মানুষের জীবনের ব্যস্ততা 😥।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে মানুষের জীবনের ব্যস্ততা নিয়ে আমার কিছু অনুভূতি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

Source

মানুষের জীবন মানেই হলো ব্যস্ততা।মানুষের জীবনে ব্যস্ততা এমন একটি অনিবার্য সত্য, যা থেকে কেউই মুক্ত নয়। জন্মের পর থেকেই মানুষ নানা ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ছোটবেলায় ব্যস্ততা থাকে পড়াশোনা, খেলাধুলা আর নিয়মিত জীবনযাপনের মধ্যে। অভিভাবকেরা তখন সন্তানকে নিয়ম মেনে বড় করে তোলার জন্য নিয়মিত পড়াশোনা, খাওয়া-দাওয়া, সময়মতো ঘুমানো ,এসবের প্রতি গুরুত্ব দেন। সেই সময় থেকেই মানুষ ধীরে ধীরে ব্যস্ত জীবনের সঙ্গে পরিচিত হয়। তখন হয়তো বোঝা যায় না, কিন্তু শৈশব থেকেই ব্যস্ততার মূল বীজ রোপিত হয় মানুষের মনে।কৈশোরে এসে ব্যস্ততার রূপ আরও ভিন্ন আকার ধারণ করে। পড়াশোনার চাপ বাড়তে থাকে, পরীক্ষার প্রস্তুতি, ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্ন আর পরিকল্পনা জীবনের বড় অংশ দখল করে নেয়। অনেকেই তখন নিজেকে প্রমাণ করার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। স্কুল-কলেজের পড়াশোনা, কোচিং, টিউশনি, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান।সবকিছু মিলিয়ে কৈশোর যেন এক দম বন্ধ করা ব্যস্ত সময়ের নাম। তখনো মানুষ ভাবে, বড় হলে নিশ্চয় এ ব্যস্ততা কমে যাবে, কিন্তু বাস্তবে তা হয় না।

প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে ব্যস্ততার পরিধি সবচেয়ে বেশি বিস্তৃত হয়। চাকরি বা ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নিত্য নতুন কাজের চাপ থাকে। জীবিকা নির্বাহ করার জন্য দৌড়ঝাঁপ, পরিবারের চাহিদা পূরণ, সামাজিক দায়িত্ব পালন। সব মিলিয়ে একজন মানুষ যেন এক যন্ত্রে পরিণত হয়। প্রতিদিন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়াতে হয়। ভোরের আলো ফোটার আগেই শুরু হয় প্রস্তুতি, আর রাত গভীর হলে শরীর-মন ক্লান্তিতে ভেঙে পড়ে। এই নিয়মিত ব্যস্ততা মানুষকে একদিকে পরিশ্রমী করে তোলে, অন্যদিকে মানসিক চাপও বাড়ায়। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই ব্যস্ততা সমানভাবে বিদ্যমান, তবে রূপ ভিন্ন। পরিবারের পুরুষরা চাকরি বা ব্যবসায় দিন কাটায়, আর নারীরা সংসার, সন্তান, রান্নাবান্না, ঘর গোছানো থেকে শুরু করে একসঙ্গে অনেক কাজ সামলায়। আধুনিক সময়ে নারীরাও সমানভাবে কর্মক্ষেত্রে অবদান রাখছে, ফলে তাদের ব্যস্ততা আরও বহুগুণে বেড়ে গেছে। সকালে অফিস, বিকেলে সংসার , সবকিছু সামলাতে গিয়ে তারা যেন দ্বিগুণ চাপের মধ্যে পড়ে।

ব্যস্ততার মধ্যেও মানুষ আনন্দ খোঁজে। ছোট ছোট অবসর মুহূর্ত, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, কিংবা এক কাপ চা নিয়ে নিজের সঙ্গে একান্ত আলাপ।এসবই মানুষের ক্লান্ত মনকে কিছুটা হলেও প্রশান্তি দেয়। তবুও ব্যস্ততার ছায়া সর্বদা মানুষকে ঘিরে রাখে। এই ব্যস্ততা অনেক সময় মানুষকে জীবন থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, নিজের জন্য সময় বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। অন্যদিকে ব্যস্ততা আবার মানুষের জীবনে শৃঙ্খলা আনে। নিয়মিত কাজ মানুষকে সচেতন করে, দায়িত্বশীল করে তোলে। যদি ব্যস্ততা না থাকত, তাহলে হয়তো জীবনের কোনো অর্থ থাকত না। কাজের ব্যস্ততা মানুষকে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে শেখায়, স্বপ্নপূরণের পথে চালিত করে। তাই ব্যস্ততা কষ্টের হলেও এটি জীবনের জন্য অপরিহার্য একটি অংশ।

সবশেষে বলতেই হয় , মানুষের জীবনের ব্যস্ততা কখনোই শেষ হয় না। কিন্তু জীবনের মাঝে ব্যস্ততা একদিকে যেমন ক্লান্তি আনে, অন্যদিকে আশার আলোও জ্বালায়। শৈশব থেকে বার্ধক্য পর্যন্ত ব্যস্ততার শিকল মানুষকে জড়িয়ে রাখে। তবে এই ব্যস্ততার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে জীবনের সৌন্দর্য। কাজের ভিড়ের মাঝেই মানুষ নতুন স্বপ্ন দেখে, নতুন কিছু করে, নতুন পথ খুঁজে পায়। তাই ব্যস্ততাকে বোঝা না ভেবে, জীবনের একটি অপরিহার্য সঙ্গী হিসেবে মেনে নেওয়াই শ্রেয়।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।