পটল ভর্তা রেসিপি
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে আবারো নতুন একটা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে আশা করছি সকলেরই ভালো লাগবে।
আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব পটলের ভর্তা রেসিপি। পটল খেতে আমি খুব একটা পছন্দ করি না। তবুও জোর করে মাঝে মাঝে পটল খেতে হয়। সেদিন পটল একটু অন্য ভাবেই রান্না করেছিলাম যাতে সকলেরই খেতে ভীষণ ভালো লাগে। গরমকালে বেশিরভাগ সময়তেই ঝিঙে ,পটল এই সবই বাজারে সবজি হিসেবে বেশি বিক্রি হয়। এখন সারা বছরই পটল পাওয়া যায়।যেকোনো চচ্চড়ি বা যেকোন তরকারিতে পটল ব্যবহার করতে হয়। বিশেষ করে আমাদের বাড়িতে।পটল খেতে না চাইলেও মাঝে মাঝে তাই একটু খেয়ে ফেলতে হয়। এ বছরে বাজারে পটলের দাম একদমই কম। কখনো কখনো দশ থেকে পনেরো টাকা কেজি আবার যখন একটু বেশি হচ্ছে তখন কুড়ি টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে চাষিরা যে পরিশ্রম দিয়ে পটল গাছগুলোকে বাঁচিয়ে রাখে এর ফলে পটল উৎপন্ন হয় ।সেই তুলনায় চাষীরা একদমই দাম পায় না।
ভিডিও লিংক
দুই থেকে তিন বছর আগে আমার বাবা জমিতে পটল চাষ করেছিল ।পটল চাষ করতে গেলে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। পটল গাছে যখন প্রথম ফুল আসে তখন নাকি পুরুষ ফুল নিয়ে স্ত্রী ফুলের সাথে ঠেকিয়ে মিলন ঘটলে তবেই গাছে পটল ধরে। মানে মানে ফুলের পরাগ মিলন ঘটাতে হয়। শুধু মাত্র প্রথম বারের ক্ষেত্রে করতে হয়।তাও আবার শুদ্ধ বস্ত্র পড়ে ।তবে আমার মা দেখতাম সকালবেলায় স্নান করে ভালো কাপড় পড়ে পটলের জমিতে গিয়ে এই একটা ফুলের সাথে আর একটা ফুল ছোঁয়াতে যেত। এছাড়াও ভোর বেলায় যখন বাবা পটল তুলতে যেত তখনো মা জামা- কাপড় ছেড়ে শুদ্ধ বসতে গিয়ে জমিতে সমস্ত পটল তুলতো। এগুলো সব বাবা মায়ের কাছ থেকে শোনা কথা। যাইহোক আজকে সেই পটল দিয়েই দুর্দান্ত একটি রেসিপি শেয়ার করবো। রেসিপি টি খেতে অসাধারণ লাগে। গরম ভাতের সাথে এই রেসিপি দিয়ে এক থালা ভাত খাওয়া হয়ে যায়। তবে আমাদের বাড়িতে খেয়ে কেউ বুঝতেই পারিনি আসলে ওটা পটল ভর্তা।
চলুন তাহলে রেসিপিটি পদ্ধতি শেয়ার করি:-
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | পটল | ৬ টা |
২ | কালো জিরা | ১ চামচ |
৩ | কাঁচা লঙ্কা | ৪ টে |
৪ | রসুন | ৪টে |
৫ | সরিষার তেল | পরিমাণ মতো |
৬ | পেঁয়াজ | ২ টো |
৭ | শুকনো লঙ্কা | ২ টো |
৮ | লবন | ১ চামচ |
৯ | হলুদ | সামান্য |
১০ | চিনি | সামান্য |
প্রথম ধাপ
প্রথমেই বাজার থেকে আনা বেশ কয়েকটা টাটকা পটল নিয়ে নিয়েছিলাম।
দ্বিতীয় ধাপ
এরপর পটলগুলো ভালো করে খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট করে কেটে নিয়েছি।
তৃতীয় ধাপ
