কিছু সময় তামান্না সুইটসে
প্রাইমারিতে যখন পড়তাম, আমার উপরের ক্লাসেই রনি পড়তো। যদিও পাশাপাশি এলাকা থেকেই আমরা সেই সময়ে স্কুলে যেতাম, তবে যেহেতু ও উপরের ক্লাসে পড়তো, তাই ওকে ভাই বলে ডাকতাম। তবে বয়সে কিন্তু আমরা একদম কাছাকাছি ছিলাম।
তাছাড়াও এক দুই ক্লাসের বড় কে খুব সহজে ভাই বলতে ইচ্ছা করতো না। কারণ বয়সটা প্রায় কাছাকাছি। তবে এখন যেহেতু মোটামুটি সকলেই বড় হয়েছি তাই মানুষকে সম্মান দিয়ে কথা বলতে ভালোই লাগে। তবে ছোটবেলায় ওকে জীবনেও স্কুল ক্যাম্পাস ব্যতীত অন্য কোন জায়গায় ভাই বলে ডাকি নি। ওকে নাম ধরেই ডাকতাম ।
জীবন কখন কার কোন দিকে গড়িয়ে যায় তা তো বলা খুব মুশকিল। এই যে যেমন আমি, ছোটবেলা থেকেই মোটামুটি ভালোই স্কুল-কলেজ তারপর আবার মেডিকেল সাইন্স পড়ে মোটামুটি এখন অনেকটাই হাঁপিয়ে উঠেছি। আর রনি ছোটবেলা থেকেই মোটামুটি হাইস্কুল পর্যন্ত পড়াশোনা করে অতঃপর তার বাবার সঙ্গে তাদের খাবারের হোটেলের ব্যবসায় লেগে গিয়েছিল ।
জীবন আসলেই অনেক অদ্ভুত। জীবনে বেঁচে থাকতে গেলে প্রতিনিয়ত পয়সার দরকার এটাই হচ্ছে চরম সত্য কথা। আপনার দিনশেষে ঝুলিতে কতগুলো সার্টিফিকেট আছে, এটা তেমন কোনো মুখ্য বিষয় না। মুখ্য বিষয় হচ্ছে, দিনশেষে আপনার পকেটে কতোটা টাকা আছে এটাই হচ্ছে বড় ব্যাপার। কারণ এই নশ্বর পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য টাকার সম্পৃক্ততা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ।
মোটামুটি রনি সেই সময় থেকেই বেশ ভালোভাবে শ্রম দিয়েছিল তার বাবার সঙ্গে তাদের পুরনো খাবারে হোটেলে। দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে ব্যবসা মোটামুটি ভালোই শিখে গিয়েছে সে । যার কারণে সে অনেকটাই এখন সফল মানুষ । রনি অন্যের অধীনে চাকরি করে না বরং তার অধীনেই এখন অনেক বেকার ছেলে তাদের হোটেলে চাকরি করে ।
আসলে জীবনে লেগে থাকলে সবই হয়। ওদের পুরনো হোটেলটাও এখন সেই আগের মত আর পুরনো নেই। নতুনত্বের রূপ দিয়ে এখন সেটাও আরও বড় পরিসরে সাজিয়েছে ওরা। কিছুদিন আগে যখন তাদের পুরনো হোটেলে গিয়েছিলাম তখন রনির বাবার সঙ্গে দেখা হয়ে গিয়েছিল। আঙ্কেলের সঙ্গে বেশ ভালোই গল্প হয়েছিল সেই সময়।
রনির কথা বলতেই, আঙ্কেল তো সেই সময় বলেই ফেললো, বাবা রনি তো আর এখানে বসে না। আমাদের যে নতুন শাখা হয়েছে শুধুমাত্র মিষ্টি আর দই-সন্দেশের জন্য, রনি এখন সেখানে বসে । কথাটা শুনেই বেশ ভালো লাগলো। চোখের সামনে সেই ছোটবেলার রনির চেহারাটা বারবার ভাসছিল। বেশ দুরন্ত ছিল রনি, সেই ছোটবেলা থেকে। যাইহোক এই মফস্বল শহরে তারা তাদের অবস্থান বেশ পরিপক্ব করে তৈরি করে ফেলেছে ।
যদিও আঙ্কেলের কাছ থেকে সেদিন রনি ও তার নতুন দোকানের ঠিকানা ও ফোন নম্বর সংগ্রহ করেছিলাম, তবে সেই ভাবে আরকি সময় সুযোগ করে যাওয়া হয়ে উঠছিল না ।
যেহেতু আগামীকাল শুক্রবার আছে আর আত্মীয়ের বাড়িতে যেতে হবে, তাই ভাবলাম রনির দোকানে গিয়ে মিষ্টি কিনে নিয়ে আসি এবং ওদের নতুন শাখাটা দেখে আসি ।
