ফটোগ্রাফি পোস্ট// পাঁচটি এলোমেলো ফুলের ফটোগ্ৰাফি।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে পাঁচটি ফুলের ফোটোগ্রাফি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

প্রকৃতি সবসময়ই তার নিজস্ব রঙ, ঘ্রাণ আর বৈচিত্র্যে মানুষকে মোহিত করে রাখে। বিশেষ করে ফুল, যা শুধু সৌন্দর্য নয়, প্রাণ বন্ততার‌ প্রতীক। একেকটি ফুল যেন একেকটি আলাদা রূপকথা।কারও স্নিগ্ধতা, কারও দীপ্তি, আবার কারও রঙিন উৎসব আমাদের মনে নতুন আলো জ্বালিয়ে দেয়। ফুল শুধু চোখকে শান্তি দেয় না, মনকেও প্রশান্ত করে। কখনও এনে দেয় ভোরের সতেজতা, কখনও আবার সন্ধ্যার ক্লান্তি মুছে দেয়। তাই ফুলের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক চিরন্তন আনন্দে, দুঃখে, উৎসবে কিংবা ধর্মীয় আচার–অনুষ্ঠানে ফুল এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।প্রতিটি ফুলের আছে ভিন্ন ভিন্ন নাম, ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় এবং ভিন্ন সৌন্দর্যের প্রকাশ।আজকের এই লেখায় পাঁচটি ভিন্ন ফুলের সৌন্দর্য, বৈশিষ্ট্য আর প্রকৃতির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করবো। প্রতিটি ফুলের আলাদা রঙ, আকার ও গড়ন শুধু প্রকৃতিকে সমৃদ্ধ করে না, আমাদের মনো জগতিক সৌন্দর্য বোধকেও বাড়িয়ে তোলে।

প্রথম ফটোগ্ৰাফি

প্রথমেই আসি টগর ফুলের কথায়। একে অনেকে কাঠমল্লিকা, কাঠকরবী, কাঠমালতী, চাদনী কিংবা অনন্ত সাগর নামেও চেনে। ছোট ছোট সাদা পাপড়ি, যেন পাঁচভাগের ঘূর্ণি ।কচি সবুজ পাতার মধ্যে যখন ফুটে ওঠে, তখন মনে হয় সরলতার মধ্যে লুকিয়ে আছে পবিত্রতার পরশ। টগরের সাদাটে সৌন্দর্য শুধু চোখকে শান্তি দেয় না, বরং মনের গভীরেও এনে দেয় প্রশান্তির ছোঁয়া। সারাবছরই ফুল ফোটায় বলে এই গাছ বাগানকে সবসময় স্নিগ্ধ রাখে। যদিও এর রসে সামান্য বিষাক্ত উপাদান থাকে, তাই সতর্ক থাকতে হয়, তবু প্রকৃতির এই সাদা হাসিই আমাদের গ্রামীণ আঙিনাকে করে তোলে নিরিবিলি শান্তির আশ্রয়।

দ্বিতীয় ফটোগ্ৰাফি

দ্বিতীয় ফুলটি হলো সোনালী ট্রাম্পেট, যাকে আমরা হলুদ আল্লামান্ডা নামেও চিনি। বড় বড় হলুদ ট্রাম্পেট আকৃতির ফুলগুলো যেন সূর্যের আলোকে বন্দি করে রেখেছে। গাছটিতে একবার ফুল ফোটার পর পুরো চারপাশই যেন রঙিন হয়ে ওঠে। দূর থেকেই চোখে পড়ে এর দীপ্তি ময় রূপ, আর বাগানের প্রতিটি কোণ যেন ভরে ওঠে উজ্জ্বলতায়। এই গাছ দ্রুত বাড়ে, ডালপালা ছড়িয়ে চারদিক কে সবুজ-হলুদের মিশেলে সাজিয়ে তোলে। গ্রীষ্মের দুপুর কিংবা বর্ষার ভিজে সন্ধ্যা যে সময়ই হোক, সোনালী ট্রাম্পেটের রঙে প্রাণ ফিরে পায় প্রকৃতি।