এরপরে পটলগুলো ভালো করে ধুয়ে গ্যাস অন করে একটা কড়াই বসিয়ে দিয়েছি। কড়াইতে পরিমাণ মতো জল দিয়ে পটলগুলো খুব ভালো করে সিদ্ধ করে নিতে হবে। সিদ্ধ করার সময় সামান্য পরিমাণে লবণ অ্যাড করেছিলাম।
চতুর্থ ধাপ
খুব ভালো করে সিদ্ধ হয়ে গেলে কড়াই থেকে নামিয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে।
পঞ্চম ধাপ
এদিকে আমি গরম কড়াইতে কয়েকটা কাঁচা লঙ্কা, কালো জিরে আর রসুন ভালো করে ভেজে নিয়েছি। ওগুলো একটা পাত্রে নামিয়ে রেখে দিতে হবে।
ষষ্ঠ ধাপ
এবারে আবারো ওই গরম কড়াইতে পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়ে দিয়েছি। তেলের মধ্যে শুকনো লঙ্কা আর কোচানো পেঁয়াজ দিয়ে খুব ভালো করে ভেজে নিতে হবে। আমি কড়াই থেকে ভাজা শুকনো লঙ্কা টা তুলে রেখে দিয়েছিলাম।
সপ্তম ধাপ
এদিকে আমার সিদ্ধ করা পটলগুলো ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল ।সেই পটল গুলো একটা মিক্সার গ্রাইন্ডার নিয়েছি সাথে ভেজে রাখা কালোজিরা ,কাঁচালঙ্কার, রসুন দিয়ে একসাথে খুব ভালো করে পেস্ট করে নিতে হবে। আমি পেস্ট করার সময় জল ব্যবহার করিনি।
অষ্টম ধাপ
এবারে ওই পটলের পেস্টটা কড়াইতে দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করতে হবে। পটলের মধ্যে পরিমাণ মতো লবণ ,হলুদ এড করে দিয়েছিলাম। যতক্ষণ না পটল একটু শুকনো শুকনো হবে ততক্ষণ কড়াইতে নাড়াচাড়া করতে হবে।
নবম ধাপ
ওই তুলে রাখা শুকনো লঙ্কা হাতের সাহায্যে খুব ভালো করে মিহি করে গুঁড়ো করে নিতে হবে ।ওই শুকনো লঙ্কাটা এবারে পটলের মধ্যে অ্যাড করে দিতে হবে।
দশম ধাপ
এবারে খুব সামান্য পরিমাণে চিনি এড করে দিয়েছি। চিনি আপনারা চাইলে দিতে নাও পারেন।
তৈরী
এবার কড়াই থেকে নামিয়ে তৈরি হয়ে গেল আমার পটল ভর্তা রেসিপি।
রেসিপিটি খুব সহজেই তৈরি করা যায়। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমি রেসিপিটি তৈরি করেছিলাম। এমন কোন বেশি উপকরণও ব্যবহার করিনি। কিন্তু খেতে অসাধারণ হয়েছিল। আমি পটল একদমই অপছন্দ করি। তবুও আমার খেতে খুবই ভালো লেগেছিল। রোজ রোজ একঘেয়েমি পটলের তরকারি বাড়িতে না রান্না করে এইভাবে রান্না করলে খেতে ভালোই লাগে। আপনারাও বাড়িতে রেসিপিটি ট্রাই করতে পারেন। আশা করি সকলেরই ভালো লাগবে। ভিডিও লিংক দেওয়া থাকলো আপনারা চাইলে দেখতে পারেন।
আজ এই পর্যন্তই ।আবার নতুন কোন রেসিপি নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে। সকলে ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।
ওয়াও এটা অনেক সুন্দর একটি রেসিপি পটলের ভর্তা আমার অনেক প্রিয় কিন্তু কখনো এমন করে ভর্তা বানিয়ে খাওয়া হয়নি তো আপনার রেসিপিটি আমি ফলো করে রাখলাম অবশ্যই আপনার মত করে আমিও পটল ভর্তা করব এবং আপনার এই রেসিপিটি অনেক সুন্দর হয়েছে দেখে অনেক লোভনীয় লাগছে আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন