অদ্ভুত বিচার, বিদঘুটে বিচারক - বাস্তব ঘটনা
আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসি, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি সকলেই ভাল আছেন। আজ আপনাদের সাথে একটি স্মৃতি কথা শেয়ার করব।

ঘটনাটা প্রায় এক যুগ আগের। তখন আমি কলেজে পড়তাম। কোন এক ছুটিতে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম। রাত তখন দশটা, চায়ের দোকানে বসে আছি। দোকানদার বলল, চলো ভাই আমরা এক জায়গা থেকে ঘুরে আসি।
দোকানদার আমার প্রতিবেশী। আমি যেতে রাজি হলাম। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর তার আরো দুজন আত্মীয় এসেছে। আমরা সকলেই পাশের গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। সেই গ্রামে দোকানদারের বোনকে বিয়ে দিয়েছে। আমি ঘটনার কিছুই জানিনা। তবে বুঝতে পারছিলাম কোন একটা সমস্যা হয়েছে।
সেখানে গিয়ে জানতে পারলাম তার বোনকে ঐদিন বিকেলে বোনের স্বামী মেরেছিল। এ নিয়েই বিচার। বিচার বা কেন মেরেছিল সে কথা বলার আগে আমি বর্তমানে তাদের, অর্থাৎ স্বামী এবং স্ত্রী সম্পর্কে বলি। স্বামী ভদ্রলোক আসলেই ভদ্র। কোন এক কারণে সেদিন হয়তো তিনি কিছুটা রেগে ছিলেন এবং ভুলবশতই তিনি তার স্ত্রীর গায়ে হাত তুলেছেন এবং এজন্য পরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। স্ত্রী, অর্থাৎ সম্পর্কে যে আমার গ্রামের বোন হয়, উনি নিজেও যথেষ্ট ভালো। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো রকমের অভিযোগ তুলেনি। না চরিত্র নিয়ে, না তার আচার-আচরণ নিয়ে। যাই হোক সেদিনের ঘটনায় ফিরে আসি।
বিচার চলছিল, কেন এবং কিভাবে মেরেছিল সে বিষয়ে কথা হচ্ছিল। তখন জানতে পারলাম, ভাই দুপুর বেলা তার দোকান থেকে এসেছে। পকেটে সামান্য কিছু টাকা ছিল এবং সব সময়ের মতো আপু সেই টাকাটি নিজের কাছে গচ্ছিত রাখে। এরমধ্যে আসরের সময় হয়ে যায় এবং আপু আসরের নামাজ পড়ে জায়নামাজের উপরেই বসে ছিল। ভাই তখন তার কাছে টাকা চায়। তখন আপু টাকাটি দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং এর ফলে ভাই রাগ করে তার গায়ে হাত তুলে। বিচারের সময় অবশ্য ভাই এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে এবং প্রকাশ্যে ক্ষমা চায়।
কিন্তু আমার আপত্তির জায়গাটি ছিল, বিচারকদের কথা শুনে। যেখানে বাংলাদেশে নারী নির্যাতন অর্থাৎ নিজের স্ত্রী অথবা যেকোনো নারীর গায়ে হাত তোলা দণ্ডনীয় অপরাধ; তারা এই বিষয়টির তোয়াক্কা না করেই স্বামীর অপরাধ হিসেবে ধরল,
তুমি মারছো, তা ঠিক আছে। কিন্তু তাই বইলে নামাজের বিছানায় তো মারা ঠিক না। তোমার খুবই অপরাধ হইছে। নামাজের বিছানায় মারা মোটেও উচিৎ হয়নি।
তখন আমার বয়স খুব কম ছিল। তাছাড়া আমি বাদে আর সবাই দেখলাম বিষয়টির সাথে সম্মতি প্রকাশ করেছে। আমি খুবই আশ্চর্য, হতাশ এবং ব্যথাতুর হলাম। অর্থাৎ তিনি তার স্ত্রীর গায়ে হাত তুলেছেন, তাতে কারো কোন সমস্যা নেই। কিন্তু নামাজের বিছানায় হাত তুলেছেন, এটাতেই সবার সমস্যা।
দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, আমাদের দেশে এখনো নিজ স্ত্রী, কন্যা, এদের গায়ে হাত তোলাকে স্বাভাবিক এবং জায়েজ হিসেবে দেখা হয়। যা খুবই দুঃখজনক একটি ঘটনা। নারীদের যথাযত মর্যাদা, প্রাপ্য সম্মান এবং সমাজে তাদের সমান অবদান রাখার বিষয়ে আমাদেরকে আরো সচেতন হতে হবে এবং এসব বিষয় যথেষ্ট সচেষ্ট থাকতে হবে।
শুভেচ্ছা @ আমি একজন খ্রিস্টান, এবং আজকের মানুষের আচরণ দেখে আমি অবাক হই না। আমার পবিত্র গ্রন্থের ভবিষ্যদ্বাণীগুলি বর্ণনা করে যে কীভাবে মানুষ নিজেকে ভালোবাসবে এবং ঈশ্বরকে অসম্মান করবে।
তাই, এটি এমন কিছু যা অবশ্যই ঘটবে এবং তাঁর রাজ্য প্রতিষ্ঠার আগে ঈশ্বরের বিচারের ভিত্তি প্রদান করবে।
আমি কুরআনের কিছু অংশ অধ্যয়ন করেছি যা মানবজাতির মন্দ কাজ করার প্রবণতাকেও নির্দেশ করে। যদিও পদ্ধতিটি বাইবেলের থেকে আলাদা।
সুখী এবং দীর্ঘ জীবন।
You are right. This is what is happening nowadays. Pathetic, but true..