আগের দোকানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করেই নাম রেখেছে নতুন শাখার। বেশ আধুনিক ডেকোরেশন এই শাখার। যদিও এখানে শুধুমাত্র মিষ্টি, সন্দেশ আর দই মানে নানারকম মিষ্টান্ন বিক্রি করে তারা।
সন্ধ্যাবেলাতেই যখন রনির দোকানে গিয়েছি, ও তখন মোটামুটি আমাকে দেখে বেশ ভালোই খুশি হয়ে গিয়েছে । অনেকটা দীর্ঘ সময় পরে দেখা ওর সঙ্গে। লম্বা সময় কুশল বিনিময় হলো ওর সঙ্গে। নতুন করে ওর এই পরিবর্তনটা দেখে বেশ ভালোই লেগেছে। আমি মনেকরি, ও যে সময়ে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিল, তা একদম সঠিক ছিল। আজকের এই ঊর্ধ্বগতির দ্রব্যমূল্যের বাজারে সে বেশ ভালোভাবেই সুনামের সঙ্গে বেঁচে আছে এবং ভালোই ব্যবসা করে যাচ্ছে ।
যেহেতু আমরা মিষ্টি কিনতে গিয়েছিলাম, তাই মূলত ও অনুরোধ করলো খেয়ে দেখার জন্য। ওর অনুরোধেই মূলত কিছু সন্দেশ খেয়েছিলাম। ভালোই স্বাদ ছিল সন্দেশ গুলোর। সর্বোপরি ওদের ওখানকার আপ্যায়ন এবং বাহ্যিক সৌন্দর্য্য দেখে মোটামুটি মুগ্ধ আমি।
তারথেকেও বেশি মুগ্ধ হয়েছি, ও নিজেই আজ একটা প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েছে, এটা দেখে । এই ভাবে যখন পুরনো মানুষগুলোকে নতুন করে আবারো দেখছি একদম ভিন্ন রূপে, তখন যেন সত্যিই আলাদা একটা ভালো লাগা কাজ করে নিজের মাঝে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

VOTE @bangla.witness as witness

OR
সত্যি ভাইয়া যখন কারো সফলতা দেখি তখন খুবই ভালো লাগে। আর কাছের মানুষগুলোর সফলতা দেখলে সত্যিই অনেক ভালো লাগে। মনে হয় এই তো সেদিন কত ছোট ছিল সে। আজ সে একজন সফল মানুষ। তেমনি আপনার বন্ধু কিংবা বড় ভাই রনি এখন একজন সফল ব্যবসায়ী দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া।
সত্যি বলেছেন ভাইয়া পুরাতন মানুষকে নতুন করে দেখলে আসলে আলাদা একটা ভালো লাগা কাজ করে।
সত্যিই দিন শেষে কেউ সার্টিফিকেট দেখে না, দেখে কার পকেটে কতো টাকা আছে।আমাদের বেঁচে থাকার জন্য আসলে টাকার প্রয়োজন। আপনার বন্ধুর সফলতা দেখে অনেক ভালো লাগল। সত্যি বলতে ভাইয়া কোন কিছুর পিছনে লেগে থাকলে সফলতা আসবে।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ তামান্না সুইটসে কাটানো মূহুর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
টাকার অবদান জীবনে ওতপ্রতভাবে ভাবে জড়িয়ে আছে। বেঁচে থাকতে গেলে টাকা লাগবেই।
আসলেই ভাই দিনশেষে টাকাই সব সার্টিফিকেট অর্জন শুধু নাম মাত্র কাজ।আর পুরাণ মানুষগুলোর সাফল্য দেখলে সত্যিই ভালো লাগে,সবাই এভাবে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছকএই কাম্য।আর হ্যা, মিষ্টি গুলা কিন্তু দারুন লোভনীয় ছিলো।😍
এটা সত্য দিনশেষে ফেলে আসা জীবনের মানুষ গুলোর সফলতার কথা শুনতে ও দেখতে ভালোই লাগে।
