গ্রামবাংলার বর্ষাকালীন মনোরম দৃশ্য।

in Incredible India9 days ago
1000004746.jpg

Hello Steemians,
বর্ষাকালীন চিত্র যেন এবার তার প্রকৃত রূপ ধারণ করেছে। যদিও অনেক বেশি বৃষ্টি হচ্ছে কিন্তু শৈশবের বৃষ্টিভেজা পরিবেশ অনুভব করছি। তবে পার্থক্য এক জায়গায় যে শৈশবে এই রাস্তাটা ছিল মাটির , স্নানের আগেই রাস্তায় বেরোতে হতো বা এমন সময় যে কাঁদা মাখলে ও অসুবিধা নেই।

সকাল থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল, খানিক বাদে আসছিল আবার চলে যাচ্ছিল। তাছাড়া নেটওয়ার্কের ঝামেলা, তাই কোনো কাজই করতে পারছিলাম না। যাইহোক, ভাবলাম রাস্তায় গিয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করি। রাস্তায় বেরিয়ে হাঁটাহাঁটি করতে করতেই কিছু ছবি তুলেছিলাম আমার মুঠোফোনে।

1000004726.jpg

বাড়ি থেকে মেইন রাস্তায় যাওয়ার পথ যেখানে ইট দেওয়া। যদিও দেখতে রাস্তাটা এখন অনেক পরিষ্কার তবে বৃষ্টি থামার পরে এটা বিপজ্জনক রাস্তায় পরিনত হবে। কারণ ইটে পাশে পাশে এমনিতেই স্যাঁতস্যাঁতে আবার যদি জুতোর কাঁদা লাগে, কি একটা অবস্থা। যাইহোক, একটু সাবধানেই রাস্তায় যেতে হবে। না হলে যে কোনো মুহূর্তে পা পিছলে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

1000004714.jpg

রাস্তার দু'পাশে সবুজ বৃক্ষসারি যেন প্রকৃত রূপে ফিরে এসেছে। আমার তো দেখেই মনে হচ্ছিল এরা হয়তো ঈশ্বরের পাশাপাশি আমাদেরকেও ধন্যবাদ দিচ্ছে খুশিতে। বিগত কয়েকবছর ধরে এইরকম বর্ষাকাল দেখার সুযোগ মেলেনি। গ্রামবাংলা যেন সেই আগের প্রকৃত প্রাকৃতিক পরিবেশে ফিরে এসেছে।

1000004715.jpg

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামবাংলার এই আর একটা চমৎকার দৃশ্য। যদিও আমরা মাছে ভাতে বাঙালি তবে মাছ কোথা থেকে পাই এটাও দেখতে হবে। নদী ও সমুদ্রের থেকে আমাদের এলাকার জলকর গুলোতে কম মাছ পাওয়া যায় না। বরং নদী বা সমুদ্রের মাছ বছরের এক একটা নির্দিষ্ট সময়ে পাওয়া যায়। বাকি সময় আমাদের নির্ভর করতে হয় এই জলকরের মাছের ওপর।

যাইহোক, আপনারা একটু মনোযোগী হলেই দেখবেন চতুর্দিকে প্রশস্ত বাঁধ থাকা সত্ত্বেও কিন্তু নীল রংয়ের নেই নিয়ে মাছ রক্ষার প্রচেষ্টা। মাছ চাষী এখানে নিরুপায়, নচেৎ জলকরে একটাও মাছ রাখা সম্ভব না। জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে ইদানিং ৪/৫ বার প্রতিবছর বন্যার দেখা মিলছে।

1000004716.jpg

রৌদ্রজ্জ্বল দুপুরে আমরা প্রায়ই এই স্থানে এসেই বসি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এখন আর বসার কোনো উপায়ই নেই। তাছাড়া বৃষ্টির জলে তো রীতিমতো বন্যার উপক্রমই হয়েছে যেটা এই ছবিতে উপস্থিত একটা ঘর দেখা যাচ্ছে ঐটা দেখেই জলের উচ্চতা কিছুটা অনুমান করা যাচ্ছে। বর্ষা ঋতুর এই একটাই সমস্যা গ্রামাঞ্চলের দিকে, একটু বৃষ্টি হলেই গ্রামের লোকজন ঘরের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়ে।

1000004717.jpg

গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছিল তাই আমি ছাতা হাতেই রাস্তায় বেরিয়েছিলাম। মাঝেমধ্যেই দমকা হাওয়া যখন ছাতা মাথায় ধরেই রাখা যাচ্ছিল না। বাতাসের পরিমাণ যেন সর্বপ্রথম নারকেল গাছের ওপরের পাতার দিকে লক্ষ্য করলেই উপলব্ধি করা যায়।

1000004721.jpg

এই বৃষ্টির মধ্যে আমার এক কাকুর ছেলে ঘুড়ি হাতে চলে এসেছে মন্দিরের মাঠে। কিছুক্ষণের জন্য সোনালী সেই শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম। যখন বৃষ্টির মধ্যে দলবেঁধে পাড়ার সমবয়সী সকলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতাম এবং রাস্তা বা মাঠে কাঁদা মাখার প্রতিযোগিতা। প্রকৃতপক্ষে, খেলতে খেলতে কখন যেন কাঁদা মেখে অবস্থা বেহাল হয়ে যেতো নিজেরাই বুঝতে পারতাম না।

1000004723.jpg

এই গাছটা একটা আগাছা তবে বৃষ্টির জল পেয়ে অপূর্ব সৌন্দর্য্য ধারণ করেছে। যদিও কোনো ধারণা নেই এই গাছ সম্পর্কে তবে যে কোনো সবুজ পাতাওয়ালা বৃক্ষই আমাদের অক্সিজেন দেয়।

1000004724.jpg
1000004725.jpg

পাশেই কাঁটাযুক্ত একটা গাছ যেটা এখন আর বিশেষ দেখা যায় না। তবে এই গাছ কোনো জলকরে থাকা অর্থাৎ ঐ নির্দিষ্ট স্থানেই সবচাইতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে, এটা একদমই নিশ্চিত।

একটা জলকরে যদি বেশ কয়েকটি এই কাঁটাযুক্ত গাছের ঝাড় থাকে তাহলে ঐ জলকরের মাছ বন্যার পরেও অন্যান্য জলকরের তুলনায় বেশি প্রত্যাশা করা যায়। তবে হ্যাঁ, যাঁরা এই কাঁটা গাছ কোথাও দেখেবেন, সাবধান কারণ এই গাছের কাঁটা যেমন বিষাক্ত তেমনি কুমির ও এই গাছের ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে। এই বছরই কিন্তু আমাদের পশুর নদীতে হিংস্র কুমির দেখা গেছে যেখানে এই গাছের একটা ঘটনা ও শুনেছিলাম।

1000004728.jpg

আহ! আ রে, ব্যাচারা কি বিপদেই না পড়েছে? ইচ্ছে থাকলেও উঠোনে দৌড়াদৌড়ি করতে পারছে না। বাধ্য হয়েই চুপ করে বারান্দার সামনে বসে রয়েছে।

উপরোল্লেখিত ছবিগুলোর মাধ্যমে আমি গ্রাম বাংলার বর্ষাঋতুর কিছু দৃশ্য এবং এটার সাথে জড়িয়ে থাকা স্মৃতি ও বিভিন্ন দিক তুলে ধরার প্রয়াস করেছি।

আমার আজকের ফটোগ্রাফী সংক্রান্ত লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি।

Sort:  
Loading...

Thank you for sharing quality content on Steemit.
You have been supported by the Team 02:

Captura de pantalla 2025-06-30 202646.png

Curated by: @aviral123

 8 days ago 

@aviral123, ধন্যবাদ আপনার উপস্থিতি ও সমর্থনের জন্য।