বাগানবিলাস ফুলের বেশ কিছু এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি নিয়ে একটি অ্যালবাম ।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ। আজকে আমি আপনাদের সাথে বাগানবিলাস ফুলের বেশ কিছু এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

বাংলাদেশের ঋতুবৈচিত্র্য আমাদের প্রকৃতিকে সাজিয়ে তোলে নানা রঙে, নানা রূপে। কখনও ঝরঝরে পাতা ঝরে পড়ে গাছপালাকে করে নিরাবরণ, আবার কখনও নবপল্লবের ছোঁয়ায় সবুজে ঢেকে যায় চারদিক। এই পরিবর্তনের মাঝেই কিছু কিছু ফুল আছে যারা প্রকৃতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে, প্রায় সারা বছরই তাদের সৌন্দর্য ছড়িয়ে যেতে থাকে। বাগানবিলাস তেমনই একটি ফুল যাকে অনেকেই “সব ঋতুর রানী” বলেও ডাকে।

বাগানবিলাস ফুলের সৌন্দর্য প্রথমেই নজর কাড়ে তার উজ্জ্বল রঙের কারণে। গোলাপি, বেগুনি, লাল, কমলা, হলুদ কত রঙেই না দেখা যায় । কেউ কেউ ভাবেন এটি একেক রঙের একেক জাতের ফুল, কিন্তু বাস্তবে বিষয়টা একটু আলাদা। বাগান বিলাসের আসল ফুলটি খুবই ছোট, প্রায় চোখে পড়ে না। সেটি সাধারণত সাদাটে রঙের হয়, আর তার চারপাশে যে উজ্জ্বল রঙিন অংশগুলো থাকে, তা আসলে ফুল নয় ,তা হলো ‘ব্র্যাক্ট’ বা পাতার বিশেষ রূপ। এরা ফুলকে ঘিরে থাকে এবং তাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।

এই গাছের অন্যতম গুণ হলো ,এটি খুব সহজে বেড়ে ওঠে এবং টিকে থাকতে পারে অল্প যত্নে। কোনো জমিতে খুব বেশি উর্বরতা লাগে না। একটু রোদ পেলেই বাগানবিলাস ডালপালা মেলে ধরে। জলসেচন খুব নিয়মিত ভাবে না করলেও চলে, বরং একটু খরা প্রবণ জায়গাতেই এটি বেশি ভালো থাকে। এটি মূলত গুল্ম জাতীয় গাছ, তবে নিয়মিত ছাঁটাই ও যত্ন নিলে একে লতা বা ছোট গাছের আকৃতিতে গড়ে তোলা সম্ভব। বাড়ির ছাদে টবে লাগানো যায়, আবার মাটিতেও চমৎকার ভাবে বেড়ে ওঠে। বিশেষ করে গেঁটের এক কর্নারে দেয়াল ঘেঁষে দিলে, খুব দ্রুত সেই দেয়াল রঙিন হয়ে যায় ফুলে ফুলে।

বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই বাগানবিলাস দেখা যায়। বছরের সব মাসে কিছু না কিছু গাছে ফুল ফুটে থাকে। তবে মার্চ থেকে অক্টোবর এই সময়টায় সবচেয়ে বেশি ফুল ফোটে। গ্রীষ্ম ও শরৎকালে এর ফুল ফোটা যেন উৎসবের মতো। বর্ষাকালেও মাঝে মাঝে ফুল দেখা যায়, যদিও অতিরিক্ত পানি জমলে কিছুদিনের জন্য ফুল ফোটা কমে যায়। তবে বর্ষার শেষে যখন নতুন করে রোদ পড়ে, তখন আবার নতুন ডালপালা গজায় এবং ফুলের বাহার বাড়ে।বাগানবিলাস শুধু ফুল নয়, এটি যেন মনকেও আনন্দে ভরিয়ে তোলে। একটি বাড়ির সামনের দেয়াল জুড়ে যদি বাগানবিলাস ফুটে থাকে, তবে সেই দৃশ্য শুধু চোখের নয়, মনকেও প্রশান্ত করে। এ ফুলে মৌমাছি বা প্রজাপতি খুব একটা আসে না, কারণ এর মূল ফুলটি খুব ছোট এবং মধু খুব কম থাকে। তবে রঙের জন্য পাখিরাও কখনো কখনো কাছে আসে, বসে থাকে পাতায় ও ডালে।

গ্রীষ্মের দুপুরে যখন চারপাশের প্রকৃতি ক্লান্তির ভারে নুয়ে পড়ে, হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টি যেন সব কিছু নতুন করে বাঁচিয়ে তোলে। ছাদের কার্নিশ থেকে টুপটাপ ঝরে পড়া জলে, বাড়ির দেয়াল বেয়ে নামা অঝোর ধারা সব কিছুর মাঝে কোথা থেকে যেন হাসিমুখে উঁকি দেয় বাগানবিলাস। একেকটি ফুল, একেকটি রঙ যেন একেকটি স্বপ্ন হয়ে ঝরে পড়ছে আমার এই ক্যামেরার লেন্সে।এই ছবিগুলো ঠিক সাজানো নয়, ঠিক গুছিয়ে তোলা নয় ,এই ছবিগুলো এলোমেলো। তবে সেই এলোমেলোতাই যেন প্রকৃত সৌন্দর্য প্রকাশ পেয়েছে। বৃষ্টির জলে ভেজা পাতার ওপর ছড়িয়ে থাকা ফুলের পাপড়ি, আমার হাতে ধরা কয়েকটি তাজা শাখা, কখনও মাটিতে পড়ে থাকা ফুলেরা যেন বলে ওঠে "আমাদের রঙ মুছে যায়নি, বরং এই ভেজা অবস্থাতেই আমরা আরও বেশি জীবন্ত।"🙂

বাগানবিলাসের আরেকটি দিক হলো এর প্রতীকী সৌন্দর্য। অনেকেই বলেন, এটি শক্তির প্রতীক। রোদ, খরা, অযত্ন কিছুই যেন তাকে দমিয়ে রাখতে পারে না। তাই যেন এই ফুল জীবনের প্রতিচ্ছবি কোনো বাধাই যদি রঙ ছড়াতে না পারে, তবে সে জীবন নিঃসন্দেহে বাগান বিলাসের মতোই।বাংলার পথঘাট, ছাদবাগান কিংবা গ্রামের বাড়ির বাঁধানো উঠান সব জায়গাতেই এক ধরনের নিরব সঙ্গী হয়ে ওঠে এই ফুল। বাগানবিলাস শুধু একটি গাছ নয়, এটি আমাদের প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে থাকা এক চিরসবুজ রঙিন ভালোবাসা।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।