বাবার তৈরী ফাইবারগ্লাসের নেতাজী বিষয়ক স্মারক
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন।। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি আমাদের কৃষ্ণনগরে আয়োজিত নেতাজী বিষয়ক একটি সভার জন্য বাবার তৈরি মোমেন্ট নিয়ে গল্প।
আমাদের কৃষ্ণনগরে ইউর ফ্রেন্ড বলে একটা সংস্থা আছে। সেই সংস্থার যিনি প্রধান , তাঁর নাম জ্যোতিব্রত সান্যাল। তিনি আমাদের ভীষণ পরিচিত। আমি ওনাকে জেঠু বলে ডাকি। ওনার একমাত্র ছেলে ইমন দাদা ব্লু ডার্ট এর সাথে যুক্ত । অর্থাৎ ট্রান্সপোর্টের বিজনেস আছে।
বলতে গেলে আমার বাবার প্রত্যেকটি বড় বড় মূর্তি যেগুলো বাইরে যায়, বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিদেশে ,এমনকি আমাদের শোরুম থেকে যে মূর্তিগুলি অথবা মাটির পুতুলগুলো অনলাইনে অর্ডার করা হয়, সেগুলো সব এই ব্লুডার্ট মারফত বাইরে পাঠানো হয়।। ব্লুডার্টের পরিষেবা আমরা প্রচন্ড পছন্দ করি।
তাই বলতে গেলে ইওর ফ্রেন্ডের সংস্থার সাথে আমার পারিবারিক একটা আলাদাই সম্পর্ক রয়েছে। ইওর ফ্রেন্ড সম্পর্কে এবং এই সংস্থা সম্পর্কে আমি একদিন খুব ডিটেলসে আপনাদের সাথে আলোচনা করব।
আজকে আসল কথাতে আসি। গতকাল এই ইওর ফ্রেন্ডের উদ্যোগে আমাদের কৃষ্ণনগর রবীন্দ্রভবনে আয়োজন করা হয়েছিল একটি অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ সভার। বিষয়বস্তু ছিল নেতাজির জীবন ও অন্তর্ধান সম্পর্কিত প্রামাণ্য আলোচনা।
যাই হোক এই প্রোগ্রামটি যে হতে চলেছে, তা অনেকদিন আগেই আমি জানতে পেরেছিলাম ,কারণ আমাদের জ্যোতি জেঠু আমার বাবাকে প্রোগ্রামের বিশিষ্ট অতিথিদের সম্বর্ধনা জানানোর জন্য এবং যারা এই প্রোগ্রামে বিশেষ বিশেষ পর্যায়ে আছেন, তাদেরকে সম্বর্ধনা দিতে স্মারক তৈরীর জন্য আমার বাবার কাছে বলেছিলেন।
বলা হয়েছিল স্মারক এর মূর্তিটির মূল বিষয় থাকবে নেতাজির একটা মুখমণ্ডল ।যেটা ফাইবার গ্লাসের অথবা মাটির হতে পারে। এবার বিষয়টি হল বাবা খুব একটা ছোট মূর্তির কাজ করতে চায় না। কিন্তু যেহেতু জেঠু বলেছে, তাই জেঠুর কথা বাবা কিছুতেই ফেলতে পারল না ।বাবা জেঠুকে ভীষণ পরিমাণে সম্মান করে।
এ কারণে জেঠুর এই আদেশ বাবা মেনে নেয়। আমাদের কারখানায় বড় মূর্তির পাশাপাশি এই মোমেন্ট বানানোর কাজ গত সাতদিন ধরে চলতে থাকে। টোটাল ৩০০ পিস নেতাজীর ফ্রেম ছোট বড় মিশিয়ে । সবকটা ছিল ফাইবার গ্লাসের।
কারখানায় যে কজন কর্মচারী আছে ,সকলেই সারাদিন বড় মূর্তির কাজের করত ,তাদের ছুটির পরও কারখানায় থেকে যেত এবং বাবা সকলকে গাইড করে দিত। সকলেই ব্যস্ত থাকতো নেতাজির এই মুখমণ্ডল এর প্রোডাকশনের জন্য।
প্রথমে তো বাবা মেন মূর্তি তৈরি করে দিয়েছে ,সেই মতোই প্রত্যেকটি মূর্তি তৈরি হয়েছে। বলতে গেলে বেশ অনেকটা সময়ের ব্যাপার ।এই মূর্তিকে রং করা, ফ্রেমিং করা ,প্যাকেট করা, আরো কত কাজ ,যেগুলো হয়তো আমি স্কিপ করে গেলাম। ফাইবারের তৈরিতে আলাদা ঝামেলা।
অনুষ্ঠানের দিন সকাল বেলায় স্বাভাবিকভাবে মঞ্চে এই সমস্ত ফ্রেমগুলো পৌঁছে দিতে হবে। এ কারণে অনুষ্ঠানের আগের দিন জোর কদমে কাজ চলছে কারখানায়। বাবা অনুষ্ঠানের আগের দুই দিন রাতে অনেক দেরি করে স্টুডিও থেকে বাড়ি এসেছে। এসব বিরাট দায়িত্বের কাজ।
যাইহোক, সবকটা খুব ভালো ভাবে মঞ্চ অবধি অনুষ্ঠানের দিন পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।এর সাথে কৃষ্ণনগরে র বিশিষ্ট মৃৎ শিল্পী হিসেবে বাবাকে ইওর ফ্রেন্ড থেকে আমন্রত্রণও জানানো হয়েছিল সেদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য সেসব নিয়ে এবং আমার সেই দিনটি সম্পর্কে অন্যদিন আলোচনা করব। আজ এখানেই শেষ করছি।
Curated by: chant