ট্রেন ভ্রমন: শ্যামপুর থেকে দিনাজপুর ট্রেন ভ্রমন
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
রবিবার, ১৭ ই আগস্ট ২০২৫ ইং
শ্যামপুর থেকে দিনাজপুরের ট্রেন ভ্রমণ যেন ছিল এক সিনেমাটিক অভিজ্ঞতা। ভোরের শ্যামপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনটির দিকে তাকালে মনে হচ্ছিল একটি নতুন যাত্রা। ট্রেন ছাড়ার আগেই আকাশে মেঘ জমে গিয়েছিল, বাতাসে ছিল বৃষ্টির আভাস। গন্তব্য দিনাজপুর হলেও আমার আসল আনন্দ ছিল এই ভ্রমণের প্রতিটি মুহূর্তকে অনুভব করা।ট্রেন ছাড়ার সাথে সাথেই আকাশ ভেঙে নেমে এলো মুষলধারে বৃষ্টি। প্রথমে হালকা টুপটাপ, তারপর ধীরে ধীরে সেই শব্দ এতটাই বেড়ে গেল যে মনে হচ্ছিল ট্রেনের গর্জন আর বৃষ্টির ঝরঝর শব্দ মিলে একসাথে নতুন কোনো ছন্দ তৈরি করছে।
জানালার কাঁচে বৃষ্টির ফোঁটা এসে ভিজে যাচ্ছিল, কাঁচ ঝাপসা হয়ে বাইরের দৃশ্যকে করে তুলছিল আরও রহস্যময়। কাঁচ মুছলেও কিছুক্ষণ পর আবার ভিজে যেত, আর আমি যেন এক স্বপ্নরাজ্যের ভেতর দিয়ে যাত্রা করছি।বৃষ্টির ভেতর দিয়ে গ্রামের দৃশ্যগুলো ছিল অবর্ণনীয়। ধানের মাঠ পানিতে ভিজে চকচক করছিল, চারদিকে ছোট খাল-বিলগুলো ভরে উঠেছিল বৃষ্টির জলে। মাঝে মাঝে দূরে দেখা যাচ্ছিল শিশুদের ভিজে ভিজে মাঠে খেলতে। মনে হচ্ছিল প্রকৃতি যেন নিজের আনন্দ সবার সাথে ভাগ করে নিচ্ছে। ট্রেন যখন সেতুর উপর দিয়ে যাচ্ছিল, তখন নিচের নদী ফুলে ফেঁপে গর্জন করছিল, আর তার উপর পড়তে থাকা বৃষ্টির ফোঁটা সেই দৃশ্যকে করে তুলছিল আরও নাটকীয়।
ট্রেনের ভেতরের পরিবেশও আলাদা রকম আনন্দে ভরা ছিল। পাশে বসা যাত্রীরা কেউ চা খাচ্ছিল, কেউ গল্পে মগ্ন ছিল। বাচ্চারা জানালা দিয়ে হাত বের করে বৃষ্টির ফোঁটা ধরার চেষ্টা করছিল। এক কাপ গরম চা হাতে নিয়ে বৃষ্টিভেজা দৃশ্য দেখা সত্যিই এক অনন্য সুখের মুহূর্ত।স্টেশনগুলোতে থামার সময় ভিজে কাপড় গায়ে যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে নামছিল বা উঠছিল। বৃষ্টিতে তাদের ক্লান্ত মুখগুলোতেও একরকম স্বস্তি ছিল, যেন সবাই প্রকৃতির এই খেলাকে মেনে নিয়েছে। আমি দেখছিলাম, ট্রেনের প্রতিটি থামায় বৃষ্টি যেন আরও নতুনভাবে জায়গাটিকে রাঙিয়ে তুলছে।
অবশেষে দিনাজপুরের কাছাকাছি আসতেই বৃষ্টি কিছুটা থেমে গেল। আকাশে তখন মেঘের ফাঁক দিয়ে রোদ উঁকি দিচ্ছিল, মাটিতে জমে থাকা পানিতে সেই রোদ পড়ায় চারপাশ যেন সোনালি আভায় ভরে উঠল। ট্রেন যখন দিনাজপুর স্টেশনে ঢুকল, তখন মনে হচ্ছিল এই ভ্রমণ কেবলমাত্র এক গন্তব্যে পৌঁছানো নয়, বরং প্রকৃতির সাথে মনের গভীর এক মেলবন্ধন।শ্যামপুর থেকে দিনাজপুরের এই ভ্রমণ আমাকে নতুন করে অনুভব করিয়েছে যে, ট্রেনে যাত্রা কেবল চলাচল নয় এটি প্রকৃতিকে অন্যভাবে দেখার একটি সেরা সুযোগ। বিশেষ করে বৃষ্টিভেজা দিনে সেই যাত্রা হয়ে ওঠে আরও কবিতার মতো, আরও স্মৃতিময়।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
শ্যামপুর থেকে দিনাজপুর ট্রেন ভ্রমন করেছেন দেখে খুবই ভালো লেগেছে ভাই। ট্রেন ভ্রমণ করা হয়নি অনেকদিন। চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাই।
ট্রেন ভ্রমণ করতে আমার অনেক ভালো লাগে এবং আমি যখন দূরে কোথাও গিয়ে থাকি তখন আমি ট্রেন ভ্রমণের চেষ্টা করে থাকি৷ আজকে আপনার কাছ থেকে এরকম একটি ট্রেন ভ্রমণের পোস্ট দেখে অনেক বেশি ভালো লাগলো ৷ খুব সুন্দর ভাবে আপনি আজকে আমাদের মাঝে এই অসাধারণ একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এই চমৎকার পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