আমার স্টুডেন্ট-এর আঁকা কিছু ছবি

in Incredible India8 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে অন্য একটি নতুন ব্লগ শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।

যারা নিয়মিত আমার পোস্ট করেন তারা জানেন যে আমি একজন গৃহ শিক্ষিকা। তাই প্রতিবছরই এমন হয় যে কিছু স্টুডেন্টের সাথে আমার টাইমের ম্যাচ হয় না বা আমার কোনো সমস্যা থাকে বা তাদের কোনো সমস্যা থাকে, যার ফলে দু একটি স্টুডেন্টকে ছেড়ে দিতে হয়। আবার নতুন কিছু স্টুডেন্ট ভর্তি হয়। এইরকম ভাবেই বছরের পর বছর চলছে। বাংলা মিডিয়াম স্টুডেন্টদের যদিও জানুয়ারি মাস থেকেই নতুন সেশন শুরু হয়, তবে এই বছর মার্চ মাস নাগাদ আমি একটি নতুন স্টুডেন্ট পাই। যদিও সেই স্টুডেন্টটির বাড়ি আমার বাড়ি থেকে অনেকটাই দূরে, সাইকেলে যেতে আমার প্রায় ৩০ মিনিট সময় লেগে যায়। তবুও আমি পড়ানোটা তে ধরেছিলাম কারণ ওটা আমার শ্বশুর বাড়ি থেকে কাছেই হবে। যেহেতু বিয়ের পরেও আমি পড়ানো একেবারে ছেড়ে দিচ্ছি না, কিছু স্টুডেন্টকে পড়াবো, তাই শ্বশুরবাড়ি থেকে কাছাকাছি দূরত্বে স্টুডেন্ট এর বাড়ি হলে ভালোই হয়। তাছাড়া পরের বছর আমার বাড়ির কাছাকাছি যে স্টুডেন্ট গুলো রয়েছে তাদেরকে ছেড়ে দিতে হবে কারণ শ্বশুর বাড়ি থেকে ডিস্টেন্সটা অনেকটাই বেশি হয়ে যাবে। তাই ওই স্টুডেন্টটি কে পড়ানো ধরেছিলাম। আজকে আমার ওই স্টুডেন্টের আঁকা কিছু ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

1000282709.jpg

আমার এই ছাত্রীটি ক্লাস থ্রিতে পড়ে। আমি ওকে শুধু ইংরেজি পড়ায়। সপ্তাহে দুটো দিন আমিও ওদের বাড়িতে পড়াতে যাই। বাচ্চাটি পড়াশোনায় বেশ ভালো। যদিও প্রথম প্রথম আমার সাথে একদম কথা বলতো না। আমি গুড মর্নিং বলেও তার কোন রিপ্লাই পেতাম না। তবে এখন কথার ফুলঝুরি ছোটে। তার বাবা-মা আমাকে আগেই বলেছিল তাদের বাচ্চা সবার সাথে খুব তাড়াতাড়ি মিশে যেতে পারে না, একটু সময় লাগে। তাই আমি যেন তার সাথে একটু বেশি করে কথা বলি এবং তাকেও কথা বলতে আগ্রহী করে তুলি। যাইহোক, এই কয় মাসে সেই উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। এখন পড়ানো শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও তার কথা শেষ হয় না। আমি ঘর থেকে বেরিয়ে সাইকেল নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যাই তবুও পাঁচিলের ভিতর থেকে তার গল্প চলে। শেষে আমাকে বলতে হয়," আজ এইটুকুনি থাক, বাকি গল্প পরের দিন শুনবো। কারণ ওকে পড়িয়ে আমার আবার পড়ানো থাকে।

1000282724.jpg
বেশ কয়েক মাস হল ও ছবি আঁকা শিখছে। তাই প্রায়ই ছবি আঁকা নিয়ে আমার সাথে বিভিন্ন গল্প করে। গল্প শুনেই বুঝতে পারি ছবি আঁকতে ভীষণ ভালোবাসে। তাই গতকাল যখন পড়াতে গিয়েছিলাম তখন ও এই ছবি আঁকা প্রসঙ্গে ও ওর ড্রয়িং খাতাটা এনে আমাকে দেখালো। দেখলাম কয়েক মাসের বেশ ভালোই আয়ত্ত্ব করেছে। তাই ভাবলাম ড্রয়িং খাতার কিছু ছবি আপনাদের সাথেও শেয়ার করি। তাই কয়েকটি ছবির ফটো আমি তুলে নিয়েছিলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ওর কাছে একটা ড্রয়িং বই আছে যেটা এই বছরের বই মেলা থেকে কিনেছিল। সেই বই দেখে দেখে ও এই ছবিগুলো এঁকেছে। তার সাথে ও ড্রইং স্যারও ওকে খানিকটা গাইড করেছে।

1000282726.jpg
অনেকদিন ধরেই ও আমাকে বলছিল ও যামিনী রায়ের একটা ছবির বই কিনবে। তাই বহুবার দোকানে গিয়েছে তবে সেই বইটি ও পাইনি। দোকানে অর্ডার দেওয়ার পরেও প্রায় এক মাস ঘুরতে হয়েছে বইটা পাওয়ার জন্য। তারপর অবশেষে গত দুই দিন আগে বইটা হাতে পেয়েছে। হাতে পাওয়া মাত্রই সেখান থেকে একটি ছবি ও নিজে নিজে এঁকেছে। দেখলাম একা একা বেশ ভালোই এঁকেছে। দেখে জিজ্ঞাসা করলাম,"সম্পূর্ণটাই একা একা এঁকেছিস নাকি স্যার এসে একটু হেল্প করেছে?" তখন বলল," আমি তো এখনো যামিনী রায়ের ছবি আঁকা শিখিনি, তাই চোখ গুলো ভালো পারছিলাম না, তাই স্যার একটু হেল্প করে দিয়েছে।" যামিনী রায়ের ছবি ব্যক্তিগতভাবে আমার খুব পছন্দের। তাই খুব আগ্রহের সাথেই আমি ছবিটা তুলেছিলাম। চলুন আপনাদের সাথেও সেই ছবিটি শেয়ার করি।

1000282731.jpg

ও পোষ্য প্রাণীর খুব পছন্দ করে। ওদের বাড়িতেও একটি পোষ্য বিড়াল আছে। ওই বিড়ালটিকে ও খুব ভালোবাসে। তাই মোবাইল দেখে ও একটি ছবি এঁকেছে। ছবিটি দেখিয়ে আমাকে বলল, " এটা আমি, আর আমার টুসু রানী।" ওর পোষা বিড়ালের নাম টুসু। আমার ছবিটা বেশ ভালো লেগেছিল।

1000282736.jpg

আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ‌। আর অবশ্যই জানাবেন আপনাদের কোন ছবিটি সবচেয়ে বেশি ভালো লাগলো।

Sort:  
 8 days ago 

Thank you so much.

Loading...