বিবাহ বার্ষিকীর সেলিব্রেশন - ১ ম পর্ব
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে সকলের সাথে আমি শেয়ার করতে চলেছি একটি আনন্দঘন মুহূর্ত। জুলাই মাসের ১ তারিখে আমার পার্টনারের বাবা মার অ্যানিভার্সারি অর্থাৎ বিবাহ বার্ষিকী ছিল। পার্টনার বলতে আমার ভালোবাসার মানুষ।
যাইহোক সেই উপলক্ষে আমরা অর্থাৎ আমি, মা ,বাবা আগে থেকেই প্ল্যান করেছিলাম ওদের বাড়িতে যাব। আমি, মা, বাবা সেই প্লান মাফিক সেদিনকে ওদের বাড়িতে গিয়ে বেশ হই হুল্লোড় আর আনন্দ করেছি ।সাথে ওদের সবাইকেও একটু আনন্দ দিতে পেরেছি। এজন্য আমরা সকলেই খুবই খুশি হয়েছি। সেই মুহূর্তগুলোই আপনাদের সাথে আমি শেয়ার করতে চলেছি।
আমার পার্টনারের বাড়ি আমার বাড়ি থেকে বাইকে খুব জোর 5 থেকে 10 মিনিটের রাস্তা। বলতে গেলে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। তাই আসা-যাওয়া করতে একদমই সময় হয়না। প্ল্যানমাফিক আমি আর বাবা তার ঠিক দুদিন আগে বেরিয়ে কাকু কাকিমার জন্য কিছু জিনিস কিনেছিলাম ।সেটা নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। কাকিমার জন্য একটা শাড়ি কেনা হয়েছিল এবং কাকুর জন্য যে শার্টটা কেনা হয়েছিল সেটাও আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয়েছে।। বিগত কিছুদিনের পোস্ট একটু ঘেঁটে দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন ।
সেদিনকে বিকেল বেলায় বাবা বেরিয়ে আবার একটা কেক, ফুলের তোড়া আর মিষ্টি কিনে নিয়ে আসলো। বিকেল বেলায় ঠিক হচ্ছিল শুধু বাবা মা যাবে। আসলে, আমাদের সবারই পরীক্ষা। ওদের বাড়িতে ওর দাদা, বৌদি আছে ,তাদেরও পরীক্ষা রয়েছে ,আর আমার পার্টনারেরও সামনে পরীক্ষা রয়েছে। তাই বাবা মা কিছুতেই চাইছিল না, আমাকে আর ঈশানকে নিয়ে যাবে। কারণ আমরা গেলে ওদের পড়াশোনার ক্ষতি হবে।
আমি এই কথা শুনে স্বাভাবিকভাবেই খুব দুঃখ পেয়ে গিয়েছিলাম। কারণ পার্টনারের সাথে দেখা করতে তো ইচ্ছা করেই। আর স্বাভাবিকভাবে আমরা যাদের ভালবাসি তাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পছন্দ করি। এই সুযোগে আবার ওর সাথে একটু সময় কাটানো যেত, দেখা করা যেত, কিন্তু যখন কিছুতেই বাবা-মা রাজি হচ্ছিল না ,আমি সত্যিই চুপ হয়ে গিয়েছিলাম।
এদিকে এই বিষয়টা পুরোপুরি সারপ্রাইজ দেব ভেবেছিলাম আমরা সবাই। কিন্তু ওরা কিন্তু ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিল যে আমরা হয়তো যাব ।আসলে আমার বাবা বিকেল বেলায় ফোন করে জিজ্ঞেস করেছিল, ওরা সবাই বাড়িতে আছে কিনা। সেইমতো কাকিমা আর আমার পার্টনার বারবার ফোন করতে লাগলো এবং বলতে লাগলো যেন আমরা সবাই আসি। আমার মাকে আমার পার্টনার বারবার রিকুয়েস্ট করলো যেন আমাকে ওরা নিয়ে যায়। ওর রিকুয়েস্ট আমার মা কিছুতেই ফেলতে পারল না। তাই অবশেষে আমার আর ঈশানের যাওয়াও ঠিক হয়ে গেল।
আমরা সবাই রেডি হয়ে মোটামুটি সাড়ে সাতটা থেকে আটটা নাগাদ ওদের বাড়িতে পৌঁছে গেলাম। যাওয়ার পরেই দেখি ওর দাদার শ্বশুরও এসে হাজির। তাই বাড়ি ভর্তি লোকজন, বেশ জম্পেশ হয়ে উঠলো। গল্প আড্ডা থেকেই সমস্ত কিছু শুরু হলো। এদিকে আমি কাকিমাকে বারবার রেডি হতে বলছিলাম সেলিব্রেশানের জন্য।
কাকিমা আর কাকুর এইবার তেত্রিশ বছর বিবাহ বার্ষিকী পালন। ৩৩ টা বছর ওনারা একসাথে কাটিয়েছেন। এ তো একেবারে মুখের কথা নয়। এটাকে তো সেলিব্রেট করতেই হবে। কাকিমা তো লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছিল। টানাটানি করছিলাম কাকি মাকে নিয়ে। বারবার জোর করে আলমারির সামনে নিয়ে গিয়ে বলছিলাম আলমারি টা খোলো ,কি কি শাড়ি আছে দেখবো ,পছন্দমতো একটা শাড়ি পরো শিগগির। আর ভালোভাবে রেডি হও।।
আমার পাল্লায় পড়ে শান্ত মানুষ অশান্ত হয়ে যায়। ওদের বাড়িতেও সেরকমই ঘটে। কাকু খুব শান্ত প্রকৃতির আর কাকিমা আমার মতন। তবে আমার মতন এতটাও ছটফটে না। আমার পাল্লায় পড়ে অবশেষে কাকিমাকে শাড়ি বার করতেই হলো। কাকিমাকে রেডি হওয়ার জন্য ছেড়ে দিলাম। কাকিমাকে আস্তে আস্তে রেডি করতে হেল্প করলাম। আমি আর অনিষা দি মিলে কাকিমাকে মেকআপ করে দিলাম। এছাড়া কি কি পড়বে গয়নাগাটি সেটাও ঠিক করে দিচ্ছিলাম। সাথে আমি টেবিলটা গুছিয়ে টেবিলের ওপর কেক সাজিয়ে রাখলাম।
কাকিমা এমনিতেই ফর্সা, তাই বেশি না সাজলেও কাকিমাকে বেশ সুন্দর দেখতে লাগে। মুখের গঠনটাও ভারী মিষ্টি। সুন্দর দেখে একটা শাড়ি বার করে কাকিমা যখন পরল আর যখন একটু সাজুগুজু করলো, কাকিমাকে আরো সুন্দর দেখতে লাগছিল। আমি তো বারবার কাকিমাকে খেপাচ্ছিলাম, যে এইবার কাকু দেখলে একেবারে ফিদা হয়ে যাবে।
যাইহোক আজকে এখানেই শেষ করছি। না হলে লেখাটা বেশ বড় হয়ে যাচ্ছে, পরবর্তী পোস্টে বাকি মুহূর্তগুলো শেয়ার করব।