1940773787886301608?t=z7xPnwr6vTdCO_FFcubiZw&s=19
https://x.com/Riyadx2P/status/1940774063032643772?t=z7xPnwr6vTdCO_FFcubiZw&s=19
Screenshot
অনেক কারণে এরকম শিল্প কারখানাগুলো অকেজো হয়ে যায় কিংবা পরিত্যক্ত হয়ে যায়। শ্যামপুর সুগার মিল পরিদর্শন করেছেন দেখে ভালো লাগলো। ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে।
আপনি সবসময়ই খুবই সুন্দর কিছু জায়গায় গিয়ে থাকেন। সেখানকার সৌন্দর্য এবং সবকিছু আমাদের মাঝে শেয়ার করার চেষ্টা করে থাকেন৷ আজকেও আপনি এই সুগার মিলে গিয়েছেন৷ এখানে মুহূর্ত উপভোগ করার বিষয়টি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে অনেক বেশি ভালো লাগছে৷ ফটোগ্রাফি গুলো একেবারে চমৎকার ভাবে শেয়ার করেছেন৷ ধন্যবাদ আপনাকে৷