তিস্তা ব্যারেজ ভ্রমণ // পঞ্চম পর্ব ।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ। আজকে আমি আপনাদের সাথে তিস্তা ব্যারেজ ভ্রমণের পঞ্চম পর্বের অনুভূতি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

প্রকৃতি, নদী আর মানুষের ভিড় ,তিস্তা ব্যারেজ যেন এক অপার সৌন্দর্যের কেন্দ্রবিন্দু। প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু চোখে পড়ে, প্রতিটি মুহূর্তেই লুকিয়ে থাকে ভিন্ন রকম আনন্দ। ভ্রমণের আগের পর্বগুলোতে আমি লিখেছি এখানকার দৃশ্যপট, মানুষের ভিড়, নৌকা ভ্রমণ, স্থানীয় জীবনধারা এবং পরিবেশের নানা রঙ নিয়ে। আর আজকের এই পর্বে শেয়ার করবো এমন এক অভিজ্ঞতা, যা ভ্রমণকে আরও বেশি স্মরণীয় করে তোলে ,সেটা হলো ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার মুহূর্ত।

তিস্তা ব্যারেজে দাঁড়িয়ে প্রথমেই চোখে পড়লো কয়েকজন ক্যামেরাম্যানকে। কেউ হাতে ক্যামেরা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, আবার কেউ ভ্রমণকারীদের ছবি তুলতে ব্যস্ত। পাশে দাঁড়িয়ে একে অপরের ছবি তোলার দৃশ্যও বেশ আকর্ষণীয় লাগলো। কিন্তু সবচেয়ে বেশি টানলো সেই ভ্রাম্যমাণ ফটোগ্রাফাররা, যারা মাত্র দশ টাকার বিনিময়ে আমাদের মুহূর্তগুলোকে চিরস্থায়ী করে দিচ্ছেন। আজকের দিনে যেখানে সবাই মোবাইল ফোন দিয়ে ছবি তোলে, সেখানে এদের আলাদা একটা আবেদন থেকেই যায়। তাদের ক্যামেরায় বন্দী হওয়া ছবিতে অন্য রকম বাস্তবতা আর শিল্পকলা ফুটে ওঠে।

আমারও ইচ্ছে হলো ছবি তুলে রাখার। একেকটা ভ্রমণ যত সুন্দরই হোক না কেন, সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুই ম্লান হয়ে যায়। কিন্তু ছবির ভেতর সেই আনন্দকে বারবার ফিরিয়ে আনা যায়। তাই আমিও ডাকলাম একজন ক্যামেরাম্যানকে। প্রতি ছবির মূল্য ১০ টাকা, যা শুনতে সামান্য মনে হলেও এই মুহূর্তগুলোকে ধরে রাখার জন্য অমূল্য। আমি প্রায় দশটির মতো ছবি তুললাম ,ভিন্ন জায়গায়, ভিন্ন ভঙ্গিতে, ভিন্ন আবহে। কখনো নদীর ধারে দাঁড়িয়ে, কখনো সবুজ প্রকৃতির মাঝে, আবার কখনো ব্যারেজের পাড়ে দাঁড়িয়ে। প্রতিটি ছবিই যেন নতুন একটি গল্প বলছে। ছবি তোলার সময় আমার মনে হচ্ছিল, আজকের ভ্রমণটা কেবল একটি জায়গা দেখা নয়, বরং নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করা। ছবির ভঙ্গিতে লুকিয়ে ছিল আনন্দ, আবেগ আর স্মৃতির রঙ। ভ্রমণ শেষে যখন ছবিগুলো হাতে পেলাম, তখন মনে হলো এই ভ্রমণ সত্যিই আরও বেশি পূর্ণতা পেলো।

তবে ভ্রমণের মাঝেই মনে হলো, এই ক্যামেরাম্যানদের জীবনও কতটা ভিন্ন রকম। আমাদের আনন্দের মুহূর্তগুলোকে তারা ধরে রাখেন সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে। হয়তো সেই সামান্য আয় দিয়েই তারা চালিয়ে নেন সংসার। ভ্রমণকারীদের হাসির ছবি তাদের আয়, তাদের জীবনের ভরসা।আজকের অভিজ্ঞতা থেকে সবচেয়ে বড় উপলব্ধি হলো ,প্রকৃতির সৌন্দর্যের পাশাপাশি মানুষের জীবনও ভ্রমণের অঙ্গ। তিস্তা ব্যারেজের এই ছবিগুলো শুধু আমার আনন্দই নয়, বরং সেই ক্যামেরাম্যানদের শ্রমের প্রতিচ্ছবিও। সময় হয়তো বদলে যাবে, ভ্রমণ শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু এই ছবিগুলো বারবার মনে করিয়ে দেবে তিস্তার সেই দিনগুলোর কথা।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।