বারোদোলের মেলা - প্রথম পর্ব
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন ।আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি কৃষ্ণনগরের এক বিখ্যাত মেলায় কাটানো আমার কিছু মুহূর্ত।
আমাদের ঐতিহ্যপূর্ণ শহর কৃষ্ণনগরের সুবিখ্যাত মেলা হল বারোদোলের মেলা ।কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির প্রাঙ্গণে এই মেলা বহু সময় ধরে আয়োজিত হয়ে আসছে। কৃষ্ণনগরে যে কটি মেলা হয় ,তার মধ্যে সবথেকে বড় মেলা এই মেলাটি। দোল পূর্ণিমার পরেই এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় কৃষ্ণনগরের রাজা ছিলেন। তিনি এই মেলার প্রথম প্রচলন শুরু করেছিলেন। এই শহরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে বারো রকমের কৃষ্ণ মূর্তিকে এই সময় আনা হয় এবং তাদের পুজো হয়। মেলার প্রথম তিনদিন সাধারণ মানুষকেও সেই মূর্তিগুলো দেখার অনুমতি দেয়া থাকে।
পূজিত হওয়া সেই মূর্তিগুলি তিনদিন রাখা হয়।। এই বারোটি বিগ্রহ তিন দিন ধরে নাট মন্দিরে পূজা হয়ে যাবার পর, আবার যে যার নিজস্ব স্থানে ফিরে যায়। 12 টি বিগ্রহের নাম অনুযায়ী এই মেলার নাম হয়েছে বারোদোলের মেলা।
বছরে একবার যেহেতু এই মেলা অনুষ্ঠিত হয় ,এ কারণে কৃষ্ণনগরবাসী সকলেই এই মেলাতে একবার হলেও গিয়ে থাকে। ছোটবেলা থেকে এই মেলা দেখে এসেছি। আমার মতন সবাই প্রত্যেক বছর অধীর আগ্রহে এই মেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। ছোটবেলায় এই মেলাতে কতবার যে যেতাম তার নেই ঠিক ।
মেলাটা একমাস হয় আর এক মাসের মধ্যে প্রায় তিন থেকে চারবার মেলাতে যাওয়া হতো। একবার দাদাদের সাথে ,একবার দিদিদের সাথে ,একবার বাবা মার সাথে ,এরকম ভাবে অনেকবার যাওয়া হয়ে যেত। আর এখন না গেলেও যেন হয় ।তার সত্বেও যেহেতু বছরে এত বড় একটা মেলা একবারই হয়। তাই একবার হলেও যাবার চেষ্টা করি। এবছরও মেলাতে একবারই গিয়েছিলাম।
মেলার প্রথম তিনদিন ঠাকুর গুলো থাকে বলে ওই সময় মেলাটা একটু গমগম করে, মানুষ ভক্তি শ্রদ্ধার সাথে নাটমন্দির এ প্রবেশ করে ঠাকুর গুলোকে প্রণাম করে তারপরে মেলা ঘুরে বাড়ি চলে আসে। তাই আমারও সেই দিনগুলোতে যেতেই বেশি ভালো লাগে।
এ বছর ঠাকুর দেখার সুযোগ হয়নি ।যে দু-তিন দিন ঠাকুর ছিল তার মধ্যে একদিন আমার মা গিয়ে ঠাকুর প্রণাম করে মেলা ঘুরে চলে এসেছে। সাথে মৌসুমী বৌদি ,পাশের বাড়ির কাকিমা ,ঈশান সবাই ছিল ।সেদিনকে আমি যাইনি। আমি মেলা চলাকালীন মাঝ সময় একবার গিয়েছিলাম ,তাও আবার আমার পার্টনার সাথে।
সত্যি বলতে যত বড় হচ্ছি ।এখন ভিড়ভাট্টা ,অতিরিক্ত লোকজন ,অতিরিক্ত আওয়াজ কেন জানিনা বেশি পছন্দ হয় না। তাই আমি এরকম টাইপের সিচুয়েশনগুলো একটু এভয়েড করে চলি। ওর সাথে গিয়ে বাইকটা রাখার পরে আস্তে আস্তে মেলাতে ঢুকলাম। যেভাবে মেলাটা বসে থাকে ঠিক সেভাবেই এই মেলাটা সাজিয়ে গুছিয়ে বসেছে। ঢোকার পথেই ছোটখাটো দোকান দু দিক দিয়ে রাস্তার পাশে ।তার আগেই তো পার্কিংয়ের একটা বড় জায়গা।
দু দিক দিয়ে জিলিপি বাদাম ভাজা দোকানগুলো বসেছে ,বেতের রকমারি জিনিসপত্রের দোকান ,হরেক মালের দোকান ,মাটির ভাঁড়ের দোকান চোখে পড়ছিল ।তারপর আস্তে আস্তে মেলার মধ্যে ঢোকার পরে। ডানদিকে দু'রকম মার্কেট পরে। আর বাঁদিকের সেকশনে নাগরদোলা থাকে।
মেলার ইতিহাসের সাথে কিছু কথা আপনাদের শেয়ার করলাম আজকে ।পরের দিন বাকি মুহূর্তগুলো শেয়ার করে নেব।
You have been supported by the Team 04:
কৃষ্ণনগরে ১২ দল মেলা কেটে গিয়েছে প্রায় অনেকদিন হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে আবারো কিছু মাস পর চলে আসবে। বারদোল মেলা। এ বছরে তোমার সাথে একদিন ও বারো দোল মেলাতে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। আমিও সেভাবে এবারে মেলাতে ঘুরতে পারিনি। তোমার পোস্ট পড়ে মনে হচ্ছে আবারো খুব তাড়াতাড়ি চলে আসবে বারোদের মেলা।