বান্ধবীর বাড়ির পুজো
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আরও একটি গল্প শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
আমরা সকলেই জানি, "বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ।" একটা উৎসব যাই তো তার পিছু পিছু আর একটা উৎসব এসে হাজির হয়। ঠিক তেমনই কিছুদিন আগেই শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবারে মহাদেবের মাথায় জল ঢালা কে কেন্দ্র করে এক বিরাট উৎসব গেল। তারপরেই এসে হাজির হলো জন্মাষ্টমী। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম দিবস উপলক্ষ্যে এই জন্মাষ্টমী পালিত হয়ে থাকে। এই বছর জন্মাষ্টমীর বেশ কয়েকটি নিমন্ত্রণ পেয়েছিলাম। তার মধ্যে আছে একটি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
প্রথম যে নিমন্ত্রণ দিয়ে রক্ষা করেছিলাম সেটা ছিল আমার এক বান্ধবীর বাড়িতে। এই বান্ধবীটি আমার ছোটোবেলার বান্ধবী। আমার বাড়ি থেকে তাদের বাড়ির দূরত্ব খুব বেশি না হওয়ায় যেতে বিশেষ সময় লাগে না। তাই সবার প্রথমে ওদের বাড়িতেই চলে গিয়েছিলাম। প্রতিবছরই এই দিনটিতে ওদের বাড়িতে বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে পুজো করে। আমরা সব বান্ধবীরা সেখানে আমন্ত্রিত থাকি। সব বান্ধবী মানে আমাদের ছোটবেলার বান্ধবী। এদের সাথে সচরাচর দেখা সাক্ষাৎ হয় না কিংবা ফোনেও বিশেষ কথা হয় না। তবে অনেকদিন পর পর দেখা হলে মন উজার করে আমরা একে অপরের সুখ দুঃখের গল্প ভাগ করে নিই। মনেই হয় না যে অনেকদিন পরে দেখা হল।
আমি তো সবার প্রথমে গিয়ে হাজির হয়েছিলাম। তারপর একে একে বাকিরাও উপস্থিত হয়েছিল। তারপর ঠাকুর প্রণাম করে কিছুক্ষণ সেখানে পুজো দেখছিলাম। আমি যখন দিয়েছিলাম তখন পুরোহিত মশাই পুজো করছিলেন। তারপর একে একে বাকি বান্ধবীরা এসে হাজির হলো। সবাই মিলে কিছুক্ষণ পূজো উপভোগ করলাম। তারপর পুজো সম্পন্ন হল।
ঠাকুর মশাই চলে যাওয়ার পরেও, আরো কিছু নিয়ম কানুন ছিল, সেগুলো বাড়ির সকলে পালন করছিল। ঠাকুরের সিংহাসন থেকে শুরু করে, পুরো ঠাকুর ঘর টাই খুব সুন্দর করে সাজিয়েছিল। সেই সাথে গোপাল ঠাকুরের যা যা পছন্দের খাবার সবই প্রসাদে রাখা হয়েছিল। পুজো ব্যাপারটা আমার খুব পছন্দের। কিছুক্ষণ ভক্তি করে পুজো করলে কি সুন্দর মনটা হালকা হয়ে যায়। মনের সব দুঃখ কষ্ট কোথায় যেন দূর হয়ে যায়। তবে এখন বিভিন্ন কাজের মধ্যে আমার পুজো দেওয়ার সময় হয় না, তাই বাড়ির পুজো বৌদিই দেয়। তবে মন থেকে আমি ঠাকুরকে অনেক স্মরণ করি।
পুজো শেষ হলে সব বান্ধবীরা একজোট হয়ে বেশ অনেকক্ষন গল্প করলাম। সেই গল্পের টপিকে কোন বিষয়টি ছিল না সেটাই বলা মুশকিল। ধর্ম-রাজনীতি-সংসার-সমাজ কত না বিষয় ছিল। বেশ কয়েকটি বান্ধবী কিছুদিন আগেই বিয়ে হয়েছে, তাদের সাংসারিক জীবন কেমন চলছে সেই বিষয়েও বিস্তর আলোচনা চললো। তার ওপরে আমি আর কয়েকটা এর মধ্যেই এই সংসার জীবনে প্রবেশ করতে চলেছি তাই বিবাহিত বান্ধবীরা কত না পরামর্শ দিচ্ছিল।
অনেকক্ষণ গল্প গুজব করার পর বান্ধবীর মা মানে কাকিমা আমাদের সকলের জন্য প্রসাদ নিয়ে এলো। আমরা প্রসাদ খেলাম। রাতে আবার খিচুড়ি প্রসাদের ব্যবস্থা ছিল।
এইভাবেই সকলে মিলে একটা সুন্দর সময় কাটিয়েছিলাম। আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।