হঠাৎ ইচ্ছায় সন্ধ্যার আলোয় চটপটি , মুড়ি মাখা খাওয়ার গল্প।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে হঠাৎ ইচ্ছায় সন্ধ্যার আলোয় চটপটি , মুড়ি মাখা খাওয়ার গল্পের অনুভূতি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

বিকেলের আকাশে হালকা নীল থেকে ধীরে ধীরে গাঢ় রঙ মেশা শুরু করছে। যেন দিনের শেষ আলোকে ধরে রাখতে চাইছিল আকাশ। চারপাশের আলো একে একে জ্বলে উঠছে। আর এর মাঝেই আমার মনে হালকা ক্ষুধার একটা টান অনুভূত হলো। বাড়িতে খাবার ছিল, কিন্তু জানিনা কেন খেতে মন চাইছিল না। হয়তো কারণটা অন্য কোথাও, বহুদিন হয়ে গেছে ফুচকা, চটপটি কিংবা চানাচুর মুড়ি মাখার মতো রাস্তার প্রিয় খাবারগুলো খাওয়া হয়নি। ব্যস্ত সময়, কাজের চাপ আর নানা কারণে এসব ইচ্ছে মনের ভেতরে চেপে ছিল অনেকদিন। কিন্তু আজকের বিকেলে সেই চাপা পড়ে থাকা ইচ্ছেটাই জোরে মাথা তুললো। মনে হলো, যেভাবেই হোক আজ না খেলে যেন কেমন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তাই ঠিক করলাম, আর দেরি নয় ,যাই সেই স্বাদের খোঁজে, যেটা শুধু ক্ষুধা মেটায় না, মনে এক অন্যরকম আনন্দ জাগিয়ে তোলে।

তাড়াহুড়ো করে রেডি হয়ে রিকশায় উঠে বসতেই একধরনের অজানা উচ্ছ্বাস কাজ করছিল। রিকশার চাকা ঘুরতে ঘুরতে চারপাশের দৃশ্য যেন অন্যরকম লাগছিল। রাস্তার বাতিগুলো তখন একে একে জ্বলে উঠছে, মানুষের হাঁটাচলা, দোকানপাটের কোলাহল, হকারের ডাক ,সবকিছু মিলিয়ে মনে হচ্ছিল পুরো ছোট শহরটা যেন অন্যরকম এক রঙে সাজছে। ৮-১০ মিনিটের ছোট্ট পথ হলেও প্রতিটি মুহূর্ত ছিল একধরনের প্রত্যাশায় ভরা। যখন রিকশা থামল ফুচকার দোকানের সামনে, দেখি ইতিমধ্যেই ভিড় জমে আছে। মনে মনে ভাবলাম, ফুচকা পেতে দেরি হবে। ক্ষুধার তাগিদে আর অপেক্ষা না করে চটপটির অর্ডার দিলাম।

কিছুক্ষণের মধ্যেই হাতে চলে এলো গরম ধোঁয়া ওঠা চটপটির বাটি। প্রথম চামচ মুখে দিয়েই মনে হলো কতদিনের অভাব পূরণ হলো। চটপটির টক-মিষ্টি-ঝালের মিশ্র স্বাদ যেন জিভে লেগে রইলো, আর প্রতিটি কামড়ে ভরিয়ে তুললো মনকে। আসলে এই খাবারের সাথে শুধু স্বাদ জড়িত নয়, জড়িয়ে আছে অনেক স্মৃতি। স্কুল-কলেজ জীবনে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে খাওয়া। পরিবারের সাথে মেলায় গিয়ে চটপটি ভাগাভাগি করা ।সবকিছু মিলিয়ে চটপটি মানেই একধরনের সুখস্মৃতি। আজ বহুদিন পর সেই স্মৃতি যেন আবার ফিরে এলো। প্রতিটি কৌটা যেন ক্ষুধা মেটানোর পাশাপাশি মনে আনন্দের ঢেউ তুলছিল। শেষ চামচটা খাওয়ার পর মনে হচ্ছিল, এই ক্ষুদ্র মুহূর্তটাই আজকের পুরো দিনের ক্লান্তি দূর করে দিলো।

চটপটি শেষ হতেই পাশেই চোখে পড়লো চানাচুর মুড়ি মাখার দোকান। এক মুহূর্তও দেরি করলাম না। কাগজে মোড়ানো ঝাল-মিষ্টি মুড়ি মাখার ঠোঙাটা হাতে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে খেতে খেতে আবার রিকশায় উঠলাম। মুড়ি মাখার স্বাদ যেমন সাধারণ, তেমনি এর আনন্দ অসাধারণ। হাঁটতে হাঁটতে কিংবা রিকশার ভেতর বসেই এক মুঠো মুড়ি খাওয়ার মজা সত্যিই অন্যরকম। চারপাশের হালকা সন্ধ্যা, দোকানের আলো আর ঠান্ডা বাতাস মিলিয়ে পুরো পরিবেশটা যেন মনের ভেতরে প্রশান্তি এনে দিলো।

একা বেরিয়েছিলাম বলে বাজারে বেশিক্ষণ ঘোরাঘুরি করিনি। সন্ধ্যা পুরোপুরি নেমে আসছিল, চারদিক অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছিল। কিন্তু সেই অল্প সময়েই যেন অনেকটা আনন্দ জমা হলো মনে। ফিরে আসতে আসতে মনে হচ্ছিল, সুখ আসলে খুব বড় কিছু নয়, খুব জটিল কোনো ব্যাপারও নয়। সুখ লুকিয়ে থাকে এই ছোট ছোট ইচ্ছে গুলো পূরণের মধ্যে। ফুচকা, চটপটি কিংবা মুড়ি মাখার মতো সাধারণ কিছু খাবারও আমাদের দিনটাকে এমনভাবে রঙিন করে তোলে, যা বড় আয়োজনে ও অনেক সময় সম্ভব হয় না।

আজকের বিকেলের গল্প তাই শুধু খাবারের গল্প নয়। এটি একধরনের উপলব্ধি ।জীবনের ক্লান্তি আর এক ঘেয়েমির ভেতরে ছোট্ট কিছু মুহূর্তই আমাদের নতুন করে বাঁচার স্বাদ দেয়। অনেক সময় আমরা ভেবে থাকি সুখ মানেই বড় কিছু, কিন্তু আসলে সুখ হলো মন থেকে চাওয়া সামান্য কিছু মুহূর্তের ভেতর ডুবে যাওয়া। আজকের এই বিকেল আমাকে সেই কথাটাই আবার মনে করিয়ে দিলো। আনন্দ সবসময় আমাদের চারপাশেই থাকে, শুধু সময় বের করে নিতে হয়, আর মন খুলে উপভোগ করতে হয়।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।