তৃতীয় ফটোগ্ৰাফি

তৃতীয় ফটোগ্ৰাফি হলো ক্রাইসোথেমিস পালচেলা, যাকে অনেকেই সানসেট বেল বা কপার লিফ বলে থাকেন। এর পাতাগুলো মোটা, খানিকটা মখমলের মতো আর শিরাগুলো গভীর সবুজের মধ্যে আলাদা করে ফুটে ওঠে। ফুলগুলো গুচ্ছাকারে ছোট ছোট, তবে রঙের মেলায় ভরপুর কমলা, লালচে আর হলুদের দারুণ মিশ্রণ। দেখে মনে হয় যেন সূর্যাস্তের শেষ আলো পাতার কোণে জমে আছে। এটি সাধারণত ছায়া ও আর্দ্র জায়গায় ভালো হয়, তাই বাগানের নিরিবিলি কোণে রাখলেই হয়ে ওঠে বিশেষ আকর্ষণ। ক্ষুদ্র পোকামাকড় ও প্রজাপতি আকৃষ্ট করে বলে জীববৈচিত্র্য বাড়াতেও এর অবদান আছে।

চতুর্থ ফটোগ্ৰাফি

চতুর্থ ফুল আবার টগর। তবে এটি আলাদা রূপে একক টগর। বাংলাদেশে মূলত দুই ধরনের টগর পাওয়া যায়।থোকা টগর ও একক টগর। একক টগর ফুল বড়, সাদা আর একা একাই ফুটে থাকে। যেন নিঃসঙ্গতার মধ্যেও এক ধরনের মহিমা ছড়িয়ে দেয়। এর মাঝের হালকা হলুদ দাগ ফুলটিকে আরো সৌন্দর্য ময় করে তোলে। বাড়ির গেট কিংবা উঠানের মাঝখানে এই একক ফুল ফুটে উঠলে পুরো পরিবেশেই এক ধরণের পবিত্রতা ছড়িয়ে পড়ে। থোকা টগরের গুচ্ছ ভরা সৌন্দর্যের বিপরীতে একক টগর এককেই নিজের স্বকীয়তায় মন কেড়ে নেয়।

পঞ্চম ফটোগ্ৰাফি

উপরের দেখতে পাচ্ছেন, জবা ফুলের ফটোগ্রাফি।এই জবা ফুলের কথা না বললেই নয়। উজ্জ্বল লাল পাপড়ি আর মাঝখানে লম্বা পরাগদণ্ড নিয়ে জবা যেন প্রকৃতির প্রাণ চাঞ্চল্যের প্রতীক। সকালে ফোটে, দিনে পূর্ণ বিকশিত হয় আর সন্ধ্যায় ঝরে পড়ে। তবু তার ক্ষণস্থায়ী সৌন্দর্য যেন আমাদের শেখায় প্রতিটি মুহূর্তে প্রাণ ভরে বাঁচতে। ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে চুলের সাজ কিংবা ভেষজ চিকিৎসা জবার ব্যবহার বহুমুখী। রোদের আলোতে দাঁড়িয়ে থাকা জবা যেন প্রতিদিন নতুন করে প্রাণের গল্প শোনায়।

এই পাঁচটি ফুল একসাথে দেখলে মনে হয়, প্রকৃতি কত রঙে, কত ভঙ্গিতে, কত আবেগে আমাদের ঘিরে রেখেছে। কোথাও আছে টগরের শান্ত সাদা, কোথাও সোনালী ট্রাম্পেটের উজ্জ্বল দীপ্তি, কোথাও ক্রাইসোথেমিসের সূর্যাস্তের মতো রঙিন ঝলক, আবার কোথাও জবার আগুনরঙা প্রাণচাঞ্চল্য। প্রকৃতির এই বৈচিত্র্যময় উপহারগুলো শুধু চোখকেই আনন্দ দেয় না, বরং হৃদয়কেও ভরিয়ে তোলে শান্তি, প্রশান্তি আর ভালোবাসার অনন্ত রঙে।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।