Better Life with Steem|| The Diary Game||21 - July-2025||
![]() |
---|
Made by Canva |
Hello,
Everyone,
গত পোষ্টে বলেছিলাম ,আমার বাবা-মা আসবেন। তারা ২০ তারিখ বিকেল বেলা আমার বাসায় আসলেন। ২১ তারিখ মেয়ের কলেজ ছুটি থাকবে তাই ভাবছি ,২১তারিখ থেকে বাবার ডাক্তার দেখানো শুরু করব ।
সবাই ব্যস্ত থাকে তাই বাবাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে আমাকে যেতে হবে। মেয়ের যেদিন কলেজ ছুটি থাকবে সেদিন বাবাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাব। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলাম ।বাবাকে আজ দাঁতের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব।
![]() |
---|
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সকালের প্রার্থনা করে নিয়েছি। ওদের জন্য সকালের নাস্তা বানিয়ে নিলাম । যত তাড়াতাড়ি CMH যেতে পারবো তত তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখাতে পারবো।বাবার দুটো দাঁতে সমস্যা। একটি দাঁত ভেঙে পড়ে যাচ্ছে আর একটি ফিলিং করানো হবে। একটি দাঁত ফেলাবে এবং অন্যটি রুট ক্যানেল করবে।
বাবার এছাড়াও অন্য অনেক সমস্যা আছে। চোখে সমস্যা আছে, ডায়াবেটিস আছে। বাবা এতটা অসুস্থ ছিলেন না। তার চাকরি জীবনে সে অনেক পরিশ্রমী ছিলেন। অফিসের হিসাব থেকে শুরু করে আমাদের প্রতিটা ভাইবোনের প্রতি যত্ন নিয়েছেন, এমনকি গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আমাদের ভাড়াটিয়ার খোঁজখবর রাখতেন ।
যে এত পরিশ্রম করতে পারতেন সে হঠাৎ একদম নরম হয়ে গেছে ।বাবার বয়স ৭০ বছর হবে। সারা জীবন অনেক কষ্ট করেছেন চাকরি থেকে অবসরে এসে, সে কোথায় সন্তান, নাতি- নাতনিদের সাথে আনন্দে সময় কাটাবে তা না !এখন তার শরীরে নানা অসুখ বাসা বেঁধেছে।
![]() | ![]() |
---|
আমার সাধ্যমত চেষ্টা করছি তাদের সেবা যত্ন করার। বাবা যেহেতু চোখের অপারেশন করাবে তাই ভাবছি,প্রথমে দাঁত ফেলে দিয়ে কিছুদিন বিশ্রাম নিয়ে সুস্থ হবে,তারপরে চোখের ডাক্তার দেখাবো। আমরা ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করছি। ডাক্তার বাবার দাঁত দেখে অনেকগুলো টেস্ট দিলেন, দাঁতের এক্সে দিলেন, ব্লাড টেস্ট দিলেন। সেগুলোর রিপোট নিয়ে আগামীকাল ডাক্তারের সাথে দেখা করতে বলেছে ।
বাপীর ডায়াবেটিস যদি নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে আগামীকাল দাঁত ফেলানো যাবে। আমি প্রার্থনা করছি “বাপীর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে যেন”। ডাক্তার দেখানো শেষে আমরা ক্যান্টিন থেকে হালকা খাবার খেয়ে নিয়েছি । বাসায় আসতে দুপুর ১:৩০ বেজে যায়। অনেক ক্লান্ত ছিলাম তাই ছোপার উপর বসে কিছুটা সময় বিশ্রাম নিচ্ছি। হাতের কাছে টিভির রিমোট পেয়ে, টিভি অন করতেই চোখের উপরে ভেসে উঠে ,রাজধানী ঢাকা শহরের উত্তরায় ”মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের উপরে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষন যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।
