মন খারাপ ও টেনশন কাটানো আমার একটা দিন।
আমি একটা কথা বিশ্বাস করি সৃষ্টিকর্তা যদি না এগোতে দেয় তাহলে কখনোই আগানো যায় না, সেটা হতে পারে পড়ালেখা টাকা পয়সা ও আর্থিক অবস্থার দিক দিয়ে আর বিপদ তো রয়েছে। মাঝেমধ্যে আমাদের এমন এমন বিপদ আসে যার জন্য আমরা একদমই প্রস্তুত থাকি না , তখন খুব টেনশনে পড়ে যায়, এবং এটা ভুলে যাই সবকিছু সমাধানের মালিক একজন আছেন।
আজ সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেছিলাম প্রতিদিনের মতো, সকালের কাজকর্ম করলাম রান্না করেছিলাম , এরপরে সকালের নাস্তা করে বাবুকে বেশ সময় নিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছি, আর বর্তমান সময়ে বাবু ঘুমানো মানে আমার একদম কাজ শুরু। কারণ ও ঘুমানো অবস্থায় আমাকে কাজ করতে হয় না হয় উঠে গেলে করা অসম্ভব।
তাইতো ঘরের কাজ রেখে,আমি কম্পিউটারটা অন করে বসবো একটা কাজ করার জন্য, ঠিক তখনই ঘটলো একটা বিপদ, আমি যখনই পিসিটা অন করতে গিয়েছি, ঠিক সাথে সাথেই ভিতরে আগুনের মত ধরে উঠলো আমি তো ভয়ে সাথে সুইচ অফ করে দিয়েছি।
আমার হাত-পা রীতিমতো কাঁদছিলো এমনিতে কারেন্টের ব্যাপারে আমি খুব ভীতু তার উপরে আবার এমন ঘটনা।এক দৌড়ে আমার শাশুড়ির কাছে গিয়ে বললাম, সমস্ত ঘটনা কি আর করার সে একটু সান্ত্বনা দিল তবে আমার তো ভিতরে ভিতরে শুরু হয়ে গেলো,টেনশন কাজ করা। আমার এত শখের জিনিসটার কি এমন হলো ভিতরে।
কি করবো আমি একদমই বুঝতে পারছিলাম না, এত চিন্তা ভাবনা করে আমার এক পরিচিত ভাইকে ফোন দিলাম তাকে দেখালাম, তার কথা শোনার পরে নিজে বুদ্ধি খাটিয়ে খুব সুন্দর ভাবে পরিষ্কার করলাম ভিতরে এরপরে আবার লাইন দিয়ে দেখলাম কিন্তু কোন ভাবেই লাইন আসতে ছিলো না।
এর মাঝে ফোন দিয়েছিলো আমার আম্মু, বিষয়টা তাকেও বললাম এবং বলা মাত্রই আমার আম্মু যেন ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল কিভাবে এটা ঠিক করা যায়, আর তাইতো ঠিক তখনই রওনা দিয়ে চলে আসলো আমার শ্বশুর বাড়িতে। এখানে এসে পিসিটা নিয়ে আমার আম্মা চলে গেল কোটালীপাড়া ঠিক করার জন্য।
ভেবেছিলাম আম্মুর সাথে আমিও যাবো,কিন্তু যেতে পারিনি বাবু ছোট তাছাড়া কিছুক্ষণ পরপর বৃষ্টি আসে আর বৃষ্টির মধ্যে ছোট বাবুকে নিয়ে না যাওয়াই ভালো তাই আম্মুকে দিয়ে পাঠিয়ে দিলাম। মাঝেমধ্যে আমার আম্মাকে তো আমার সুপারম্যান মনে হয় হঠাৎ হঠাৎ করে এসে আমার সমস্যা গুলো যে কিভাবে সমাধান করে দিয়ে যায় সবই সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা।
আমি তো খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম কি করবো বুঝতে পারছিনা কারণ এটা ছাড়া কাজ করতে আমি খুব একটা সুবিধা জনক মনে করি না, তাছাড়া এখন বাড়িতে পুরুষ মানুষ নেই কোন সমস্যা হলে আমাকেই বাহিরে যেতে হয় এটা নিয়ে আরেক টেনশন।
