বৃষ্টির দিনের গল্প।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে বৃষ্টির দিনের গল্প শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

এখন আশ্বিনের শেষ ভাগ, কার্তিকের শুরু।শরৎকাল থেকে ধীরে ধীরে হেমন্তে প্রবেশ করছে। আকাশ আজকাল যেন একটু ভারী, সকাল থেকেই অন্ধকার মেঘ জমে আছে। সূর্যের আলো যেন কোথাও হারিয়ে গেছে। হঠাৎ করেই ঝমঝম করে নেমে আসে বৃষ্টি। এই আশ্বিন-কার্তিকের বৃষ্টি আষাঢ়-শ্রাবণের মতো প্রচণ্ড নয়, তবুও তার ভেজা ছোঁয়া গ্রামবাংলাকে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলে। কাঁচা রাস্তা ভিজে কাদামাখা হয়ে গেছে, চারপাশের মাঠ আর খালবিল ভেজা মাটির মিষ্টি ঘ্রাণে ভরে উঠেছে, আর প্রকৃতির নিঃশব্দ সঙ্গীত শোনা যাচ্ছে টুপটাপ বৃষ্টির ফোঁটায়।

বর্তমান ধানের ক্ষেত ও এখন সোনালী রঙে ভরে উঠছে। কৃষকের চোখে আনন্দের সঙ্গে চিন্তার রেখা দেখা যায়। এই বৃষ্টি ফসলের জন্য আশীর্বাদ হবে, নাকি ক্ষতির কারণ, তা জানার অপেক্ষা নেই। জমি ভিজে উঠেছে, ধানের শীষে ফোঁটা ফোঁটা জল জমে আছে, আর বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে ভেজা ধানের সুবাস। কৃষক মনে মনে প্রার্থনা করে, “হে প্রকৃতি, আমাদের ফসলকে দাও আশীর্বাদ, অভিশাপ নয়।”

গ্রামের জীবনে এই বৃষ্টি ভিন্ন রঙ নিয়ে আসে। ছোট্ট বাচ্চারা কাদামাখা মাঠে লাফিয়ে খেলে, খালের জলে ভিজে আনন্দে দৌড়ে বেড়ায়। তাদের হাসি আর খেলার শব্দে মনে হয় বৃষ্টিও তাদের সঙ্গে মিশে খুশিতে ভিজে গেছে। ঘরের ভেতরে গৃহিণীরা চুলার পাশে বসে ধোঁয়া ওঠা খিচুড়ি রান্না করে, পাশে থাকে কুমড়ো ভাজা বা ইলিশ মাছ। বাইরে বৃষ্টির টুপটাপ শব্দ আর ঘরের ভেতরের হাঁড়ি-পাতিলের টুংটাং মিলেমিশে এক অদ্ভুত সুর তৈরি করে।মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে এই বৃষ্টি কখনো আনন্দ, কখনো বিষণ্ণতা নিয়ে আসে। কেউ বারান্দায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টির শব্দে পুরনো স্মৃতিতে ডুবে থাকে, কেউ এক কাপ চায়ের ধোঁয়ায় খুঁজে পায় শান্তির মুহূর্ত। ব্যস্ততার ভেতর এই বৃষ্টি মানুষকে থামিয়ে দেয়, যেন দৈনন্দিন দৌড়ঝাঁপের জীবনে কয়েক মুহূর্তের প্রশান্তি এনে দিয়েছে।

প্রকৃতির রূপ এই সময়ে আরও নির্মল হয়ে ওঠে। কাশফুলের ফাঁকে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি মুক্তোর মতো ঝলমল করে, বাঁশঝাড় থেকে পড়া জল সঙ্গীত তৈরি করে, পুকুরে হাঁসেরা নিশ্চিন্তে সাঁতার কাটে। ভেজা মাটির ঘ্রাণে মানুষের মন ভরে যায় এক অদ্ভুত প্রশান্তিতে।দিন শেষে যখন বৃষ্টি থেমে আসে, সূর্যাস্তের রঙে আকাশ লালচে হয়ে ওঠে। কৃষক ফসলের দিকে তাকিয়ে আশার আলো দেখে, বাচ্চারা ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফেরে, আর প্রকৃতি রেখে যায় তার অমলিন সৌন্দর্য। কার্তিকের এই বৃষ্টিদিন গ্রামবাংলার জীবনে কেবল প্রকৃতির খেলা নয়, মানুষের ব্যস্ততা, আশা-আকাঙ্ক্ষা, দুঃখ আর আনন্দের এক জীবন্ত মিলন।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।