Youtube Link |
আমি হতভাগ হয়ে গেলাম। প্রাইমারি সেকশনে পড়েছিল, সেখানে নার্সারি থেকে শুরু করে সপ্তম-অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা আছে। ছোট ছোট কোমলমতি শিশুদের ছুটির ঘন্টা বাজলো। বাচ্চারা বাসায় যাওয়ার জন্য স্কুল থেকে বের হবে ঠিক এমন সময় প্রশিক্ষণ যুদ্ধ বিমানটি বিকট শব্দ করে বিধ্বস্ত হয়েছে ।নিমেষে আগুন লেগে যায় এবং অনেক শিশুর প্রাণ সেখানে নিভে যায়।
এ যেন তাদের ছুটির ঘন্টা নয় তাদের জীবন বাতী নিভে যাওয়ার ঘন্টা । যারা আহত হয়েছেন তাদের অবস্থা আর শোচনীয় ।আমার ঠিক জানা নেই ”কত মায়ের কোল খালি হয়েছে আজ”। শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রাণপণ চেষ্টা করছে তাদের ছোট ছোট শিশুদের কে বাঁচানোর জন্য ।বিমান বাহিনীর দল, পুলিশ, সেনাবাহিনী , ফায়ার সার্ভিস ,সাধারন জনগন মিলে চেষ্টা করছেন ”যদি একটা প্রাণ বাঁচান যায় ”।
আগুন নিভে গেল তার সাথে সাথে ছোট্ট ছোট্ট প্রাণ গুলো নিভে গেল। কিছুই বুঝতে পারছিনা । মা বলছিল ,ফ্রেশ হয়ে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে । আমি যেন উঠতে পারছিলাম না ,আমার সমস্ত শরীর যেন অবশ হয়ে যাচ্ছে । সাধারণত আমরা গরম চায়ে জিভ পুড়ে যাওয়ার ভয়ে ফু দিয়ে চা পান করি। সেখানে বাচ্চাগুলো আগুনে পুড়ে কত কষ্ট পেয়ে মারা গেছে এবং যারা বেঁচে আছে , তারা বেঁচে থাকার জন্য মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে।
সৃস্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি, কোমলমতি শিশুদের সুস্থ করে দিক। কিছুদিন আগে ভারতের যাত্রীবাহী বিমান একটি মেডিকেল কলেজের উপরে বিধ্বস্ত হয়েছে । পর পর এই দুটি ঘটনা দেখে আমি মানসিক ভাবে ভেঙে পরেছি।
কিছু মানুষ আছেন যারা সাহায্যের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেয় । আর কিছু সুবিধাবাদী মানুষ আছে, যারা এই দৃশ্য দেখেও সাহায্যের হাত না বাড়িয়ে মোবাইল নিয়ে ছবি তোলার জন্য ব্যস্ত থাকতে। তারা ভিডিও করছে। ছোট্ট একটি বাচ্চা আগুনে পুড়ে যাওয়া শরীর নিয়ে হাটছে আর বলছে আমাকে বাঁচাও ,আমাকে বাঁচাও। কিন্তু কেউ বাঁচাতে আসেনা শুধু ভিডিও করতে ব্যস্ত ।
![]() |
---|
আরো একটি কষ্টের বিষয় হলো ,যখন বাচ্চাগুলোর জন্য পানি কিনতে তাদের অভিভাবকরা ঘটনাস্থলের দোকান গুলোতে যায় , সেই বিক্রেতা ২ লিটার পানির মূল্য রাখে ৬০০ টাকা । যেখানে ২ লিটার পানির মূল্য মাত্র ৫০ টাকা হবে্।
আমার সারাদিন সেই মর্মান্তিক দৃশ্যগুলো যেন চোখের সামনে ভাসছে। তবে সেই সন্তানের বাবা মায়ের কি অবস্থা। ডাক্তারের চোখে জল এসে যায়। এর আগে কক্ষনো এতগুলো শিশু একত্রে আগুনে দগ্ধ হয়নি । এমন দুর্ঘটনা যেন আর দ্বিতীয়বার না ঘটে সেটাই সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি। আজ আর কিছুই লিখতে পারছি না ,এখানেই বিদায় নিচ্ছি ।
Thank you, Sir.