দার্জিলিং এর Mall Road ঘুরে দেখা (শেষ পর্ব)
নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আমার দার্জিলিং এর Mall Road পরিভ্রমণের শেষ পর্ব নিয়ে। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
আগের পোস্টে আপনাদের বলেছিলাম যে আমরা বিকেলের দিকে Mall Road ঘুরতে গিয়েছিলাম। তারপর বিখ্যাত GLENARY'S এর সামনে রীতিমত লাইন দিয়ে ফটো তুলেছিলাম। তারপর আমরা পুরো মার্কেট টাকে ঘুরে দেখছিলাম। দুই পাশে অনেক বড় বড় শপ রয়েছে। সেই সাথে ফুটপাতেও অনেক দোকান রয়েছে। সমস্ত জিনিস গুলো দেখতে দেখতে যাচ্ছিলাম সেই সাথে জিনিসের দাম গুলো জিজ্ঞাসা করছিলাম। যেহেতু শীতের জায়গা তাই শীতবস্ত্রই বেশি বিক্রি হচ্ছিল। সোয়েটার, লাল, টুপি, হাত মোজা, পা মোজা ইত্যাদি। হোটেলে থাকাকালীন বাইরে কতটা শীত ছিল সেটা বুঝতে পারিনি। তাছাড়া সন্ধ্যে হতে হতে শীত তাও খানিকটা বেড়ে গিয়েছিল এবং তার সাথে হাওয়াও দিচ্ছিল। তবে বাড়ির থেকে দার্জিলিং আসার সময় কোন রকম হাত মোজা সঙ্গে করে আনিনি কারণ সকলে বলছিল হাত মোজা পরার মতো শীত সেখানে থাকবে না। তবে GLENARY'S পেরিয়ে সামনে এগিয়ে গিয়ে একটা ফাঁকা জায়গা রয়েছে সেইখানটায় প্রচন্ড ঠান্ডা লাগছিল। তাই শেষমেশ আর সম্ভব হচ্ছিল না ঐ শীতের মধ্যে থাকা। তাই বাধ্য হয়েই আমরা সবাই হাত মোজা আর কান ঢাকার জন্য একটা করে কানপট্টি কিনে নিয়েছিলাম। তারপর শীতের হাত থেকে একটু বেঁচে ছিলাম।
এরপর আমরা আরও সামনের দিকে এগিয়ে গেছিলাম যেখানে দুই ধারে অনেক শীতবস্ত্রের দোকান ছিল। সেখানে বিভিন্ন জিনিস দেখতে দেখতে হঠাৎ করেই আমার একটা সাদা রংয়ের ওভার সাইজ সোয়েটার পছন্দ হয়ে যায়। আমি অনেকদিন ধরেই এই ধরনের একটা সোয়েটার খুঁজছিলাম। তাই হঠাৎ সেটা আবিষ্কার করতে পেরে না কিনে আর থাকতে পারলাম না। খুব সম্ভবত ওই সোয়েটার দাম চেয়েছিল ৬০০ টাকা মানে ৫৩ স্টিম মতো। তবে একটু দরদাম করে আমি ওটা কিনেছিলাম ৪৫০ টাকা মানে ৩৯ স্টিম দিয়ে। যেহেতু ওইখানকার চাষবাস আমাদের এখানকার মতো এতটাও সহজ ব্যাপার নয়, তাই এই সকল শীতবস্ত্র তৈরীর মেটিরিয়াল সেখানে চাষ হয় না। যার ফলে এই সমস্ত শীতবস্ত্রই ওদেরকে কলকাতা কিংবা অন্যান্য জায়গা থেকে আমদানি করতে হয়। তাই এখানকার শীতের পোশাকের দাম কিন্তু কম নয়। আর ওরা খুব সহজে দামও কমাতে চায় না। তবে কোথাও ঘুরতে গিয়ে কিছু কেনাকাটা না করলে হয়! তাই ওই সোয়েটারটা আমি কিনে নিয়েছিলাম।
ইতিমধ্যে ঘুরতে ঘুরতে আমরা দেখলাম আমাদের যে বান্ধবীটি শরীর অসুস্থতার জন্য হোটেলেই থেকে গিয়েছিল, সেও তার ভাইয়ের সাথে চলে এসেছে। তারপর আমাদের সাথে মিট করে নিয়েছিল। তারপর আমরা একসাথে ঘুরছিলাম। সেখানে একটা শিব মন্দিরও ছিল। সেই দিন আবার শিবরাত্রি ছিল। তাই অনেকেই সেখানে পুজো দিতে গিয়েছিল। যদিও আমাদের টিমের কেউই পুজো দিতে যাইনি, তাই আমরা মন্দিরটা ঘুরতে গিয়েছিলাম। পাহাড়ের মন্দির মানেই সিঁড়ি ভেঙে উপরে ওঠা। এই পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে একটা জিনিস খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করেছি সেটা হল, সঙ্গে আর কিছু নাও বা না নাও ভালো গরমের শীতবস্ত্র ও একটা ভালো কম্ফোর্টেবল জুতো নিয়ে যাওয়া খুবই জরুরী। সেই দিন হোটেলে ফিরে আমার ভীষণ পায়ে ব্যথা হয়েছিল। কাছে ওষুধ ছিল তাই ব্যাথার হাত থেকে বেঁচে ছিলাম।
এরপর দেখলাম আমাদের স্যারেরাও সেখানে উপস্থিত হয়েছে। সেই সাথে চেনা পরিচিত সমস্ত ক্লাসমেটদেরই সেখানে দেখতে পেয়েছিলাম। সেখানে কয়েকজন আবার গান-বাজনা করছিল, তাদের গানে তাল মিলিয়ে আমাদের মধ্যে অনেকেই নাচছিল। বেশ মজা লাগছিল দেখতে। স্যারেরাও আমাদের সাথে যোগদান করেছিল। এই ভাবেই সেই দিনের সন্ধ্যে আমরা কাটিয়েছিলাম। সেদিন আমরা কেউই কোন স্ট্রিট ফুড খাইনি। যেহেতু তারপরে আরো চার দিন আমরা সেখানে স্টে করতাম তাই জানতাম যে আরো চার দিন আমরা Mall Road এ আসার সুযোগ পাবো। তাই বেশি কিছু কেনাকাটাও করিনি। সবশেষে স্যারদের সাথে একটা ফটো তুলে নিয়েছিলাম।
এই ভাবেই একটা সুন্দর সন্ধ্যে আমরা উপভোগ করেছিলাম। তারপর আবার আমরা হোটেলে ফিরে গিয়েছিলাম।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।