নিজের শখ পূরণ
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে আমার একটা সখ পূরণের মুহূর্ত শেয়ার করতে চলেছি। ছবি দেখেই বুঝতে পারছেন, বিষয়টা একেবারেই জুয়েলারি সংক্রান্ত।
সত্যি বলতে মেয়েদের এক একটা বয়সে একেক রকম চাহিদা থাকে। আমি লক্ষ্য করে দেখেছি এই জুয়েলারি কেনার চাহিদাটা গত দুই বছর হলো অত্যাধিক আমার ভেতরে। এর আগে কিন্তু এসব নিয়ে কোনো সময় মাথা ব্যাথা করিনি। এ নিয়ে যদিও আফসোস হয় এখন। কারণ এখন সোনার যা দাম , আমি যদি আগে সোনা কিনে রাখতাম তাহলে আমারই লাভ হত।
কিন্তু যখন হাতে আগে টাকা থাকতো, তখন সেগুলোকে এটা ওটাতে খরচ করতাম। ফোন কিনেছি ,জামা কাপড় কিনেছি, ঘুরতে গিয়েছি, পছন্দ মত ব্যাগ কিনেছি। আরো কত কি। সেই সময় যদি এই চাহিদাটা আমার ভেতরে থাকত ,তাহলে আমারই লাভ হত।
সত্যিই একটা সময় এই প্লাটফর্ম থেকে একটা বড় এমাউন্ট তুলে নিয়েছিলাম। সেই টাকাগুলো এসব করে না খরচ করে যদি নিজের জন্য সোনার জিনিস কিনে রাখতাম বা ব্যাংকে অথবা কোথাও ফিক্সড করে রাখতাম অনেক ভালো হতো।
আসলে আমরা যখন প্রথম রোজগার করা শিখি, তখন আমাদের সবথেকে আগে শখ পূরণ করতে ইচ্ছা করে। নিজের রোজগারের টাকা দিয়ে নিজের মতন করে একটু চলতে ইচ্ছা করে। আমার ওই সময় তাই হতো। আর তখন এসব জুয়েলারি সংক্রান্ত ব্যাপারে কোনরকম আগ্রহ ছিল না। যে আগ্রহটা এখন অত্যাধিক বেশি।
টাকাটা কোথায় লাগালে আমার লাভ হবে আর কোথায় লস হবে সেটা এখন বোঝার ক্ষমতা অনেকটাই হয়েছে। এ কারণেই আজেবাজে খরচা করতে বেশি ভালো লাগে না আর। তাই টাকা পয়সা হাতে পেলে আগে চিন্তা করি কি করে সেটাকে আরো বেশি করা যাবে এবং বেশি করার জন্য কি কি করতে হবে ।
তবে যখন আমি প্রথম এই প্লাটফর্ম থেকে টাকা পেয়েছি প্রথমেই কিনেছিলাম নিজের জন্য ফোন ,তারপরেই আমার নিজের একটা সোনার আংটি করে রেখেছিলাম। পরবর্তীতে মাকেও একটা কিনে দিয়েছি। সেই আংটি এখন দাম আর তখনকার দামের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। প্রায় ৩০ হাজার টাকার ডিফারেন্স তো রয়েছেই।
যাইহোক, যেটা আসল কথা সেটা হলো আপনাদের সাথে আমি বেশ কিছু সময় আগে আমার নিজের টাকায় একটা হীরের আংটি কেনার কথা লিখেছিলাম। সেটা আমার কাছে খুব গর্বের এবং সত্যিই অনেক আনন্দের মুহূর্ত ছিল বলেই আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম ।
নিজের টাকা পয়সা নিয়ে গর্ব বা অহংকার করার মতন মানসিকতা আমার কোনদিনও ছিল না। আমি যেমন আপনাদের নিজের খারাপ সময় অথবা ভালো সময় গুলো প্ল্যাটফর্মে নিজের লেখার মাধ্যমে শেয়ার করি, ঠিক নিজের রোজকার দিয়ে যদি কিছু নিজের জন্য করতে পারি, সেটাও মনে হয় আপনাদের সাথে শেয়ার করা উচিত।।
