ভ্রমণ পোস্ট: হাজি মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি, HSTU) ভ্রমণ
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
শনিবার, ১৭ ই মে ২০২৫ ইং
দিনটি ছিল একেবারেই ঝকঝকে এবং রৌদ্রোজ্জ্বল। খুব সকালেই রওনা হয়েছিলাম দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে। পথিমধ্যে সবুজে মোড়ানো প্রকৃতি আর ছোট ছোট গ্রাম দেখে মনটা ভরে উঠেছিল। ট্রেন থেকে নামতেই ঠান্ডা হাওয়া এসে গায়ে লাগলো, যেন স্বাগত জানাচ্ছে। রিকশায় চেপে পৌছে গেলাম হাজি মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে। বিশাল সেই প্রবেশদ্বারটি দেখেই চমকে গেলাম। ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়লো সাজানো গাছপালা আর খোলা প্রাঙ্গণ। দূরে দেখা যাচ্ছিল দৃষ্টিনন্দন একাডেমিক ভবনগুলো। সবকিছু এত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন যে মন জুড়িয়ে গেল। প্রতিটি শিক্ষার্থী তাদের নিজ নিজ কাজ গুলো করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটি একদম সাজানো গোছানো। প্রতিটি বিল্ডিং দেখতে খুবই সুন্দর ও উজ্জ্বল। লাইব্রেরি ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে একধরনের গর্ব অনুভব করছিলাম। এতো বড় ক্যাম্পাস জুড়ে ছড়িয়ে আছে নানান বিভাগ ও অনুষদ। আমার বন্ধু বললেন এখানে কৃষি, প্রকৌশল, মৎস্য, ব্যবসা প্রশাসনসহ বহু বিভাগ রয়েছে। প্রতিটি বিভাগে নিজস্ব ল্যাব, আধুনিক যন্ত্রপাতি আর অভিজ্ঞ শিক্ষকবৃন্দ আছেন। ঘুরতে ঘুরতে চলে গেলাম প্রশাসনিক ভবনের সামনে। সামনে জাতীয় পতাকা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পতাকা উড়ছিলো। ক্যাম্পাসজুড়ে ছিল এক ধরনের নিরব পরিবেশ। শিক্ষার্থীরা আমাদের দেখে হাসিমুখে কথা বলছিল। সেখানে আমার বেশ কয়েকজন পরিচিত বন্ধু ছিল।
আমরা পরবর্তী গন্তব্য হিসেবে গেলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে। বিশাল খেলার মাঠ টি দেখতে অনেক বেশি সুন্দর। কয়েকজন ছাত্র ক্রিকেট খেলছিল, আবার কেউ ফুটবল। মাঠের পাশে ছিল একটি বড় পুকুর, যেখানে অনেকেই গোসল করছিল। পাশেই ছিল এক মনোরম বোটানিক্যাল গার্ডেন। নানা রকম গাছগাছালির মাঝে হাঁটতে হাঁটতে সময় যেন কোথা দিয়ে চলে গেল টের পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ এতটাই মনোমুগ্ধকর যে মন চাচ্ছিল আরও কিছুক্ষণ বসে থাকি। গাছের ছায়ায় বসে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম। এই বিশুদ্ধ বাতাস ও শান্ত পরিবেশ শহরের কোলাহল থেকে অনেক দূরে।
বিকেলের দিকে আমরা গেলাম ছাত্রাবাস এলাকায়। প্রত্যেকটা হল ছিল পরিচ্ছন্ন এবং সুসজ্জিত। ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম তারা বেশ গর্বিত এই প্রতিষ্ঠানের অংশ হতে পেরে। হলে বসবাসের পাশাপাশি পড়ালেখার জন্য ছিল নিরিবিলি পরিবেশ ও যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা। এরপর গিয়েছিলাম ছাত্রী হলের পাশের চা দোকানে। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে ক্যাম্পাসের জীবনের নানা গল্প শুনছিলাম স্থানীয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। তারা বলছিল কিভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয় তাদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। এমন আন্তরিক আর বন্ধুবান্ধব পরিবেশ খুব কম জায়গায় দেখা যায়। শিক্ষকদের স্নেহ আর পাঠদানের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশংসা করছিলো তারা।সব মিলিয়ে আমি বেশ দারুন একটি সময় উপভোগ করেছিলাম।
শেষে আমরা ক্যাফেটেরিয়ায় গিয়ে খানিকটা সময় কাটালাম। সেখানে ছিল নানান ধরনের খাবার, সাশ্রয়ী ও সুস্বাদু। শিক্ষার্থীরা গানে, আড্ডায় মেতে ছিল, যেন এখানে প্রতিটি দিনই উৎসব। চায়ের কাপ হাতে বসে দেখছিলাম ছায়া ঘেরা ক্যাম্পাসের রূপ। মনে হচ্ছিল, এই জায়গা শুধু জ্ঞানের কেন্দ্র নয়, বরং এক টুকরো ভালোবাসা ও শান্তির আশ্রয়। ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে মন চাইছিল না, তবুও সময় হয়ে গিয়েছিল। ফিরে আসার পথে মনে হচ্ছিল যেন কিছু রেখে এলাম পেছনে। হয়তো ফেলে এলাম কিছু স্মৃতি, কিছু অনুভব।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Daily task
Link
https://x.com/Riyadx2P/status/1923726678347415771?t=DbRg4wrqhhFJAUGQqbuG2A&s=19
https://x.com/Riyadx2P/status/1923727084486033818?t=DbRg4wrqhhFJAUGQqbuG2A&s=19
Screenshot
দারুণ একটা ব্লগ শেয়ার করেছেন।হাবিপ্রবির প্রতিটি কোণ আপনার চোখে যেমন সৌন্দর্য ছড়িয়েছে, আপনি ঠিক তেমনভাবেই লেখার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। প্রকৃতি, স্থাপনা, শিক্ষার্থী জীবন এবং ক্যাম্পাসের পরিবেশ ,সবকিছুই এত সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন । যে মনে হলো আমিও যেন একসাথে ঘুরে এলাম। ছবিগুলোও ছিল অসাধারণ।
হাজি মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সমান করেছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। যদিও ভিতরে কখনো যাওয়া হয়নি। বাইরে থেকে দেখেছি।