আজ এইটা নিয়ে চিন্তা করতে করতে আম্মুকে রেডি করে পাঠিয়ে দিলাম, তাই দুপুরে রান্নার কাছে আর আমি যাই নি,কারণ সত্যি কথা বলতে মনটাও ভীষণ খারাপ ছিল। শাশুড়ি আম্মা এদিকে রান্না করে নিয়েছিলো,আজ দুপুরে রান্না করেছিলাম চিংড়ি মাছ এবং করল্লা ভাজি সাথে মুরগির ডিমের ঝোল।
আম্মু যাওয়ার পরে নিজে গোসল করে মেয়েকে গোসল করিয়ে দিলাম , এরপর দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে একটু কাজ করলাম কারণ সংসারের কাছে আজ আর মন দিতে পারিনি। এর মাঝে আমার আম্মু চলে আসলো এবং এসো বলল যা সেটা শুনে তো চিন্তা আরো বেড়ে গেলো,কম্পিউটারটা কে আমার এক মামার দোকানে রেখে এসেছে এবং আগামীকালকে আমাকে যেতে হবে।।
কি আর করার এই কথাই মেনে রইলাম। আম্মু থাকতে পারবে না, তাই আম্মুকে দুপুরবেলা খাবার খাইয়ে দিলাম। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আম্মুর সাথে মেয়েকে পাঠিয়ে দিলাম কারণ আগামীকাল থেকে স্কুল আছে আবার বৃহস্পতিবারে আমি নিয়ে আসবো স্কুল থেকে। বাসা থেকে বের হলেই গাড়ি পাওয়া যায় যেহেতু রাস্তার পাশে তবে আজ কেন যেন পাইনি আম্মু বলতে ছিলো। এইতো আর একটু এগিয়ে দিয়ে যাও আরেকটু আসো এই করতে করতে বেশ খানিকটা পথ চলে গিয়ে ছিলাম।
আমরা সন্তানরা যত বড়ই হই না কেন মা-বাবার কাছে কিন্তু ছোটই থেকে যায় সারা জীবন। এরপর বাড়ি ফেরার সময় এই পাতা বাহার গাছগুলোর ছবি তুলেছিলাম,ভিডিও করেছিলাম। দেখতে সুন্দর না,,?আমার কাছে তো বেশ ভালো লাগে। এই পাতা পাহাড় ফুল গাছটি দেখে না আমার সবচেয়ে বেশ ভালো লাগলো, এরপরে বাসায় আসি তখন আছরের আযান দিয়ে দিয়েছিলো,,।
এরপরে নিজের মনকে বুঝিয়ে কাজে মাঝে নিজেকে ব্যস্ত করে ফেলি। বাহির থেকে জামা কাপড় রান্না ঘর ঝাড়ু দেওয়া, পানি আনা ইত্যাদি বেশ কিছু কাজ করি। এইতো এভাবে কেটেছিল আমার আজকের দিনটা তবে দিনশেষে আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করি আলহামদুলিল্লাহ। কারণ তিনি চাইলে হয়তো এর থেকে আরো কঠিন পরিস্থিতি হতে পারতো,,।
যাইহোক সবাই দোয়া করবেন এবং ভাল থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।।
প্রত্যেক মা-ই বোধকরি তাই সন্তানের জন্য একটা সুপার উইমেন হয়ে থাকে ,যার কাছে সব সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। সন্তানের স্যার সমাধান করার জন্য তিনি উড়ে চলে আসেন। আপনার মায়ের কথা পড়ে আমার নিজের মায়ের কথা মনে পরে গেলো। তিনিও এমনি ছিল।
আশা করি আপনার কম্পিউটার দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।