রাখি পূর্ণিমা (শেষ পর্ব)
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আরও একটি নতুন ব্লগ শেয়ার করার জন্য। বেশ কয়েকদিন আমি আপনাদের নতুন কোন গল্প শেয়ার করতে পারিনি কারণ আমার কলেজে পরীক্ষা চলছিল। আর পরীক্ষাগুলো যেহেতু পরপর ছিল তাই মাঝে অতিরিক্ত সময় পাইনি। গতকাল পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে তাই এবার থেকে আবার আপনাদের সাথে আগের মতই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করবো। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
আপনাদের সাথে রাখি পূর্ণিমার দিনের সকালের গল্প আগেই শেয়ার করেছিলাম। আজ আপনাদের সাথে সেই দিনের পরবর্তী পর্ব শেয়ার করব। সেই দিন দুপুর তিনটের সময় আমার পড়ানো ছিল। আমি পড়াতে যাবার সময় আমার ভাইপো আমাকে বলছিল, "তোমাকে আমি যেই রাখিটা পরিয়েছি, সেটা পরেই পড়াতে যাবা।" সেই মতো আমিও ওর পরানো রাখিটা পরেই পড়াতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি আর এক কান্ড। বাচ্চা দুটো ইতিমধ্যে রাখি নিয়ে প্রস্তুত আমাকে পরাবে বলে। আমিও এই বিষয়ে আগে থেকেই অনুমান করছিলাম। তাই পড়াতে যাওয়ার পথে আমিও কতগুলো ১০ টাকা দামের dairy milk কিনে নিয়েছিলাম। কারণ বাচ্চাগুলো আমাকে রাখি পরাবে আর আমি ওদের কিছু দেব না এটা ভালো লাগে না। তারপর ওরা দুজন আমাকে রাখি পরিয়ে দিল। আর আমি ওদেরকে চকলেট দিলাম। তারপর ওদের মা আমাকে মিষ্টি খেতে দিয়েছিল। যদিও সেটা আর ক্যামেরাবন্দি করা হয়নি।
এরপর ৫ টা থেকে আবার পড়ানো ছিল। সেখানে যথা সময়ে চলে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়েও দেখি একই কাণ্ড। সেই বাড়ির দুটো স্টুডেন্টই আমাকে রাখি পরিয়ে ছিল। আর আমি ওদের চকলেট দিয়েছিলাম। এরপর আমি পড়ানো শুরু করেছিলাম। পড়ানোর মাঝে ওদের মা এসে আমাকে লুচি, আলুর দম, মিষ্টি দিয়ে গিয়েছিল। ছয়টা লুচি দিয়েছিল।তবে আমার খিদে না থাকায় আমাকে দুটো লুচি দিতে বলেছিলাম। তবে শেষমেশ তিনটে খেতেই হয়েছিল।
এরপর পড়ানো শেষ হলে বাড়িতে চলে এসেছিলাম। তবে এখানেই শেষ নয়। ছোটো থেকে আমি আমার নিজের দাদাকে ছাড়া আর কাউকেই কখনো রাখি পরাই না বা ভাইফোঁটাও দিইনা। তবে ১০ বছর আগে যখন এই পাড়ায় এসেছিলাম তখন, আমাদের বাড়ির সামনের বাড়িতে যে দাদা বৌদি আছে তাদের সাথে এক ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই দাদারও বোন আছে তবে বিয়ে হয়ে গেছে তাই প্রতিবছর আসতে পারে না। তবুও আমি নিজে থেকে কখনো রাখি পরাইনি। হবে কয়েক বছর আগে দাদা নিজেই একটা রাখি এনে আমাকে বলেছিল," বুনু এটা পরিয়ে দাও তো।"
সেটা আমার খুব খারাপ লেগেছিল। তাই তার পর থেকে আমি প্রতি বছরই ওই দাদাকেও রাখি পরাই ও ভাইফোঁটা দিই। তবে সেটা রাতেই করা হয়। কাজ থেকে বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়ে তারপর রাখি পরে। এই বছরও তার অন্যথা হয়নি। আমিও পড়িয়ে রাতে বাড়ি ফিরি ও দাদাও তার থেকে ফিরে রেডি হয়ে যায়। তারপর রাখি আর মিষ্টি নিয়ে ওদের বাড়ি চলে যাই।
এরপর রাখি পরিয়ে দিই। মিষ্টি খাওয়ায়। তারপর রাতে বৌদি লুচি বানিয়ে ছিল, সেটিও দিয়ে এসেছিলাম। তবে আর ফটো তোলা হয়নি। আর এই দিনে বোনরা গিফ্ট পাবে না তা আবার হয় নাকি। আমার দাদা আমাকে ৫০০ টাকা দিয়েছিল। আর সামনের বাড়ির দাদা ২০০ টাকা দিয়েছিল। সেই সাথে অনেক আশীর্বাদ করেছিলাম।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।