কারন সত্যি বলতে এই প্লাটফর্ম আমাকে অনেকটা দিয়েছে। এর মারফতে আমি অনেক কিছু করতে পেরেছি। যদিও এখন টাকার অংক অনেকটা কম ।কিন্তু তার সত্বেও এই প্লাটফর্মের ওপর আমার বিশ্বাস আছে। আমি এই সংক্রান্ত পোস্ট এ কারণেই করি, যাতে আপনারাও উদ্বুদ্ধ হতে পারেন। এইভাবে এই প্লাটফর্ম থেকে টাকা ইনকাম করে ছোটখাটো জিনিস আপনারা নিজের শখ মেটাতে পারেন।। আপনারা নিজেরাই একবার ভেবে দেখুন এইভাবে লেখালেখি করে আপনাকে দশ টাকা কোথায় দেবে। কিন্তু এই প্লাটফর্ম আপনাকে সেটাও দেয়। বরং তার বেশি দেয়।
এই বছরেই প্রথম দিকে কেনা হীরের আংটিটা ছিল ক্লাসটার করা। ছোট ছোট হীরে দিয়ে একটা আংটি তৈরি। আমি তখন একটা solitaire হীরের আংটি কেনার বাজেট রাখতে পারিনি ।এ কারণে আমার প্রচন্ড দুঃখ ছিল। কারণ সত্যিই আমার ওয়ান পিস solitaire ডায়মন্ড রিং কেনার অনেক শখ ছিল।
বাজেটটা কম থাকায় যেটা বাজেটের মধ্যে এসেছিল সেটাই কিনেছিলাম সেদিন। ফেব্রুয়ারি মাসের ৯ তারিখ হবে হয়তো।তবে কিছুদিন আগে জুনের ছয় তারিখে সেই ইচ্ছা পূরণ হল। গুছিয়ে রাখা টাকা আর নিজের পরিশ্রমের ফসল স্বরূপ কিনতে পারলাম নিজের শখের জিনিসটা। আগের আংটিটা কিছুতেই মন মত হচ্ছিল না বলে, ওটা এক্সচেঞ্জ করে বেশ আরো কিছু টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে।
যেদিন আমি ওই আংটিটা কিনি, তার কিছুদিন পরেই ওখানকার একজন স্টাফকে আমি ফোন করে বলে দিয়েছিলাম ,যদি এরকম ধরনের ডিজাইনের কিছু আসে আমাকে যেন অবশ্যই খবর দেয়। ওনারা সেই মতো আমাকে খবরও দিয়েছিল।। যেদিনকে ওনারা বলে সেদিনকেই আমি চলে গিয়েছিলাম।সম্পূর্ণ টাকা যে এই প্লাটফর্ম থেকে ,তা বলছি না। আমি নিজেও যেহেতু বিজনেস করি। সেখান থেকেও আমার আরনিং হয়। সব মিলিয়ে গুছিয়ে রাখা টাকা দিয়ে এই নিজের ইচ্ছা পূরণ করতে পেরেছি।
মোটামুটি চার মাসের সময় মাঝে চলে গেছে। তার মধ্যে যা হয়েছে ,তাতেই আমি যেটুকু জমাতে পেরেছি সেখান থেকেই এই পূরণ। আমার বাবাকে চাইলে তো বাবা দেওয়ার চেষ্টা করেই । আমার না বলার আগেই আমাকে সব টা দিয়ে দেয়। সব থেকে ভালো ভালো জিনিস গুলো কিনে এনে দেবার চেষ্টা করে। সব বাবা মা ই হয়তো বাচ্চাদের জন্য এরকমই করে। কিন্তু নিজের রোজগারের টাকা দিয়ে নিজের ইচ্ছা পূরণ করার অথবা কারোর জন্য কোন কিছু কেনার মজাই আলাদা। আমি প্রচন্ড পরিমাণে খুশি যে আমি আমার এই শখটা পূরণ করতে পেরেছি।
আজকে এখানেই শেষ করছি, সকলে ভালো থাকুন। কাজ করতে থাকুন ।অবশ্যই ভালো কিছু হবে।
নিজের যে কোন শখ যদি নিজে পূরণ করতে পারি তাহলে তোমার মত আমারও ভীষণ ভালো লাগে। আগের হীরের আংটিটা চেঞ্জ করে এই আংটিটা নিয়েছো দেখতে ভীষণ সুন্দর লাগছে আর তোমাকে পড়েও খুব ভালো লাগছে। এই প্লাটফর্মে কাজ করে নিজেকে একটা সুন্দর উপহার দিতে পেরেছো। এদের তুমিও যেমন ভীষণ খুশি তেমনি শুনে আমারও ভীষণ ভালো লেগেছে। এরকমভাবে আরো কাজ করি এগিয়ে যাও আর নিজের স্বপ্ন পূরণ কর।