বাবার (শ্বশুরমশাই -এর) জন্মদিন
নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আরও একটি নতুন ব্লগ শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে। প্রতিদিন নতুন নতুন গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতে আমারও বেশ ভালো লাগে।
গত ১ম আগস্ট ছিল আমার শ্বশুরমশাইয়ের জন্মদিন। যদিও আমার ও শুভায়নের এখনো সামাজিক বিয়ে সম্পন্ন হয়নি, তবুও রেজিস্ট্রি ম্যারেজ হওয়ার পর থেকেই ওর বাবাকে আমি বাবা বলেই ডাকি। যদিও প্রথম প্রথম ডাকতে একটু কেমন লাগতো, তবে ডাকা প্র্যাকটিস না করলে পরে হয়তো আরোই ডাকতে পারব না। ২০১০ সালে বাবাকে হারানোর পর থেকে তো ওই ডাকটা আর কখনোই উচ্চারণ করা হয়নি, তাই 'বাবা' ডাকটার প্রতি একটা গভীর আকর্ষণ রয়েছে। যাইহোক, মূল গল্পে ফেরা যাক।আমার ঠাকুরমা শাশুড়ি, মানে শ্বশুর মশায়ের মা এখনো জীবিত আছেন। কয়েক বছর আগে পর্যন্তও তিনিই বাবাকে ওনার জন্মদিনে পায়েস ও দুপুরের নানা রকমের খাবার রান্না করে খাওয়াতেন। তবে তিন চার বছর হল তিনি বার্ধক্যের কারণে সে সব আর করে উঠতে পারেন না। এখন উনি অত কিছু মনে রাখতে পারেন না। তাই শ্বাশুড়ি মা এই কয়েক বছর বাবার জন্মদিনে, ওনাকে অল্প কিছু রান্না করে খাওয়ান। তাই এই বছর আমরা বৌমা শাশুড়িতে প্ল্যান করেছিলাম সন্ধ্যেবেলায় কেক কাটার ব্যবস্থা করব। জন্মদিনের সন্ধ্যের কিছু গল্প নিয়ে আজ আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি।
প্রথমে ভেবেছিলাম আমি দুপুর বেলাতেই ওদের বাড়িতে গিয়ে মামনিকে কাজে হেল্প করে দেব। তবে সমস্ত বাচ্চাদের পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে, সেই সাথে আগামী ১২ তারিখ থেকে আমারও পরীক্ষা শুরু হচ্ছে তাই আমি আর কোনভাবেই সময় করে উঠতে পারিনি। যে কারণে দুপুরবেলায় আমার আর যাওয়া হয়নি। মামনি নিজেই একা একা সমস্ত আয়োজন করে বাবাকে দুপুরবেলায় খেতে দিয়েছিল। যদিও যেহেতু তখন আমরা কেউ বাড়িতে ছিলাম না তাই ফটো তুলে রাখা হয়নি। আমি গিয়েছিলাম রাতে সাড়ে সাতটার দিকে। শুভায়ন আমাকে আনতে গিয়েছিল। আমি পড়িয়ে, পড়ানোর বাড়ি থেকেই একবারে ওদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম। যাওয়ার পথে 'মন জিনিস' নামে একটা কেকের দোকান থেকে পছন্দমত একটা কেক কিনে নিয়েছিলাম। কেকটার দাম নিয়েছিল ৩৮০ টাকা, মানে ৩১ স্টিম মতো। কেক কিনে আমরা সোজা চলে গিয়েছিলাম ওদের বাড়ি। যাওয়ার পথে বৃষ্টি নেমে গিয়েছিল। অল্প ভিজেও গিয়েছিলাম।
কাউকেই তেমন আমন্ত্রণ করা হয়নি। শুভায়ন এর মামার বাড়ি যেহেতু ওদের বাড়ির কাছাকাছিই, তাই ওর দুই মামা ও মামিদের বলা হয়েছিল সেই সাথে ওর মাসিদেরও বলা হয়েছিল। বাড়ির যেকোনো ছোটখাটো অনুষ্ঠানে এই কয়জন মানুষ আসেই। আমি কেক নিয়ে গেছি দেখে বাবা একটু লজ্জায় পেয়েছিল। লজ্জা পেলেও মনে মনে কিন্তু খুশিও হয়েছিল। গত বছর মামনির জন্য মামনির জন্মদিনে কেক ও পায়েস নিয়ে গিয়েছিলাম তাই বাবা নাকি মাকে বলেছিল,"সবাই তোমার জন্মদিনই সেলিব্রেট করে, বাবার কথা কারোর মনেই থাকেনা।" তাই মুখে যাই বলুক না কেন, আমাদের এই ছোট্ট আয়োজনে উনি খুব খুশি হয়েছিলেন। তারপর কেক কাটার ব্যবস্থা করা হয়। বাবাকে কাটে আর আমরা সবাই বাবাকে হ্যাপি বার্থডে উইশ করি।
এরপর আমরা সবাই বাবাকে কে খাইয়ে দিই। বাবাও সবাইকে কেক খাইয়ে দিচ্ছিল । আমরা দুই কপোত কপতি কে, মানে মামনি আর বাবাকে পাশাপাশি বসিয়ে দুটো ফটো তুলে নিয়েছিলাম। কারণ দুজনের কেউই খুব বেশি ফটো তুলতে পছন্দ করে না।
এর পর এলো রাতের খাওয়ার এর পালা। রাতের খাবারে ছিল ভাত/রুটি/ফ্রাইড রাইস ও মটন/চিকেন, মিষ্টি, আইসক্রিম, পায়েস। এই ছিল আমাদের ছোট্ট আয়োজন। যদিও আমার কাছে খাবারের ফটো বিশেষ তোলা নেই। তবে একটা ভিডিও ছিল সেখান থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে দুটো ফটো আমি শেয়ার করছি। মামনি একাই সমস্ত কিছুর আয়োজন করেছিল। একটু সাহায্য করতে পারলে ওনারও ভালো লাগতো, তবে সেইদিন কোনমতেই ছুটি নেওয়া সম্ভব হতো না। যাইহোক খুব সুন্দর ভাবেই আমরা আমাদের ছোট্ট প্রয়াসটাকে সফল করেছিলাম। মামনি কাছ থেকে পরে শুনেছি উনি খুব খুশি হয়েছে। এরকম ছোট্ট ছোট্ট আনন্দ সব সময় উপভোগ করা উচিত।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
Curated by: chant