বারোদোলের মেলা - ৩য় পর্ব

in Incredible India10 days ago (edited)

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। বেশ কিছুদিন আগে আমাদের কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত এবং সর্ববৃহৎ মেলা সম্পর্কে আমি আপনাদের কিছু মুহূর্ত শেয়ার করেছিলাম। মেলাতে একদিনই গিয়েছিলাম। যাবার মুহূর্ত থেকে কিছুটা অংশ দুটো পোষ্টের মাধ্যমে শেয়ার করেছি আজকে তিন নম্বর পর্ব লিখছি।

20250730_231256.jpg

আপনাদের জানিয়েছিলাম আমার পার্টনারের দাদা বৌদি আসতে দেরি করছিল বলে আমি মেলাটা ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম। তার মধ্যে একটা দোকানে চিনেমাটির জিনিসপত্র গুলো দেখে আমি সেখান থেকে কয়েকটা জিনিস কিনে নিয়েছিলাম ।এসব করতে করতেই দাদা বৌদি মেলাতে পৌঁছে যায়। ওরা পৌঁছে গেলে ফোনে যোগাযোগ করে ওদেরকে এক জায়গায় দাঁড়াতে বলা হয়। তারপর সেই মতো আমরাও ওদের কাছে চলে যাই ।অত বড় মেলাতে খুঁজে বার করা সত্যিই অসম্ভব। যদি ঠিকমতো জায়গা না বোঝানো যায় ।

ছোটবেলায় মেলাতে হারিয়ে যাওয়া নিয়ে আমার একটা বিরাট ভয় জন্মেছিল, তাই ছোটবেলায় যখনই মেলা দেখতে যেতাম ,সেটা বাবা-মা হোক কিংবা ঠাকুমা দাদু, আমি সব সময় হাত শক্ত করে ধরে থাকতাম। যাতে হারিয়ে না যাই। আমার বড় পিসি আমাকে ছেলে ধরার গল্প শোনাতো। আর সেই গল্প শুনে আমার আরো ভয় লাগতো। তখন তো এত ফোনের যুগ ছিল না। আমি আমার ছোটবেলার কথা অর্থাৎ ২০০০ সালের পরের কথা বলছি। তাই সত্যিই হারিয়ে গেলে অনেক সমস্যা ছিল।

আমার বাবা রাস্তায় বেরোনোর আগে আমার জামার পকেটের মধ্যে অথবা আমার সাথে যে ছোট্ট একটা ব্যাগ থাকতো ,তার মধ্যে একটা কাগজে বাবার নাম ,ফোন নাম্বার আর ঠিকানা রেখে দিত ।একটা কাগজকে সমস্তটা লিখে ভাঁজ করে আমার কাছে রেখে দিত ।আমার ঠাকুমাও তাই করতো বেরোলে। বারবার বলতো ,এই কাগজটা যেন না হারায় তোর কাছ থেকে। যদি কখনো হারিয়ে যাস,তাহলে এই কাগজটা দেখাবি যে কাউকে।

20250730_230818.jpg

ওদের এত ভয় পেতে দেখে সত্যিই আমারও মনের ভিতর একটা বিরাট ভয় জন্ম হয়ে গিয়েছিল হারিয়ে যাওয়া নিয়ে। আর এখন সেই মেয়েটাই লাফিয়ে লাফিয়ে সারা কৃষ্ণনগর কিভাবে ঘুরে বেড়ায়। আমরা বড় হয়ে গেলে কতটা পরিবর্তন হয়ে যাই। এ সত্ত্বেও কি অদ্ভুতভাবে এখনো বাবা-মা চিন্তা করে, আমরা বাইরে গেলে।। ঠিকঠাকভাবে না যতক্ষণ ফিরে আসছি, নানান ধরনের চিন্তা করতে থাকে ওরা।

যাইহোক দাদার বৌদি আর আমার পার্টনারের সাথে মেলা ঘুরতে শুরু করলাম । মেলার মধ্যে রাখা কিউট জিনিসগুলো আমার খুব চোখ কেড়ে নিচ্ছিল। এই যেমন কিছু কার্টুনের সার্পনার ছিল। ঈশান থাকলে হয়তো খুব জেদ করত। ডোরেমনের সার্পনার টা আমার সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে।

20250425_192105.jpg

দাদা হঠাৎ করে একটা দোকান থেকে রবারের সাপ বৌদির গায়ে যেই না দিয়েছে, বৌদি চেঁচিয়ে উঠলো একবার। সেটা দেখে আমরা সবাই হাসতে লেগে গিয়েছিলাম। প্রথমে তো আমিও ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম, পরে দেখি ওটার রবারের। এরকম রবারের সাপ দেখিয়ে আমার দাদাও আমাকে ভয় দেখাত ছোটবেলায়।

20250425_192145.jpg

মেলার মধ্যে কি প্রচন্ড ভিড় আস্তে আস্তে বাড়তে লাগলো। যত রাত বাড়তে লাগলো, মেলায় লোকজন তত বাড়তে লাগলো। আমি আর আমার পার্টনার যখন সন্ধ্যেবেলার দিকে মেলায় প্রবেশ করেছি ,তখন কিন্তু মেলার পরিবেশ বেশ ঠান্ডা ছিল। আর লোকজনের ভিড় কম ছিল। আগের পোস্টগুলো ছবিগুলো দেখতে পারলে আপনারাও বুঝতে পারবেন।

20250425_194908.jpg

নাগরদোলায় চড়া নিয়ে একটা বিশাল উত্তেজনা কাজ করত ছোটবেলায়। এমনকি দু-তিন বছর আগেও ।কিন্তু এখন নাগরদোলা চড়তে একদম ইচ্ছা করে না।। বরঞ্চ এখন ভয় লাগে যদি কোন বাজে কিছু হয় ,আসলে নাগরদোল্লা থেকে অনেক এক্সিডেন্টের কথা এখন খবরে পাওয়া যায় ,এ কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব কাজ করতে আর ইচ্ছা করে না।

যাইহোক,আজ এখানেই শেষ করছি ।সকলে ভালো থাকুন।পরবর্তী পোস্টে বারোদোলের মেলার শেষ পর্ব নিয়ে লিখব।

Sort:  
Loading...

SPOT-LIGHT TEAM: Your post has been voted on from the steemcurator07 account.

Thank you for your valuable efforts! Keep posting high-quality content for a chance to receive more support from our curation team.

1000006091.png


Loading...