বৃষ্টির দিনে জরুরী কাজে কলেজে যাওয়া

in Incredible India9 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আরো একটি নতুন দিনের ব্লগ শেয়ার করার জন্য আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।।

এখন বর্ষাকাল। তাই মাঝে মাঝেই মুষলধারে বৃষ্টি নামছে। আকাশে এই রোদ্দুর আবার কিছুক্ষণ পরেই মেঘের খেলা। এর আগের একটি পোস্টে তো আপনাদের দেখেছিলাম আমাদের এখানে একটু বেশি বৃষ্টি হলে কিরকম জল জমে যায়। কয়েকদিন আগেও ঠিক একই রকম হবে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। তবে সেই দিন একটা বিশেষ দরকারে আমাদের কলেজে যেতেই হত। আজকে আপনাদের সাথে সেই বৃষ্টির দিনে কলেজ যাওয়ার অভিজ্ঞতায় শেয়ার করব।

1000281803.jpg

যেহেতু বৃষ্টির জন্য বাড়ির সামনে জল জমে গিয়েছিল, তাই বাড়ি থেকে বেরোনোর পর কলেজের ইউনিফর্মের প্যান্ট অনেকখানি গুটিয়ে গলির রাস্তাটুকু পেরোতে হয়েছিল। জানেন, আগে কিন্তু বাড়ির সাথে এই রকম জল জমত না। বাড়ির সামনে একটা বাড়ি রয়েছে, ঠিক তার পিছনেই ছিল একটা পুকুর। বর্ষার জল পুরোটাই সেই পুকুরে গিয়ে পড়তো। তবে সম্প্রতি সেই পুকুরটি বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু আইনত কোনো জলাশয় এইভাবে বুজিয়ে ফেলার নিয়ম নেই। কারন একটা জলাশয় কে কেন্দ্র করে অনেক জলজ প্রাণীর বসবাস করে। সেই জলাশয় কে কেন্দ্র করেই একটা বাস্তুতন্ত্র গঠিত হয়। তাই জলাশয় বুজিয়ে ফেললে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বিনষ্ট হয়। তবে আমাদের পাড়ার মানুষের মধ্যে একতা এতটাই কম যে যখন পুকুরটি বুজিয়ে ফেলা হচ্ছিল তখন একজোট হয়ে কেউই প্রতিবাদ করেনি। এইসব কাজে একা প্রতিবাদ করে কোনো কাজ হয় না। তাই আমরাও চুপ করেই ছিলাম। যাই হোক, যার ফলস্বরূপ এখন আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

1000271318.jpg

সেই জল পেরিয়ে মেইন রোডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। প্রচন্ড বৃষ্টিতে ছাতা নিয়ে কোনো কাজ হচ্ছিল না। খানিকটা ভিজেই গিয়েছিলাম। তারপর কিছুক্ষণ পর বাস এলে বাসে উঠে পড়ি। সেদিন বাসেও প্রচন্ড ভিড় ছিল। বাসের মধ্যেই এক বান্ধবীকেও পেয়ে যায়। তারপর দুজন মিলে গল্প করতে করতে কলেজে পৌঁছায়। কলেজে গিয়ে সোজা দোতলায় চলে যাই। এবার বলি আমাদের কাজটা কি ছিল। আসলে আগামী ১২ ই আগস্ট থেকে আমাদের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। তাই পরীক্ষার আগে ফর্ম ফিলাপের জন্য টাকা জমা করতে হয় আর সেই সাথে কোর্স ফিজ টাও জমা করতে হয়। সেই বিশেষ কাজেই সেই দিন ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কলেজ যাওয়া।

1000281806.jpg
টাকা জমা করার জন্য সবার প্রথমে চলে যেতে হয় অ্যাকাউন্টের ঘরে। সেখান থেকে দুই টাকা দিয়ে একটা ফর্ম কিনতে হয়। ফর্ম কিনে আমরা লাইব্রেরি রুমে বসে ফিলাপ করে নিয়েছিলাম। তারপর আবার সেটা জমা করার জন্য লাইন দিতে হয়েছিল। বেশ লম্বা লাইন পড়েছিল। আমাদের অনেকটা সময় লেগেছিল কাজ শেষ করতে। কোর্স ফিজ বাবদ ১৫০০০ টাকা আমার বাকি ছিল মানে ১২৩৩ স্টিম মতো। একসাথে এতগুলো টাকা জমা করতে খুব কষ্ট হয়। কারণ সারা মাস স্টুডেন্টদের পড়িয়ে টাকাটা উপার্জন করতে হয়। তারপর অল্প অল্প করে জমিয়ে এত বড় একটা অ্যামাউন্ট কাউকে দিয়ে দেওয়া খুবই কষ্টের। তবে কলেজের কোর্স ফিজ তো জমা করতেই হবে। এই টাকা বাদেও ফর্ম ফিলাপের জন্য আরও ২০০০ টাকা মানে ১৬৪ স্টিম জমা করতে হয়েছিল। এছাড়াও পিকনিকের খরচ বাবদ ২০০ টাকা মানে ১৬ স্টিম মতো জমা দিতে হয়েছিল। যদিও আমি পিকনিকে যাইনি। সমস্ত টাকা ক্লিয়ার করার পর তবেই ওরা ক্লিয়ারেন্স দিয়েছিল। সেই ক্লিয়ারেন্স নিয়ে নিচের স্টাফ রুমে এসে সিগনেচার করতে হয়েছিল।

1000281786.jpg

1000281774.jpg

তারপর আমাদের কাজ শেষ করে আমরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেছিলাম। কারণ বাইরে তখনও প্রচন্ড বৃষ্টি পড়ছিল। সেই সময় আমরা সবাই গল্প করছিলাম। যেহেতু অনেকদিন পরে সকলের সাথে দেখা হয়েছিল, তাই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনেক কথা হচ্ছিল। তারপর যখন বৃষ্টি থামলো তখন আমরা সবাই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম।

1000281793.jpg
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

Sort:  
Loading...