শান্তিনিকেতন ভ্রমন ( পর্ব ২৪ )

in আমার বাংলা ব্লগ14 days ago
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

আজকে আপনাদের সাথে শান্তিনিকেতন ভ্রমণ এর আরো কিছু আলোকচিত্র শেয়ার করে নেবো। এখানে প্রথমত একটি মূর্তির ভাস্কর্য দেখা যাচ্ছে। এই ভাস্কর্যটি একটি নারীর এবং এখানে এই নারীটিকে একটি নৃত্যরত ভঙ্গিমায় রূপ দিয়ে ভাস্কর্যটিকে সম্পন্ন করেছে শিল্পী। এটা আসলে সাধারণভাবে কোনো নারীকে নৃত্যরত ভঙ্গিমায় রূপ দেয়নি, এটি মূলত কোনো নৃত্যরত মহিলার দৃশ্যকে কেন্দ্র করে এটিকে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করেছে। এটি এমনও হতে পারে কোনো ঐতিহাসিক বা পৌরাণিক নারী নর্তকীর রূপায়ণ। তবে এই ভাস্কর্যটি রত্নমৃৎশিল্প বা টেরাকোটায় তৈরি করা। এই নৃত্যকলাটি ভারত নাট্যম বা মোহিনী অট্টম এর অনুরূপ। এরপরে রয়েছে একটি স্তম্ভ। এই স্তম্ভটি পশ্চিমবঙ্গের এবং এই স্তম্ভে মূলত বাংলার প্রকৃতি এবং লোকশিল্পের কিছু বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

এখানে স্তম্ভটিতে দুই পাশে দুটি মাটির কলসির প্রতিকৃতি তৈরি করা আছে, লোকশিল্পে সৌভাগ্য এবং সমৃদ্ধির প্রতীক। আর নিচের প্রতিকৃতিতে ফুটে উঠেছে শিল্প ও প্রকৃতির সংমিশ্রণ, যা একটি আল্পনা শিল্পের মাধ্যমে তুলে ধরেছে। এরপরেই রয়েছে আরো একটি স্তম্ভ, যেটি মূলত ওড়িশার। এখানে ওড়িশার সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তুলেছে কারুকার্যের মাধ্যমে। এই স্তম্ভের নিচের দিকে কিছু ভাস্কর্যের নকশা দেখা যাচ্ছে, যেখানে একদল বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছে এবং অন্যদল একপাশে নৃত্য করছে অর্থাৎ এখানে ওড়িশার আদিবাসী সম্প্রদায়কে ফুটিয়ে তুলে ধরেছে এর মাধ্যমে, যেখানে এই ভাস্কর্যে উভয় পাশে আদিবাসী পুরুষ আর মহিলাদের সাংস্কৃতিক ধারাকে রূপায়িত করা আছে। এই নৃত্যকে তাদের সংস্কৃতিতে সংঘ নাচ বলে থাকে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

এটি তাদের একটা ঐতিহ্য বটে। এরপরে রয়েছে একটি তুলসীমঞ্চ। এটি সাধারণ কোনো তুলসীমঞ্চ না, এটি বাঙালি সংস্কৃতিতে হিন্দু ধর্মের একটি পবিত্র দিক হিসাবে বাড়িতে থেকে থাকে। এটি সেই ঐতিহ্যগত দিক থেকে অর্থাৎ তুলসীমঞ্চের রং ও অলংকরণ গ্রামীণ বাংলার সংস্কৃতির ছাপ স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। এরপরে আপনারা দেখতে পাবেন একটি ঘর। তবে এই ঘরটি আদিবাসীদের জন্য অনেক ঐতিহ্যগত, এটি তাদের কুটির ছিল অর্থাৎ এই ধরণের কুটিরে তাদের বসবাস ছিল প্রাচীন সময়ের দিকে। এখনো যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় এইসব কুটির। এই কুটিরগুলো একপ্রকার কাদামাটি দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। আর এদের কুটিরের একটা আলাদা প্যাটার্ন থাকে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

Photo by @winkles

মোট কথা হলো, এখানে এই পুরো কুটিরের ডিজাইন আদিবাসী ও গ্রামীণ জীবনধারার পরিচয় বহন করে থাকে। এরপরে কিছু সংগৃহিত প্রাচীন যন্ত্রপাতি দেখতে পাবেন, যা নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন-এখানে বাঁশের তৈরি চাল বাছাইয়ের ঝুড়ি, মাদুলি জাতীয় কিছু পাত্র এবং আরো নানা ধরণের বস্তু রয়েছে। এছাড়া এখানে একটি পেঁচা আকৃতির শিল্পকর্ম রয়েছে, যা বাংলার লোকশিল্পের প্রতীক। এছাড়াও কৃষিপালন এবং কৃষিকাজের সাথে জড়িত নানা যন্ত্রপাতি এখানে সংরক্ষিত রয়েছে। এরপরে রয়েছে দূর্গা মায়ের একটি পটচিত্র, যা বাংলার লোকজ ধর্মীয় সংস্কৃতির একটি অংশ। এখানে এই দৃশ্যটি মূলত গ্রামীণ দুর্গোৎসবের সময়ে স্থানীয় পটুয়াদের আঁকা পটচিত্রকেই তুলে ধরেছে।


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png



Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.