Hello Steemians,
বাংলাদেশ সময় এখন রাত দশটা, মনে হচ্ছে আজকের দিনটা যেন অনেক ছোটই ছিল। ঘরের বাইরেই থাকা হয়েছে আজকের দিনের বেশিরভাগ সময়। যে কাজই হোক না কেন সেইটাতে মনোযোগী হলে দ্রুতই সময় পার হয়ে যায়।
সকালে সাড়ে নয়টার দিকে ঘুম ভেঙ্গেছিল কিন্তু সকালের কাজ শেষে আবারো ঘুম ঘুম লাগছিল। এরই মধ্যে মা-বাবার সাথে বসে সকালের খাবার খেয়েই রাস্তায় বেরিয়েছিলাম। তবে রাস্তায় পৌঁছেই দেখলাম আমাদের পাড়ার মন্দিরের দিকে পাড়ার সকলে একটু তাড়াহুড়ো করেই যাচ্ছিল।
আমিও অন্যান্যদের মতো একটু দ্রুত মন্দিরের মাঠের পশ্চিম পাশে গিয়েছিলাম। যেখানে মনসা পূজোর আয়োজন চলছিল। লোকজনের অনুপস্থিতি দেখে পুরোহিত দাদু আমাদের বাড়িতে গিয়েছিল যেটা আমি বাড়ি থেকেই দেখে গিয়েছিলাম। তবে মনে মনে আমি বড় মা'কে খুঁজতেছিলাম। কোথাও না দেখে রাস্তার দিকে গিয়েছিলাম।
ওহ! আবারো বড়মা আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন। এ বাবা, বড়মা তো ভীষণ খুশি, কারণ আমি বড়মাকে সাথে করে মন্দিরের দিকে এসেছিলাম। আমার ও খুব ভালোই লাগছিল, তবে খুব গরম লাগছিল।
আমি সুযোগে একটা বিড়ালকে দেখতে গিয়েছিলাম। কারণ গতকাল দুপুরে আমি এই বিড়ালটাকে স্নান করিয়ে দিয়েছিলাম। যখন ধরি তখন দেখলাম দুর্গন্ধ,তাই পুকুরে নিয়ে গিয়ে বাম হাতে ধরে রেখে এটাকে স্নান করিয়ে দিয়েছিলাম। তবে আজ দেখে মনে হচ্ছিল বেশ নিশ্চিত মনে ঘুমাচ্ছে। অন্যদিকে সেই দুর্গন্ধটা ও আর মনে হচ্ছিল না।
তারপর রাস্তায় এসে বটতলায় বসেছিলাম। একমাত্র এই স্থানটা রয়েছে যেখানে প্রশান্তি পাওয়া সম্ভব। কিন্তু আশেপাশে এই ১৫/১৬ বছরের ছেলেরা থাকলে তো বসাটাই মুশকিল, কারণ সম্পূর্ণ শব্দ বাড়ি গেইম খেলা যে আওয়াজ শূনতেই আমার মাথা ব্যাথা শুরু হয়।
পূজো শেষ এবং পুরোহিত দাদুর ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার জন্য পাড়ার দুই ভাইকে পাঠানোর জন্য ডাকতে পাঠিয়েছিলাম। ঐ দাদুর ব্যাগে অনেক ফলমূল ছিল, আমরা দাদুর ব্যাগ থেকে একটা লেবু চুরি করে রেখে দিয়েছিলাম। গতরাতে ছিল অষ্টচরণের উত্তম সময় তবে সেইরকম কিছু করার সুযোগ হয়নি। তাই সেই কাজটা আজকেই করে নিলাম।
রাস্তার পাশেই একটা মরিচ ক্ষেত থেকে আমরা ৮/১০ টা কাঁচামরিচ তুলে নিয়েছিলাম। ওহ! সেই স্বাদ, অনেক দিন বাদে লেবু খেলাম। দীর্ঘ কয়েকবছরের মধ্যে কবে/কখন আমি এভাবে মজা করে লেবু খেয়েছি সঠিক মনেই নেই। যাইহোক, সকলে মিলে মজা করে লেবু মাখা খেলাম।
এরপর দলবেঁধে আমরা সকলে প্রসাদ নেওয়ার জন্য দক্ষিণ পাড়ার দিকে যাচ্ছিলাম। পথেই বাকি ও আমাদের এলাকার পরিচিত ফেরিওয়ালা কাকুর সাথছ দেখা হয়েছিল। এই লোকটা আমাদের এলাকায় খুব জনপ্রিয়, বিশেষ করে পাড়ায় লোকজনকে বাকিতে ও জিনিসপত্র দেয়। যে কারণে এই মুখটা এলাকায় খুবই পরিচিত।
বড়মার বাড়িতে পৌঁছেই দেখলাম সেখানে ইতিমধ্যে অনেক লোকজন উপস্থিত, সবাই প্রসাদের জন্য অপেক্ষা করছিল।
বিশেষ করে খিচুড়ি আর গরম গরম ফুলকো লুচি দেখে যেন লোভ সামলাতেই পারছিলাম না। কি আর করা; অপেক্ষা করছিলাম প্রসাদের জন্য। কিন্তু এতো বিলম্ব সম্ভব না, তাই আমি একটা প্লেট নিয়ে হাঁড়ি থেকে ৫/৬ পিচ লুচি এবং এক চামচ খিচুড়ি নিয়ে নিলাম। এতোটা সময় অপেক্ষা করা একদমই সম্ভব ছিল না।
এরপর বাড়িতে ফিরে স্নান সেরে দুপুরের খাবার খেয়ে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। এরই মধ্যে বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছিল, তাই আমি বিছানা ছেড়ে আমি প্রস্তুত হয়ে বাজারে গিয়েছিলাম। আমার অ্যালার্জির সমস্যা হচ্ছে বিগত কয়েক মাস ধরে ঐটার জন্যই ওষুধ নিতে গিয়েছিলাম।
আমার বাড়িতে ফিরতে ফিরতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসছিল। বাড়ির সামনে রাস্তায় আসতেই দেখলাম ২/৩ টা ছাগলের বাচ্চা তবে এগুলো ছোট না বড় বাচ্চা। ঐ দিনের মতো দৌড়ে ধরতে সক্ষম হলাম।এ বাবা! ব্যাচার নিরূপায় হয়ে চুপ করে বসে পড়লো। কারণ পালিয়ে যাওয়ার কোনো দ্বিতীয় পথই ছিল না। কিছুক্ষণ ছাগল ছানাকে বিরক্ত করে ছেড়ে দিলাম।
এভাবেই আজকের দিনটা অতিবাহিত করেছি। আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।