সময় বড় অদ্ভুত বিষয় কোথায় কখন কাকে কোন জায়গায় দার করাবে বলা খুবই মুশকিল৷ তবে এটা ঠিক বলেছেন যে জীবনের চাবি কাঠি হলো অর্থ ৷ মানে বলতে জীবনের আরেক নাম টাকা ৷ সেটা যেভাবে হোক ইনকাম করতে হবে ৷ আপনি পড়ালেখা শেষ করে ডাক্তার যদিও এখন প্রফেশনাল ব্লগার ৷ আর রনি এসএসি পাস করে একজন ব্যবসায়ী৷ যা হোক জীবন যেভাবেই চলতে হবে ৷ আর পুরনো মানুষ গুলো কে দেখলে মনে অনেকটা আনন্দ লাগে ৷
যা হোক মিষ্টি কিনেছেন খেয়েছেন ভালো লাগলো ৷
ধন্যবাদ ভাই
জীবন এমনি রে ভাই, কখন কার কি হয়ে যাবে, তা বলা মুশকিল।
এটা কিন্তু একদমই খাঁটি কথা। টাকা এখন বড় একটা গুরুত্ব বহন করে। যাক আপনার বন্ধুটির জন্য সত্যিই গর্ব বোধ হচ্ছিল। খুব বেশি দূর পড়াশোনা না করেও বেশ এগিয়ে গিয়েছেন এবং নিজের একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন। আর সেখানে বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।
আপনার পুরো পরিবারকে আবারো একসাথে দেখে ভালো লাগলো। দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য।
ঠিকই বলেছেন ভাইয়া, বর্তমানে একগাদা সার্টিফিকেটের কোনই দাম নেই। আবার দেখা যায় যে সার্টিফিকেট ছাড়াই অনেকে সফলতা অর্জন করে। যেমন আপনার বন্ধু রনি ও আজকে সফলতা অর্জন করেছে। ভালোই করেছে নিজেদের ব্যবসাটার হাল ধরে। আপনি মিষ্টি কিনতে উনার দোকানে এসেছেন এটা আরও বেশি ভালো লাগলো। যদিও ঠিকানাটা ওনার বাবার কাছ থেকে আগেই নিয়েছিলেন। দোকানের সন্দেশগুলো দেখছি সত্যি ভীষণ ভালো মনে হচ্ছে। ঠিকই বলেছেন পুরনো মানুষগুলোকে নতুন রূপে দেখতে এখন বেশ ভালোই লাগে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া এখনকার দিনে মানুষকে শিক্ষা দিয়ে নয় টাকা পয়সা দিয়ে বিচার করা হয়। জীবনে লেগে থাকলে সফলতা আসবেই। আপনার বন্ধু রনি ছোটবেলা থেকেই বাবার ব্যবসার সঙ্গে লেগে থেকে ব্যাবসা এত উন্নতি করে নতুন শাখা খুলেছে। ভালো কাজ করেছেন বন্ধুর দোকান থেকে মিষ্টিও কেনা ও হল আবার আড্ডায় দেয়া গেল। ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়া আপনার বন্ধুর দোকানের মিষ্টি গুলো ছবি দেখে বেশ লোভ হচ্ছে। আসলেই একসাথে থাকলে এক বছরের বড় কে তেমন কিছুই মনে করে না😉। ভাইয়া সকলেরই খোঁজ রাখেন দেখি।যাই হোক কাছের বন্ধুদের সফলতা দেখলে ভালোই লাগে,পরিশ্রম করলে সফলতা আসবে সেটাই স্বাভাবিক। মনে হচ্ছে বাবুর মন খারাপ, মিষ্টি গুলো ধরতে দেন নি বলে নাকি?😉
ব্যবসায় লেগে থাকাটা খুবই জরুরী।উত্থান পতন দুটোই থাকে। কিন্তু দুই ক্ষেত্রেই নিজেকে সংযত রাখতে হবে। উত্থান যখন হল তখন বেহিসাবি খরচ করলে অথবা পতন যখন হল তখন ভেঙে পড়লেই সমস্যা। তবে লেগে থাকলে অনেক দূর যাওয়া যায়। কারো অধীনে কাজ করার চেয়ে স্বেচ্ছায় নিজের স্বাধীনভাবে কিছু করা সব সময় বেশি কাম্য। আর বেশ ভালো লাগলো যে ওনার আন্ডারে বেশ কিছু যুবক কাজ করে নিজের সংসার চালাচ্ছে।মিষ্টিগুলো দেখে তো চরম লোভ লেগেছে। কলকাতায় যখন আসবেন দাদা সবাই মিলে, এরকম মিষ্টি নিয়ে আসবেন হিহিহিহি।