রাঁধুনি ঠাকুমা
নমস্কার বন্ধুরা ।আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন ।আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি আমার বাবা-মার অ্যানিভার্সারি সেলিব্রেশানের সময়ে আমাদের সাথে পরিচয় হওয়া এক অদ্ভুত রাঁধুনী ঠাকুমার কথা। আমার আজকের পোস্টে উনি মূল চরিত্র।
মা বাবার এনিভার্সিটি ছিল ১ তারিখ।যেহেতু মে মাসের ওই সময়টাতে প্রায় বেশিরভাগ বিয়ে থাকে তাই কিছুতেই রাধুনী পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে একজনকে পাওয়া গেল কিন্তু তিনি ভীষণ বয়স্ক। তাকে দেখে আমরা কিছুতেই রাজি হচ্ছিলাম না ।এই অবস্থায় ,এই বয়সে, শরীরে উনি কিভাবে এতগুলো রান্না করবেন, এ কারণে এটা ভেবেই আমরা কিছুতেই রাজি হতে চাইছিলাম না।
কিন্তু আমাদের যে ক্যাটারার কাকুদের সাথে পরিচয় ছিল ,সবাই এতটা পরিমাণে ব্যস্ত ছিল বিয়ের সময় গুলোতে ,ওনাদের হাতে আর কোনো রাঁধুনি ছিল না।
এতগুলো লোকজনের রান্না ওই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমাদের বাড়ির কারোর পক্ষে করা অসম্ভব ব্যাপার। আবার যেমন তেমন রাধুনী ও রাখা যাবেনা। ভাল রান্না হতে হবে। এ কারণে অবশেষে ওই ঠাকুমা রাধুনীকেই আমরা রাখলাম সেদিনের জন্য।
সকাল বেলায় তিনি চলে এসেছেন ওনার সময় মত ।কিন্তু এদিকেই বাজারঘাট করা এখনো শেষ হয়নি। উনি সকাল থেকে রাত অব্দি সমস্ত রান্নাই করবেন। বাবার বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল রাতের বেলা। তাই সকালে ,দুপুর বেলায় ঠাকুরমা যা রান্না করেছে, সেগুলো আমরা বাড়ির লোকজনই খাওয়া দাওয়া করেছি।। ওনাকে দেখলে ওরকম মনে হবে ।কিন্তু উনি এত স্পিডে রান্না করছিলেন, আমি আর মা অবাক হয়ে যাচ্ছিলাম।
আমার মা একেবারেই অন্য ধরনের। রাধুনী রেখেছে বলে যে চুপ করে হাত গুটিয়ে বসে থাকবে ,তা একদমই করে না।। বলতে গেলে আমার মা বসে থাকতেই জানেনা। লাট্টুর মতন খালি এদিকে আর ওদিক করে। চুপ করে বসে থাকলেও মাথার মধ্যে ঘোরে, কোথায় কোথায় কি কি কাজ বাকি আছে। সেই মতো সেদিনকে ওই ঠাকুমাকে মা একা হাতে কিছু করতে দিচ্ছিল না। বারবার রান্নার জায়গায় চলে যাচ্ছিল।
আর ওদিকে ঐ ঠাকুমা বারবার রেগে যাচ্ছিল আমার মায়ের ওপর। আসলে এই ঠাকুমা কিছুতেই পছন্দ করেনা ওনার রান্নার সময় যদি ওনাকে কেও সাহায্য করে অথবা ওনার কাছে আসে। উনি যা যা চাইবেন সেগুলো ওনার হাতের কাছে দিয়ে দিতে হবে, বাকি উনি একাই রান্না করবেন ।এর বাইরে কেউ যদি ওনাকে এসে হেল্প করার চেষ্টা করে উনি ভীষণ রাগ করেন।
আমার মা কিছুতেই চুপ করে বসে থাকতে পারছিল না ওনার পিছন পিছন খালি সাহায্য করছিল ।আর ঠাকুমা খেপে যাচ্ছিল। আর এসব দেখে আমি এই বাবা ভীষণ হাসাহাসি করছিলাম। উনি যে ঠাকুরের সাথে রান্না করেন তিনি আবার আমার অন্নপ্রাশনে রান্না করেছিলেন।। তাই তার ভরসাতেই ঠাকুমাকে নেয়া হয়েছিল। ঠাকুমার রান্না তো দুর্দান্ত ছিল। তবে এই বয়সে ওনার স্ট্যামিনা দেখে আমি সত্যিই হতবাক হয়ে গিয়েছি। এ এক আমার কাছে অবাক দৃশ্য। ওনাকে আমি যে কি নামে অভিহিত করব, তা নিয়ে আমি নিজে সত্যিই কনফিউজ। আপনারা একটু সাজেস্ট করুন তো ওনাকে কি বলা যেতে পারে, " সুপার রাঁধুনি ঠাকুমা "?