রাখি বন্ধন উৎসব পালন ( প্রথম পর্ব)

in Incredible India15 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে নতুন একটি গল্প শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।

গতকাল ছিল পবিত্র রাখি বন্ধন উৎসব। এটি হিন্দু সংস্কৃতির একটি জনপ্রিয় এবং প্রাচীন উৎসব। এই উৎসবটি প্রতিবছর শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হয়ে থাকে। এই দিনে সব বোনেরা তাদের ভাই কিংবা দাদার হাতে পবিত্র রাখি কিংবা সুতো বেঁধে দেয়। এতে ভাই বোনের সম্পর্ক অটুট থাকার প্রতিজ্ঞা করা হয়। সেই সাথে ভাইয়েরা বা দাদারা বোনদের বা দিদিদের সুরক্ষা বা নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এইভাবেই বহু বছর ধরে এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে।

পুরাণ এবং মহাকাব্যে এই রাখি বন্ধন উৎসবের সমতুল্য বিভিন্ন গল্প বা কাহিনী প্রচলিত আছে। তার মধ্যে কয়েকটি আপনাদের সাথে আলোচনা করব----

  • মহাভারতে বলা আছে, একদা কৃষ্ণের আঙুল কেটে গেলে দ্রৌপদী তার বস্ত্র ছিঁড়ে কৃষ্ণের আঙ্গুল বেঁধে দেন। সেইদিন থেকে কৃষ্ণ দ্রৌপদীকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন।
  • প্রাচীনকালে ঋষিরা যজ্ঞের শেষে ব্রাহ্মণ এবং অতিথিবর্গের হাতে রক্ষা সুতো বেঁধে আশীর্বাদ করতেন।
  • তাছাড়া আধুনিক যুগে এই রক্ষা বন্ধন উৎসব বা রাখিবন্ধন উৎসবের প্রচলন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯০৫ বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিন্তু ও মুসলমানের মধ্যে একতা এবং ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার জন্য একে অপরের হাতে রাখি পরিয়ে রাখি বন্ধন উৎসবের প্রচলন করেছিলেন। যা বর্তমানে ভাই-বোন এর রক্ষার সম্পর্কে পরিণত হয়েছে।

আজ আমি আপনাদের সাথে আমাদের বাড়ির রাখি বন্ধন উৎসবের কিছু গল্প শেয়ার করব।

1000287163.jpg

ছোট থেকেই এই দিনে আমরা তেমন কোনো আড়ম্বর করি না। অনেকে এই দিনে উপোস করে তাদের ভাইদের বা দাদাদের হাতে রাখি পরান। তবে ছোট থেকে আমি কখনো এই দিনে উপোস করি না। আসলে আমি দাদার থেকে মাত্র দুই বছরের ছোট। তাই আমাদের মধ্যে ভালোবাসা কম, মারামারির সম্পর্ক ছিল বেশি। তাই ছোট থেকেই দেখতাম দাদা কোনদিন উপোস করতো না এই দিনে, যার ফলে আমিও খামোখা আর উপোস করতাম না। আমাদের সম্পর্ক এখন আর মারামারির নেই, তবে উপোস করা আর হয়ে ওঠে না।

যাইহোক, আমি সকালবেলায় আমার ভাইপোকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে রাখি ও মিষ্টি কিনে এনেছিলাম। তারপর দুপুরবেলায় স্নান করে দাদা ও ভাইপো দুজনেই বসে পড়েছিল। তারপর আমি ওদের দুজনকেই রাখি পরিয়ে দিয়েছিলাম।

1000287165.jpg

তারপর ভাইপো মিষ্টি খাওয়ার জন্য বায়না করছিল। তাই ওকে আগে ওর পছন্দমত মিষ্টি খাইয়ে দিয়েছিলাম। যেহেতু সকালবেলায় আমার সাথে বেরিয়ে মিষ্টি কিনতে গিয়েছিল তাই আগে থেকেই নিজের পছন্দমত মিষ্টি বেছে রেখেছিল।

1000287168.jpg

তারপর এল গিফ্ট নেওয়ার পালা। দাদা আমাকে ৫০০ টাকা দিয়েছিল। আমিও দাদাকে একটা মানিব্যাগ উপহার দিয়েছিলাম। আর ভাইপো কে একটা জামা কিনে দিয়েছিলাম। গিফ্ট পেয়ে সে তো বেজায় খুশি। সবশেষে আমরা সবাই মিলে কয়েকটা ফটো তুলে নিয়েছিলাম।

1000287170.jpg

এইভাবেই রাখি পূর্ণিমার প্রথম পর্ব কেটেছিল। আগামী পর্ব আপনাদের সাথে অন্য কোন পোস্টে শেয়ার করব। আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

Sort:  
Loading...