হ্যা_{^{লো আমার বাংলা ব্লগ এর প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই?আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি।আমি @shahid420 বাংলাদেশ থেকে।বন্ধুরা আজকে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।চলুন আজকের ব্লগ টি শুরু করা যাক।}}

source

শৈশবের স্মৃতির ভান্ডারে বাবা সবসময়ই এক অনন্য স্থান দখল করে আছেন। ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে হাঁটা শেখা থেকে শুরু করে খেলাধুলার মাঠে সাহস জোগানো—সবকিছুতেই তিনি ছিলেন ছায়ার মতো সঙ্গী। সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে বাবার সাইকেলের পেছনে বসে যাওয়ার আনন্দ ছিল অসাধারণ। সাইকেলের হাওয়া মুখে এসে লাগত, আর বাবার গলার কাছে কান রেখে তার গল্প শোনা ছিল প্রতিদিনের সবচেয়ে প্রিয় মুহূর্ত। বাবা শুধু দায়িত্বশীল অভিভাবকই ছিলেন না, বরং আমার প্রথম শিক্ষকও ছিলেন আর আমার প্রথম অনুপ্রেরণা। তিনি পড়াশোনায় মনোযোগী হতে বলতেন, কিন্তু কখনোই কঠোর হতেন না; বরং নিজের জীবনের উদাহরণ দিয়ে শেখাতেন কষ্ট ও ধৈর্যের গুরুত্ব।

বিকেলবেলায় স্কুল থেকে ফিরে বাবার সঙ্গে হাঁটতে যাওয়া ছিল নিয়মিত অভ্যাস। আমরা একসাথে মাঠে যেতাম, কখনো ক্রিকেট খেলতাম, কখনো ফুটবল। খেলাধুলার মাঝে তিনি শিখিয়েছেন দলগতভাবে কাজ করার মানসিকতা। যখন কোনো খেলায় হেরে কেঁদে ফেলতাম, বাবা সান্ত্বনা দিয়ে বলতেন—“হার না মানলে একদিন জয় আসবেই।” সেই কথাগুলো আজও জীবনের প্রতিটি চ্যালেঞ্জে শক্তি জোগায়।

ছুটির দিনে বাবার সঙ্গে নদীর পাড়ে মাছ ধরতে যাওয়া ছিল অন্যরকম আনন্দ। হাতে বাঁশের কঞ্চির তৈরি ছিপ, পাশে বসা বাবা, আর পানির টলমলে ঢেউ—এসব মনে পড়লেই আজও চোখ ভিজে ওঠে। মাছ ধরা না পড়লেও বাবার সঙ্গে সেই অপেক্ষাটাই ছিল সবচেয়ে আনন্দের। আবার কখনো মেলায় নিয়ে যেতেন, কিনে দিতেন রঙিন বেলুন আর মিষ্টি। মেলার ভিড়ের ভেতরেও বাবার শক্ত হাত ধরে থাকা মানেই ছিল নিরাপত্তার নিশ্চয়তা।

রাতের বেলা পড়ার টেবিলে বসে যখন কোনো অঙ্কে আটকে যেতাম, বাবা ধৈর্য ধরে বারবার বুঝিয়ে দিতেন। কখনো রাগ করতেন না; বরং বলতেন, “অঙ্ককে বন্ধু ভাবতে শিখো, তাহলেই সহজ মনে হবে।” তার এই সহজবোধ্য কথাগুলো শুধু পড়াশোনার জন্য নয়, জীবনের সমস্যাগুলো সমাধান করতেও সাহায্য করেছে।

আজ যখন সেই দিনগুলোর কথা মনে করি, তখন উপলব্ধি করি শৈশবের প্রতিটি আনন্দের পেছনে বাবার অসীম ভালোবাসা, পরিশ্রম আর ত্যাগ লুকিয়ে আছে। বাবার সঙ্গে কাটানো শৈশবের মুহূর্তগুলো শুধু স্মৃতি নয়, বরং এগুলোই আমার জীবনের ভিত্তি। সময়ের স্রোতে আজ আমরা বড় হয়ে গেছি, তবুও বাবার হাসি, তার সাহস জোগানো কথা আর স্নেহমাখা আচরণ—সবকিছু হৃদয়ে অমলিন হয়ে আছে। এই স্মৃতিগুলো আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ, যা আমাকে প্রতিনিয়ত শক্তি, প্রেরণা আর ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখে।