রথযাত্রার সন্ধ্যার মুহুর্ত

in Incredible India26 days ago (edited)

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। বেশ কিছুদিন আগে আমি রথ যাত্রা উপলক্ষে দুটি পোস্ট করেছিলাম। একটি পোস্ট ছিল রথ যাত্রার ইতিহাস সম্পর্কে এবং অপরটি ছিল আমার রথ যাত্রার দিনের মুহূর্তটা কেমন কেটেছিল সেটা নিয়ে। আজকে আমি রথ যাত্রার সন্ধের মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আর এর সাথেই বলে রাখছি আজ কিন্তু উল্টোরথ। যেহেতু পোস্ট আমি বারোটার পরে করছি। তাই বলতে গেলে আজকে জুলাই মাসের ৫ তারিখ।।

20250628_213404.jpg

এই সোজা রথ , উল্টো রথের ব্যাপারটা কোনদিন বুঝিয়ে বলা যাবে। আজকে শেয়ার করি গতদিনের রথে কি কি করেছি সেটার গল্প।

আমি আপনাকে জানিয়েছিলাম বাড়ির কাছে যেহেতু রথ হয় অন্য জায়গায় যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। সেই মতো আমাদের শোরুমে বসে রথের সমস্ত মুহূর্তগুলো দেখতে পারি। বিকেল হলেই শোরুমের অপজিটের রাস্তায় মেলার মতন করে নানান ধরনের দোকান বসে যায়।

20250627_180437.jpg

বাদাম ভাজার দোকান, আইসক্রিমের দোকান, মোমো র দোকান, ফুচকার দোকান, জিলিপি আর বিভিন্ন ধরনের মিষ্টির দোকান তো রয়েছে। এর সাথে থাকে বাচ্চাদের খেলনার দোকান। ছোটখাটো একটা মেলা বলা চলে। রথের চারিপাশটা কিরে রাস্তার দুপাশ ধরে এরকম দোকান বসে থাকে। বিকেল থেকে আস্তে আস্তে দোকানগুলো বসে যায়, আর রাস্তাটা পুরো কভার করে নেয়।

20250627_184906.jpg

স্বাভাবিকভাবে সন্ধ্যের পর থেকে ওই রাস্তা দিয়ে এবার থেকে ওপার করা সম্ভব নয়। ওই রাস্তা ধরে বাজারের দিকে যাওয়া। কিন্তু কেউ ওই রাস্তা ধরে সামনের দিকে যেতে পারে না। রাস্তার ওপরে মেলা বসলে এই এক সমস্যা। আমার সত্যি বলতে রথের দিনগুলোতে আমাদের শোরুমে বসে থাকতেই ভালো লাগে। কারণ ওখানে বসে থেকেই খাবার দাবার পেয়ে যাই। আমাদের দোকানে যে দাদা কাজ করে, তাকে বলে দিলে সে যা যা খেতে চাই এনে এনে দেয়।

20250627_184924.jpg

তাইতো রথের দিনগুলোতে বিকেল থেকে দোকানেই বসে থাকি। সেদিনও বিকল্প কিছু ছিল না। যদিও একটু যেতে দেরি হয়েছিল। বাড়িতে সন্ধ্যা দিয়ে রেডি হয়ে চলে গিয়েছিলাম দোকানের দিকে। তার আগে সারাটা বিকেল জুড়ে দোতলার জানলা দিয়ে দেখেছি বাচ্চারা রথ নিয়ে যাচ্ছে। অনেকজন রথ বানিয়ে এভাবে বার হয়েছে। কাসর ঘন্টা বাজাতে বাজাতে রথ নিয়ে ঘুরছে ।

যাইহোক দোকানে গিয়ে বসার পর চোখের সামনে দেখলাম এক এক করে সব কটা মেলার দোকান বসতে থাকল। তার আগে কিন্তু বেশ ঝমঝম করে বৃষ্টি হয়ে গেছে। আমি একটু পর থেকেই খাবারের লিস্ট জুড়ে দিলাম। রথ মানেই জিলিপি। সেটা ছাড়া তো কোন কিছুই চলে না।

20250627_184926.jpg

সব থেকে বড় কথা আমি আবার মিষ্টি খেতে ভালবাসি। তাই আমার কাছে রথের দিনে জিলিপি হবে না সেটা একদমই অবিশ্বাস্য। প্রথমে ঈশান একবার সাইকেলটা নিয়ে গিয়ে আমার জন্য পাপড় ভাজা দিল। একটা পাপড় ৫ টাকা। ও নিজের কাছ থেকে টাকা নিয়েই আমাকে কিনে দিয়েছিল। যাইহোক আমি কি ভাগ্যবতী! আমার ছোট ভাই আমার জন্য পাপড় এনে দিচ্ছে তাও আবার রথের মেলা থেকে। ভাবা যায়!?

20250627_185708.jpg

তারপরে চলে আসো জিলিপি। জিলিপিটাও ভাই এনে দিয়েছে। আসলে যে দাদাটা থাকে সে একটু তাড়াতাড়ি চলে গিয়েছিল। আর আমাদের আর একজন যে দোকানে থাকে, তার বয়স হয়েছে। তার পক্ষের ভিড়ের মধ্যে গিয়ে এটা ওটা কেনা সম্ভব নয়। এ কারণে ঈশান বারবার সাইকেল নিয়ে। ঈশান জিলিপির দোকানে গিয়ে অনেকক্ষণ আটকে গিয়েছিল। এত ভিড় ছিল। জিলিপির দোকান অনেকগুলো থাকলেও যেখানে সব থেকে বেশি জিলিপি খেতে ভালো হয় ,স্বাভাবিক সেখানেই লোকজন বেশি যাবে। এ কারণেই ওই দোকানটাতে ভিড় থাকায় ঈশানের দেরি হচ্ছিল।

20250627_193950.jpg

যে দোকান থেকে ও জিলিপি নিয়েছে সেটা কিন্তু একটা মিষ্টির দোকান। একদম আমাদের দোকানের অপজিটে রাস্তায় এই মিষ্টির দোকান। এই মিষ্টির দোকান এর ওনার হল অমল কাকা। প্রত্যেকদিন কাকার দোকানের মিষ্টি খেয়ে খেয়ে আমি একটা মিষ্টি মেয়ে তৈরি হয়েছি। হাহাহা। বড়াই করছি না কিন্তু। আসলেই মিষ্টি গুলো অনেক সুন্দর খেতে হয়। তাই কাকার দোকানে সকলে এসে ভিড় করে রথের দিনেও। যতই অন্যান্য জায়গায় জিলিপির দোকান হোক না কেন।
20250627_203434.jpg

সন্ধ্যা বেলা থেকে কিছুক্ষণ সময় ওখানে কাটিয়েছি। আমি আবার দই ফুচকাও খেয়েছি। দই ফুচকা খেতে আমার বরাবরই ভালো লাগে। দোকানে বসে বসেই ৬-৭ পিস জিলিপি খাওয়ার পরে দই ফুচকা পেটের মধ্যে ঢুকছিল না।। তার ওপর আমার পার্টনার এসে আরো এক প্যাকেট জিলিপি দিয়ে গেল। আমি তো সোনায় সোহাগা।

1000272350.jpg

দোকানে বসে থাকতে থাকতে আমাদের পাড়ার সকলে রথের মেলাতে যাচ্ছে দেখছিলাম। সবাই সেজেগুজে রথ দেখতে যাচ্ছে। এই সুযোগে মৌসুমী বৌদির সাথে আবার দেখা হলো। বৌদি বৌদির বোনেদের সাথে রথ দেখতে যাচ্ছিল। আমাকে অনেকবার ফুচকা খাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমার পেট ভর্তি থাকায়, আমি রাজি হইনি। তারপরে আমার দাদার ছেলে আদি, বৌদি, আর আমার পিসতুতো দিদিও রথ দেখতে এসেছিল। সবার সাথে দেখা হয়ে বেশ মজা লাগলো।

যাওয়ার আগে দিদি আমাকে একটা কর্নেট খাইয়েছে। আমার খুব পছন্দের আইসক্রিম ওটা। বলতে গেলে আমি দোকানে বসে বসে খালি খেয়েই গিয়েছি। তারপরে তো বাড়ি চলে এসেছিলাম। রাতের সন্ধ্যা থেকে মুহূর্তটা খুব সুন্দর কেটেছে। আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে ভালো লাগলো।

Sort:  
Loading...

SPOT-LIGHT TEAM: Your post has been voted on from the steemcurator07 account.

Thank you for your valuable efforts! Keep posting high-quality content for a chance to receive more support from our curation team.

WhatsApp Image 2025-06-29 at 15.12.51_2f3c3c85.jpg

Loading...