ঢাকার জ্যাম। (Dhaka traffic jam)...
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারোকাতুহ।
দিন যত যাচ্ছে তত যেন আমরা প্রযুক্তি আর আধুনিকতার মধ্যে ঢুকে যাচ্ছি। যত বেশি প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে করে তুলেছে আরাম আর ক্লান্তি মুক্ত, ঠিক তার বিপরীতে তত বেশি সমস্যাও ফেলে দিয়েছে। বর্তমান সময়ে শহরের জীবন যেন খাঁচায় থাকা পাখির মতো। ইচ্ছা থাকলেও কোথাও একটু যাওয়া যায় না। চার দেওয়ালের মাঝে নিজেকে বন্দি করে রাখতে হয়।
সারা দিন গাড়ীর হর্ণ আর কোলাহলে দিন কাটে, রাতে প্রচন্ড গরমে কাতরাতে থাকে। হ্যাঁ এটাই শহর জীবনের বাস্তব চিত্র। এখানে নেই গ্রামের মতো প্রকৃতির বাতাস, আছে শুধু কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের গরম। কিন্তু কি করার জীবন তো আর থেমে থাকে না, জীবিকার তাগিদে মানুষকে বাইরে বের হতেই হয়।
এমন হলেও তো জীবনকে মানিয়ে নিয়ে চলা যেত, কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। যারা ঢাকাতে থাকেন বা চাকরি করেন, তারা যানেন অফিসে যাওয়া ও আসা কতটা কষ্টের। যদি আবার কারুর অফিস একটু দূরে হয় তাহলে তার অবস্থা আরও খারাপ। বলতে পারেন সমস্যাটা কোথায়, সমস্যা হলো ঢাকার রাস্তার জ্যাম। যে সম্পর্কে ঢাকার চলাচলকারী ব্যাক্তি বাদে কেউ অনুমান করতে পারে না।
৫ মিনিটের রাস্তা আপনে কয়েক ঘন্টাও অপেক্ষায় থাকতে হতে পারে। যানবাহন আর মানুষের চাপে যেন এই জ্যাম কমতে চায় না। তারপর যদি বৃষ্টি হয় বা আবহাওয়া খারাপ হয়, তাহলে তো আরও অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। আপনে বাসা থেকে নিদিষ্ট সময় হাতে নিয়ে বের হয়ে আসার পরও দেখবেন অফিসে পৌছাতে আপনার দেরি হয়ে যাচ্ছে, কারণ আপনে তো জ্যামের কথা চিন্তা করলেও হিসাব করতে পারবেন না কোথায় কত সময় জ্যামে আটকে থাকতে হবে।
আমার বাসা থেকে অফিসের পথ ১৫ কিলোমিটারের মতো পথ। আমি প্রতিদিন এক ঘন্টা আগে বাসা থেকে বের হই, মানে আমার অফিস টাইম ৯ টায় আমি বাসা থেকে বের হই সকাল ৮ টায়৷ তবুও দুই একদিন আসতে দেরি হয়ে যায়। বাস একবার জ্যামে আটকালে আর নড়ার নাম নাই। তারপর লোকাল বাসের ড্রাইভার ও হেল্পারগুলো সবচেয়ে বেশি খারাপ। জায়গা না থাকলেও বাসে লোক উঠাতে থাকে। আবার কোথাও দাড়িয়ে যাত্রী তুলতে থাকলে দাড়িয়েই থাকে। যা সবচেয়ে বিরক্তিকর আমার কাছে।
আজকের ঘটনায় বলি, অফিসে আসার পর আমার ব্যাংক এ একটু কাজ ছিল। ডিপার্টমেন্ট প্রধানের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে নিলাম ব্যাংকে যাওয়ার জন্য। অফিস থেকে ব্যাংকটা অনেক দূর। অফিসের বাসে উঠে পরলাম ১১:১৫ মিনিটে। বাস ছেড়ে কিছু দূর যেতেই জ্যামে পরে গেল। একই স্থানে প্রায় ৩০ মিনিট দাড়িয়ে থাকল। তারপর সারা দিন বৃষ্টি হচ্ছে।
একটু গাড়ী চলেই আবার থেমে পরতেছে। যেই পথ যেতে ১০ / ১২ মিনিট সময় লাগে সেখানে জ্যামের কারণে আমাদের যেতে সময় লাগল ৫০ মিনিট মতো। অফিসের বাসে গিয়েছিলাম যাতে তারাতারি যেতে পারি, কিন্তু সেই আরও দেরি হলো,। এদিকে বাস থেকে নামার পর থেকে শুরু হলো মুষল ধারে বৃষ্টি। কি আর করার ছাতা নিয়ে কিছু দূর হেটে চলে গেলাম ব্যাংকে।
ব্যাংকের কাজ শেষ করে দুপুর ১ টার সময় আবার অফিসে ফিরে আসতে হবে। তখনও বাইরে বৃষ্টি হচ্ছিল। ছাতা নিয়েই মেইন রাস্তায় চলে আসলাম বাসে উঠার জন্য একে তে বৃষ্টি তার উপর কোনো বাসই ফাকা না, যাত্রীতে ভরপুর। অনেক সময় দাড়িয়ে থাকার পর একটা বাসে উঠলাম, কোন সিট ছিল না, এজন্য দাড়িয়ে থাকলাম। হঠাৎ দেখি বাস থেমে গেল। সামনে তাকাতেই দেখি বিশাল বড় গাড়ীর লাইন, মানে আবারও সকালের মতো জ্যামে আটকা পরা।
অনেক সময় দাড়িয়ে থাকার পর গাড়ী আস্তে আস্তে যাওয়া শুরু করল। এদিকে ভিরে দাঁড়িয়ে থাকতে পারতেছিলাম না। কিছু দূর যাওয়ার পর একটা সিট পেলাম সেখানে বসলাম। অল্প দূর যাত্রা করতে গিয়েই জ্যামে আটকে এই অবস্থা। একটু কল্পনা করেন যারা বেশি দূর থেকে যাওয়া আসা করতেছে, তারা যদি জ্যামে আটকায় তাহলে কেমন লাগবে। আবার ২/১ মিনিটের জ্যাম হলে তো হয়, কোন কোন সময় তো এটা ঘন্টাতেও রূপ নেয়।
ঢাকাতে রাস্তা ঘাট আধুনিকর করেও যেন এই জ্যাম কমানো যাচ্ছে না। শত শত ফ্লাইওভার নির্মাণ করেও সেই জনজীবনে ভোগান্তি। মানুষ যেন একটু শান্তিতে চলতে পারে না। দিন যত যাচ্ছে জনসংখ্যা তত বাড়তেছে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়তেছে মানুষের ভোগান্তি।
ব্যাংকে আমার কাজ ছিল ৫ মিনিটের। সেই কাজ শেষ করে আমার অফিসে আসতে আসতে দুপুর ১:৩০ টা বেজে গেল। তারপর সারা দিন বাইরে বৃষ্টিতে পথ ঘাটের অবস্থাও করুন৷ সব মিলায়ে এক নাস্তানাবুদ অবস্থার মধ্যে দিয়ে ঢাকা বাসির জীবন চলতেছে।
আমার আজকের পোষ্টটা এখানেই শেষ। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবারও দেখা হবে আমার নতুন কোনো পোষ্ট নিয়ে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.