মা বাবার ম্যারেজ অ্যানিভার্সারির দিনের কিছু মুহুর্ত

in Incredible India6 hours ago

গতকাল আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করেছি রাঁধুনী ঠাকুমার গল্প। আজকে মা-বাবার অ্যানিভার্সারি আরো কিছু মুহূর্ত আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।।

বিগত কিছুদিন আগে আপনাদের জানিয়েছিলাম বাবার বন্ধুরা মাঝরাতে এসে মা-বাবাকে হঠাৎ করেই সারপ্রাইজ দিয়েছিল। এবং সেদিনকে এই সব ঠিকঠাক হয়ে গেছিল যে খাওয়া-দাওয়া কি কি হবে এবং কবে হবে। ওরা যেদিন এসছিল রাতের বেলায় সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার ।বৃহস্পতিবারে আমরা নিরামিষ খাই ।তাই তারপরের দিন অর্থাৎ দু তারিখে শুক্রবারে আমাদের খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল।।

20250618_151924.jpg

আমার বাবা মার অ্যানিভার্সারী মে মাসের এক তারিখে হলেও আয়োজন সমস্ত ২ তারিখেরই করা হয়েছিল। শুধু আমাদের ফ্যামিলি বলে নয় ,আমার বাবার বন্ধুদের মধ্যে প্রায় প্রত্যেকটা ফ্যামিলি বৃহস্পতিবারে নিরামিষ খেয়ে থাকে। তাই বৃহস্পতিবারটা বাদ দেয়া হয়েছিল। ওই একদিনের মধ্যে ঠিকঠাক করে নেয়া হয়েছিল সবকিছু।

রাঁধুনি ঠাকুমাকে দেখে আমি সত্যিই অবাক হয়ে গিয়েছি, এরকম বয়সে উনি যেভাবে রান্নাবান্না করছিলেন। এত মজবুত শরীর। সত্যিই আমার মা ঠিক বলে, আগেকার দিনে মানুষজন খুবই শক্ত ছিল। এখন আমরা সব এক একটা মুরগির মতন তৈরি হচ্ছি।। ঠাকুমার গল্প বলতে গিয়ে আগের দিন আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয়নি ঠাকুমা কি রান্না করেছিল।

সকাল বেলায় লুচি আর অল্প করে আলুর তরকারি করে দিয়েছিল আমাদের জন্য। আমরা তো মাত্র মানুষ ৫ জন ঠাকুমাকে নিয়ে। এছাড়া আর কেউ নেই। তাই ওই অল্প কটা লুচি করতে বেশিক্ষণ সময় লাগেনি। দুপুরের সময় একটু মসুরের ডাল, পনিরের তরকারি ,আলু পোস্ত ফটাফট রান্না করে ফেলল ঠাকুরমা। আর রাতের রান্নার কথা একটু পরে বলছি।

20250618_145251.jpg

বিকেল বেলার দিকে আমি মা আর বাবা মিলে সব ঠিকঠাক করে গুছিয়ে রাখছিলাম। আসলে বাড়িতে মোটামুটি ২৫-৩০ জন খাওয়া দাওয়া করবে। বাড়িঘর এলোমেলো রাখলে কেমন একটা দেখায় ,তাই এই একদিনের মধ্যেই আমরা পুরো বাড়িঘর ঠিকঠাক করে নিচ্ছিলাম।। আসলে মিস্ত্রি কাজ করছিল তখনো। তাই বাড়ি ঘরের অবস্থা নোংরা হয়ে পড়েছিল। সামনেই আবার পুজো আছে, তার আগেই বাড়ি পুরো ফিনিশ করে দিতে হবে। তাই মিস্ত্রি সেই সময় জোর কদমে কাজ করছিল।

20250502_220821.jpg

দুপুর বেলা থেকে বিকেল বেলার মধ্যে মা একবারো রেস্ট পাইনি। তাই দেখতে দেখতে কখন যে কাজের মধ্যে দিয়ে বেলা কেটে গেল আমরা বুঝতে পারলাম না। যখন প্রায় ৬:৩০ টা থেকে সাতটা বাজে তখন আস্তে আস্তে গেস্ট অর্থাৎ আমার বাবার বন্ধুরা সবাই চলে আসতে শুরু করল। সবাই আমার কাকু, জেঠু, কাকিমা ,জেঠিমা। এবং তার সাথেই রয়েছে তাদের বাচ্চারা।

তখনো আমার মা রেডি হয়নি। মা কোন শাড়ি পরবে ,বুঝতে পারছিল না।। মা বারবার নিজের বিয়ের আর বৌভাতের শাড়িটা বার করছিল পড়ার জন্য। তখনকার সময়ের ব্লাউজ শাড়ি সমস্ত কিছুই মা যত্ন করে রেখে দিয়েছে। মেয়েদের কাছে বিয়ের জিনিস হলো সবচেয়ে মূল্যবান সম্পত্তি।

বাবা মার এনিভার্সারি দিনের একটা তাড়াহুড়ো সময়ের গল্প করতে করতে কিছু পুরনো ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিলাম। ৩০ টা বছর আগে এই দুটো মানুষ একসাথে পথ চলা শুরু করেছিল। যে ছবিগুলো শেয়ার করেছি, সেটা মা-বাবার বৌভাতের। আর একদম শেষের ছবিটা সেদিনের। মায়ের শাড়িটা দেখে বুঝতে পারবেন একই শাড়ি। ছবিগুলোতে বোঝা যাচ্ছে মানুষ কখনোই একই রকম থাকে না। সময়ের সাথে সাথে মানুষের বয়স বাড়ে। সবকিছু পরিবর্তন হয়। শুধু ভালোবাসার জায়গাগুলো একই রকম থেকে যায়। যদি সেটা সত্যিকারের ভালোবাসা হয়।

Sort:  
Loading...